আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১২

'নিঃশব্দ ভালবাসা'

'নিঃশব্দ ভালবাসা' আকাশ কিছুটা মেঘলা হয়ে আছে । পার্কে তাই তেমন কোন মানুষ নেই এখন । নিঃশব্দা পার্কের একটি ব্যাঞ্চে চুপচাপ বসে আছে । কি যেন ভাবছে সে । আকাশের দিক থেকে চোখ সরিয়ে পাশের ব্যাঞ্চে বসে থাকে দুজন তরুণ তরুণীর দিকে তাকাল
সে । হঠাত্ করে কি যেন তার মনে পরে গেল । চোখের কোনে অশ্রুকণা জমতে শুরু করল তার । প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে তার । কিন্তু
বাইরে বলে কাঁদতে পারছে না । অস্তে করে চোখ বন্ধ করলো নিঃশব্দা । একটি অশ্রু কণা এসে তার হাতে পরলো । খুব নিঃশ্ব লাগছে নিজেকে তার । মনে হচ্ছে যেন সব কিছু হারিয়ে ফেলেছে সে । নিজের উপর প্রচন্ড রাগ উঠছে তার । নিজেকে বার বার
ধিক্কার দিচ্ছে সে । তিন বছর আগেও তার সুযোগ
ছিল । কিন্তু সে বুঝতে পারে নি । আজ বড় একা সে ।
চোখ দুটো খুললো নিঃশব্দা । চোখ
আবারো ঝাপসা হয়ে আসছে তার । কি ছিল আর সে আজ কি হয়েছে । তিন বছর আগে নিঃশব্দা প্রানবন্তর একটি মেয়ে ছিল
। পড়াশুনা আর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সময় কাটাতো । কিন্তু কি হতে যেন কি হয়ে গেল তার । সব
কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে তার জীবনে । এখন আর কিছুই ঠিক নেই ।
(তিন বছর আগে)
'প্রারম্ভিকা'
নিঃশব্দা চুপচাপ অনলাইনে বসে আছে । কেউ নেই ।
হঠাত্ মনে হল তার কেউ একজন অনলেইনে ঢুকেছে ।
তাকিয়ে দেখলো জিসাত ঢুকেছে ।
সাথে সাথে মুখে বিরক্তির ছাপ ভেসে উঠলো তার ।
জিসাত কয়েক মাস যাবত তার সাখে কেমন যেন
ব্যবহার করছে । নিঃশব্দার তা মোটেও ভাললাগে না ।
নিঃশব্দা বুঝতে পেরেছে যে জিসাত তার
প্রেমে পরেছে । কিন্তু নিঃশব্দা এটা মোটেও চায়না ।
জিসাত আর নিঃশব্দা খুবই ভাল বন্ধু । বন্ধুক্তের
মাঝখানে সে এই প্রেম ভালবাসা আনতে চায় না । আর
নিঃশব্দা অন্য এক জনকে ভালবাসে । অবশ্য সেই
ছেলে নিঃশব্দাকে ভালবাসে কিনা সেটা নিঃশব্দা জানে না ।
নিঃব্দার কাছে মনে হয় সেই
ছেলেটি তাকে হয়তো তাকে ভালবাসে না ।
নিঃশব্দা জানে ছেলেটি সেটা বুঝে যে নিঃশব্দা তাকে ভালবাসে ।
কিন্তু কেন যেন ছেলেটি তাকে দুরে সরিয়ে রাখে । আর
আরেক জন আছে যে কি না নিঃশব্দার জন্য পাগল
হয়ে আছে । এসব ভাবতে ভাবতে নিঃশব্দা খেয়াল
করলো জিসাত এতক্ষনে তাকে চ্যাট করার জন্য
আমন্ত্রন জানিয়েছে ।
-"কেমন আছিশ ?" জিসাত লিখে পাঠালো ।
নিঃশব্দা তার নিজের চোখ উল্টে লিখলো , "ভাল ।"
-"কি করছিশ ?"
কিছুটা বিরক্ত হয়েই নিঃশব্দা তাকে বললো ,
"নাচতেছি ।"
জিসাত হাসতে হাসতে বললো , "আর কি করছিশ ?"
-"আর গান গাইছি ।"
-"কি গান ?"
-"ঐ যে তপুর নতুন অ্যালবামের গান বের
হলো না আনিলা সহ গানটা গেয়ে ছিলো । সেই গানটা ।
'এক পায়ে নুপূর আমার অন্য পা খালি' গানটা ।"
একটু হেসে জিসাত লিখলো , "কিন্তু আমিতো তোর
পায়ে জুতা দেখছি ।"
নিঃশব্দা অবাক হয়ে গেল , ও
কি করে জানে যে সে পায়ে জুতা পড়ে আছে ! সে জিসাত
কে কৌতহলী হয়ে জিজ্ঞাস করেই ফেললো , "জিস্ , তুই
কি করে জানলৈ ?" জিসাত তখন হেসে বললো , "তোর
প্রো পিক এই দেওয়া আছে ।"
আরে তাই তো নিঃশব্দা এতোক্ষন খেয়ালই করে নি ।
তার প্রো পিক এ একটি মেয়ে বই এর দোকানের
সামনে দারিয়ে আছে । আর তার পায়ে এক
জোরা কফি রং এর জুতা ।
নিঃশব্দা মনে মনে নিজেকে কিছুক্ষন বকলো । প্রচন্ড
রাগ উঠছে তার । সে কেন এতক্ষন খেয়াল করেনি !
কিছুক্ষন চুপ থেকে নিঃশব্দা লিখলো , "ঠিক
আছে আমি এখন বিদায় নিচ্ছি । পড়তে বসতে হবে ।
আর তুইও পড়তে বস । পরে কথা হবে । বাই"
জিসাতের কোন উত্তরের আশা না করেই অফলাইন
হয়ে গেল নিঃশব্দা ।
জিসাত ড্রইংরুমে তার লেপটপ নিয়ে বসে আছে ।
তার মনের আকাশে এখন রোদ মেঘ দুটোই আছে ।
নিঃশব্দার সাথে কথা বললে তার মন এমনিতেই অনেক
ভাল হয়ে যায় । কিন্তু আজ সে চেয়েছিলো তার
অনুভুতিটা নিঃশব্দার কাছে তুলে ধরতে । কিন্তু
কিভাবে শুরু করবে সেটা সে বুঝে উঠতে পারছে না ।
আর এমনিতেই তারা দুজন খুব ঝগরা করে ।তাদের
বন্ধুক্তটাও ঝগড়ার মাধ্যমে হয় ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম যে দিন নিঃশব্দাকে দেখেছিল ,
জিসাত সে দিনই প্রেমে পড়ে গিয়েছিল তার । কিন্তু
তার পরেও তখন বুঝতে দেয় নি তাকে । আজ যখন
তার যাওয়ার সময় হয়েছে তখন বোঝানোর
চেষ্টা করেও পারছে না । আর বলতেও পারছে না কোন
কিছু তাকে । কি করে বলবে , জিসাত তো শুধু তার
সাথে ঝগড়া করে । সব সময় খেপায় নিঃশব্দাকে ।
নিঃশব্দা খুব মিষ্টি একটা মেয়ে । খুব সুন্দর
করে কথা বলে । তার কথার মধ্যে এক ধরনের
চঞ্চলতা আছে । আর এই চঞ্চলতাই
জিসাতকে নিঃশব্দার কাছে আরো টেনে এনেছে ।
নিঃশব্দার টানা টানা চোখ যেন তাকে আরো পাগল
করে ফেলে । আর
দুষ্টমি ভরা কথাতে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে থাকে সে ।
সব মিলিয়ে জিসাতের চোখে খুব সুন্দর
একটা মেয়ে নিঃশব্দা ।
এতো সুন্দর বলেই জিসাত ভয় পায় , এই
মেয়ে যদি অন্য কারো হয়ে যায় । সে যদি অন্য
কাউকে পছন্দ করে ফেলে । এ জন্য সে যত
তারাতারি সম্ভব তাকে তার মনের
কথাটি জানিয়ে দিতে চায় । আরতো কয়েক মাস ।
মার্স্টাস করার জন্য আবার বিদেশ চলে যেতে হবে ।
তখন তো আর সুযোগ পাবে না সে ।
কিন্তু দুর্ভাগ্য তার , আজও
পারলো না সে নিঃশব্দাকে মনের কথা জানাতে । একেক
সময একেকটা বাধা আসে । কি করে বলবে সে তার
মনের কথা নিঃশব্দাকে ! বুঝতে পারে না সে কিছুতেই ।
নিজের উপর রাগ উঠে তার । আবার পরক্ষনেই
নিঃব্দার কথা মনে করে রাগটা উবে যায় । তবে আর
যাই হোক , বলতেই হবে তাকে । জিসাত
ভাবে কি করে তার মনের কথা নিঃশব্দাকে বলবে । যত
তারাতারি সম্ভব তাকে বলতেই হবে । আরতো কয়েক
মাস পরেই সে USA চলে যাবে ।
জিসাত লেপটপটা বন্ধ করলো ।
আরমোরা দিয়ে উঠলো সোফা থেকে । ড্রইংরুম
থেকে বের হয়ে বারান্দায় চলে গেল জিসাত । বারান্দার
গ্রীল ধরে বাইরে তাকিয়ে আকাশ দেখতে লাগলো ।
আকাশে কিছু মেঘ জমেছে । মেঘ গুলোর
দিকে তাকিয়ে জিসাত যেন তার ছোটবেলার
স্মৃতিতে ডুবে গেল । মেঘগুলোতে যেন সে ছোটবেলার
সকল স্মৃতি খুজে পাচ্ছে।
খুব সকালে ঘুম ভাঙ্গলো নিঃশব্দার । আজ
এতো তারাতারি ঘুম ভাঙ্গাতে লেপটপ
নিয়ে বসলো সে । অনলাইন হতে না হতে আবার
জিসাতের আক্রমন । হ্যালো , হাই বলার পর জিসাত
হঠাত্ নিঃশব্দাকে বললে ,
- "আচ্ছা নিশ্ , তুই আমার সাথে USA যাবি ?"
নিঃশব্দা অবাক হয়ে বললো , "কেন ? আমি তোর
সাথে USA যাবো কেন ?"
- "না মানে , আমি যদি তোকে আমার
সাথে নিয়ে যাই !"
- "আশ্চর্য ! আমি তোর সাথে USA কেন যাব ?"
নিঃশব্দা খুব বিরক্ত হল । জিসাতের মতলব কি ?
মনে মনে ভাবল সে । তার পর আবার বললো , "আমার
বাংলাদেশ ভাললাগে , আমি আমার বাংলাদেশেই থাকব ।
আর যদি আমার USA তে যেতেই হয়
আমি নিজে আসতে পারব । তোর সাথে আমি কেন
যাব ?"
জিসাত অনেক্ষন চুপ করে থেকে শেষের দিকে বললো ,
"আমাকে এখান জরুরি একটা কাজে বাইরে যেতে হবে ।
তোর সাথে পরে কথা হবে । বাই"
এই বলে জিসাত অফলাইন হয়ে গেল ।
নিঃশব্দা কিছুই বুঝতে পারলো না । আর বুঝতেও চায়
না সে । কেন বুঝবে সে ? বুঝে লাভ কি ? সে এখন
কিছুই বুঝতে চায় না । সব কিছু ভুলে গুণ্ গুণ্ করে গান
গাইতে লাগলো নিঃশব্দা -
-"যদি অজানা মনে খোজ আমায়
তাকাবেনা তবু চোখ চলে যায় আমার পানে -- ।"
'অদ্ভুত মেয়ে তো । এতো ইঙ্গিত দেই তার পরও
বোঝে না ।' জিসাত মনে মনে বির বির করছে । তার
পর আবার ভাবলো , 'নাহ্ থাক , মেয়েরাতো এমনই ।
কখনই তারা তাদের মনের কথা মুখ ফুটে বলে না ।
যা বলার ছেলেদেরই বলতে হয় । কিন্তু কি করা যায়
এখন ?
কিভাবে বলবো কথাটি যে আমি তোকে ভালবেসে ফেলেছি ।
নাহ্ , তুই করে বলবো না । তুমি করে বলবো । যাহ্ ,
সে যদি কিছু মনে করে ! পরে যদি আমার সাথে আর
কথাই না বলে !' জিসাত
ভাবতে ভাবতে মাথা চুলকাচ্ছিল ।
এমন সময় জিসাতের মা তার ঘরে ঢুকলো ।
- "কিরে ! কি নিয়ে চিন্তা করছিশ এতো ? এমন
করে মাথা চুলকাচ্ছাশ কেন ?"
- "মা , খুব জটিল একটা পরীক্ষা দিতে হবে ।
কি ভাবে দিব সেটাই চিন্তা করছি ।"
- "কি এমন জটিল পরীক্ষা যে আমার সোনামানিক
কে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ? কি রকম পরীক্ষা ?
- "মা , ও তুমি বুঝবে না । অন্য এক বিষয় এর ।
এটা তোমার বোঝার বিষয় না ।"
- "হুম । বড় হয়েছিশতো , এখন আমাকে বলবিই
বা কেন । যাই হোক , এখন পর্যন্ত
প্রত্যেকটি পরীক্ষার ফল যেমন ভাল করেছিশ ,
দোয়া করি এবারেরটাও যেন সেই রকমই ভাল হয় ।"
জিসাত তার মাকে জরিয়ে ধরে বললো , "দোয়া কর
মা , তোমার ছেলে যেন সকল কিছুতেই জয়ি হয় ।"
- "অবশ্যই , মা বাবারা তো সব সময় সন্তানদের
জন্যই দেওয়া করে ।"
এর পর জিসাত বলল , "ঠিক আছে মা , এখন তুমি যাও
। আমি আরেকটু চিন্তা করি পরীক্ষা নিয়ে ।
- "আরে তোকে তো আসল কথাটাই বলে হয় নি ।
যে কারনে এসেছিলাম । তোর জন্য একটা ভাল
পাত্রী দেখেছি ।খুব সুন্দরী মেয়েটি । নম্র , ভদ্র ,
লেখাপড়ায় ভাল । তোর সাথে ভালই....." মাঝ খান
দিয়ে কথা আটকিয়ে জিসাত তার মা কে বললো , "মা ,
তোমাকে না কতবার বলেছি , এখন আমি বিয়ে করব
না । আগে পড়ালেখা শেষ করি তার পর নিজের
ক্যারিয়ার গঢ়ে তুলি । তার পর দেখা যাবে ।"
- "দেখা যাবে মানে ? আমি কি আর তত দিন বাচঁবো ?
যদি মরে যাই !"
- "মা , তুমি মরবে না । তোমার জন্য আমি তখন
একটা হুলপরী এনে দেব ।"
- "আচ্ছা ঠিক আছে , ঠিক আছে । তাহলে আমি আর
এই প্রস্তাবে এগুই না । তুই যা ভাল মনে করিশ তাই
হবে ।"
- "আচ্ছা ঠিক আছে । এখন আমাকে একটু ভাবতে দাও
কিভাবে পরীক্ষাটা দিব ।"
- "হেরে , প্রশ্ন কি খুব কঠিন হবে ?
পরীক্ষা দেওয়ার পর আমাকে বলিশ ।"
- "আচ্ছা ঠিক আছে মা । এখন যাও তো ।"
জিসাতের মা রুম থেকে বের হয়ে গেল । জিসাত আবারও
নিঃশব্দার কথা চিন্তা করতে লাগলো ।
বিকেলের আবহাওয়া আজ খুব সুন্দর ।

''জোনাকিরা কথা বলে''

''জোনাকিরা কথা বলে''
By - শুভ্র


মোবাইলটা একটানা ভাইব্রেট করেই চলেছে।
এত ভোরে তাকে কেউ কল দেয়ার কথা না। ভাইব্রেশানের শব্দ মাথা ব্যাথা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে হাসানের। কয়েকদিন ধরেই ভোতা এক ধরনের ব্যাথা ভারী করে রাখছে মাথার পেছনটা। মনে হয় না আর ঘুম আসবে। ভোর ছটার আগে কোনো দিনই বিছানায় যেতে পারেনা সে,ইনসমনিয়া আছে তার। সারা রাত ছাদেই হাঁটাহাঁটি করে সময় পার করে।
দোতলা বাড়ির ছাদের ছোট্ট এই ঘরটাতে সে গত দুই বছর ধরে আছে, দরজা খুললেই খোলা ছাদ। তার লেখালেখির জন্য আদর্শ জায়গা।বিরক্ত করার কেউ নেই, শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে দূরে। যখন সন্ধ্যা নামে, আরও নিস্তব্ধ হয়ে যায় জায়গাটা যেন। বাড়ির দক্ষিন দিকের পুরোটা ছোট জঙ্গলের মত, ছাদের এক পাশ ঘেঁষে আরেক পাশে চলে গিয়েছে ঝোপের মত গাছগুলো। রাত বাড়ার সাথে সাথে সেখানে জোনাকির আলো দেখতে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে হাসানের মনে হয় জোনাকিগুলো তার কথা বুঝতে পারে, যখনি সে বের হয়, আলোগুলো কেমন যেন একটা ছন্দে চলে আসে, যেন তারা কথা বলছে।
ঘুমটা এখন খুব বেশী দরকার ছিল। কাল সারা রাতেও সে লেখাটা শুরু করতে পারেনি। অথচ গত সপ্তাহে লেখা জমার শেষ তারিখ ছিল।প্রভাত আলোর মাহমুদ ভাই নিতান্ত তাকে পছন্দ করেন বলে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, যেখানে ছাপাই হবে শুক্রবারে। সে যে লিখতে পারছে না শুধু তাই না, তার চিন্তাশক্তির ক্ষমতা কমে গিয়েছে বলে তার ধারণা ।শেষ দশ দিন ধরে কাগজ কলম নিয়ে শুধু বসে থাকে, চোখে শূন্য দৃষ্টি, তাকিয়ে থাকে সাদা কাগজ গুলোর দিকে। মাথা কাজ করে না তার।
৩২ টা এসএমএস।
একটানা ভাইব্রেশান এর কারনটা বোঝা গেল। না দেখেই বুঝতে পারছে কে করেছে, এধরনের কাজ একজনই করতে পারে। লীনা জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে শেষ বর্ষে পড়ছে। অনর্গল কথা বলতে পারে যে একটা মানুষ, এটা তাকে দেখলে বোঝা যায়। হাসান আজ পর্যন্ত তাকে কোনো বিষয়ে সিরিয়াস হতে দেখেনি। দেখা যাবে সে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে, কিংবা সবার সামনে হঠাৎ করেই এমন কিছু বলবে যেটা কেউ বলার কথা ভাবতেও পারেনা। মানুষকে বিব্রত করাই তার প্রথম লক্ষ্য। হাসানের মনে আছে একবার শুধু তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আচ্ছা, তুমি পড়ো কখন? যখনই তোমাদের বাসায় আসি, দেখি তুমি হয় থাকো মোবাইলে নয়তো গল্পের বই হাতে।
আপনার কি ধারণা মোবাইলে আমি কারো সাথে প্রেম করি হাসান ভাই? আচমকা লীনার পাল্টা প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় হাসান আর বুঝতে পারে প্রশ্নটা করা কত বড় বোকামি হয়েছে।
আপনি যদি ভাবেন আমি প্রেম করছি, একদম ঠিক ভাবছেন। যে কোনো সময়, কাজী অফিস থেকে আপনাকে কল দেব, আমার একজন সাক্ষী শর্ট আছে। লীনার চোখে চাপা কৌতুক।
হাসান চুপ করে থাকে, কিছু বলার পায়না। লীনার সাথে কথাতে না জড়ানোই ভাল, অযথা কে হেনস্থা হতে চায়।
ঘুমাতে চেষ্টা করে হাসান, লীনার এসএমএস নিয়ে তাকে বিচলিত মনে হয়না। তার মেসেজের কোনো অর্থ থাকে না কখনই,একই মেসেজ বার বার দিয়ে যায় সে। “আপনার জোনাকিরা আজ কথা বলেছে?”, “আজকে কোথায় ছিলেন সারাদিন?” সে কোথায় ছিল সারাদিন এটা জানার জন্য পঞ্চাশ বার মেসেজ দেয়ার কি আছে এটা তার মাথায় আসেনা।
হাসান উঠতে চেষ্টা করলো। মাথাটা যেন বিছানায় আটকে আছে, এত ভারী। মোবাইল হাতে নিল সে। তার ধারণাই ঠিক। লীনা লিখেছে “আজকে বাসায় আছেন?” এটা বত্রিশবার পাঠানোর মানে কি? লেখাগুলো হঠাৎ করে মনে হল বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। মনের ভুল নাতো, ঘুম না হওয়াতে সবকিছু মনে হয় এলোমেলো দেখছে।
দরজায় কি টোকা পড়ছে ? নাকি এটাও বিভ্রান্তি?
এত সকালে কেউ আসার কথা না।


লীনা আজ ক্লাস ফাঁকি দিয়েছে।
সে এখন দাঁড়িয়ে আছে হাসানের ঘরের সামনে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে ,তার কিছু কথা বলা দরকার হাসানকে। আজকে যে করেই হোক সেটা বলে যাবে। প্রথমবার টোকা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল, তেমন সকাল হয়নি। তার ওপর আজকে কুয়াশা একটু বেশী, দুহাত দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। এমন সময় কারও জেগে থাকার কথা না , সে জানে হাসানের রাত জাগা অভ্যাস আছে।
আবার টোকা দিতেই খুলে গেল দরজা, খোলা ছিল কিন্তু সে খেয়াল করেনি।
বাইরে থেকেই লীনা দেখতে পেল হাসানকে, বিছানায় কেমন অদ্ভুতভাবে যেন শুয়ে আছে।
আপনি যে আমার একটা মেসেজেরও উত্তর দিলেন না? ঘরে ঢুকেই খুব স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করে লীনা।
হাসান চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থাকে। সে এখনও বাঁকা দেখছে। লীনার মাথা যে শরীর থেকে বেঁকে যেন পাশে সরে গিয়েছে। এটা ভুল না, সত্যি সত্যি সে সব কিছু বাঁকা দেখছে।
আপনার কি শরীর খারাপ নাকি? চেহারা এমন দেখাচ্ছে কেন? লীনার মেজাজ আস্তে আস্তে খারাপ হচ্ছে, সে বুঝতে পারছে ইচ্ছা করেই হাসান তার মেসেজের উত্তর দেয়নি, সে জেগেই ছিল।
এবারও জবাব দিলনা হাসান, নিশ্চিত হল আসলেও সে বাঁকা দেখছে সব কিছু।হঠাৎ করেই মাথাটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে,মনে হচ্ছে লীনা কিছু বলছে, সে শুনতেও পাচ্ছে, কিন্তু বুঝতে পারছে না কথাগুলো।
আপনি আমার কথার উত্তর দিচ্ছেন না কেন? শীতল কণ্ঠে বলে লীনা।
আমি বুঝতে পারছি না, কি জানতে চাও তুমি?
আপনার কি শরীর খারাপ?
না, ঘুম হচ্ছেনা ঠিক মত, ঠিক আছি আমি।
মেসেজের উত্তর দেননি কেন আমার? দয়া করে কোনো সস্তা অজুহাত দেবেন না। হঠাৎ করেই লীনার প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে।
টাকা ছিল না মোবাইলে, একটু আগেই দেখলাম।
জানতাম এর থেকে ভাল অজুহাত আপনার কাছে নেই। চোখ এমন লাল কেন আপনার? জ্বর নাকি?
কিছু হয়নি লীনা। তুমি বলো কি জন্যে এসেছ? উঠে বসার চেষ্টা করে হাসান।
আজকে ক্লাস হবে না, বাসা থেকে বের হয়ে পড়েছিলাম। ভাবলাম আপনার এখানে আসা যায়। নির্বিকারে মিথ্যা বলে লীনা।
কি বলবে বুঝে পায়না হাসান।
আপনি কি আমার একটা কথা শুনবেন?
তাকিয়ে থাকে হাসান। তার চোখ ঘোলা।
আজকেই ডাক্তারের কাছে যাবেন আপনি, আজকেই। আমি কিছু জানিনা আপনাকে আজকেই যেতে হবে।
তুমি অযথাই চিন্তা করছো। ঘুম হলে ঠিক হয়ে যাবে।
না, আজকেই যেতে হবে, এখনই। আমি আপনাকে নিয়ে যাব। বলেই হাসানের হাত ধরে লীনা, তার কি হয়েছে সে বুঝতে পারছেনা, এত ছেলেমানুষি করছে কেন সে?
হাসানের মাথা ব্যাথা তীব্র হচ্ছে। হাত সরিয়ে নিল সে।
থমকে গেল লীনা।
শুয়ে পড়লো হাসান। সব কিছু আঁকাবাঁকা দেখছে সে । একবার মনে হলো যেন দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল লীনা। বিছানা দুলছে,দরজাটা যেন ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। সেদেখলোনা যাওয়ার সময় লীনার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।


দৈনিক প্রভাত আলোর অফিসে বসে আছে হাসান ।
মাহমুদ সাহেব একগাদা ফাইলের স্তুপের মধ্যে এলোমেলো ভাবে বসে আছেন, দুটো ফাইল হাতে, সামনে আরও ৩ টা। ফাইল থেকে চোখ না সরিয়েই তিনি বললেন, পারলে তাহলে শেষ করতে?
দেরীই করে ফেললাম মাহমুদ ভাই এবার, শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। হাসান চায়ের কাপ হাতে নিল।
ফাইনাল চেক করেছ? নাকি আবার করতে হবে?
নাহ, সব ঠিক আছে।
লিখেছ কিসের ওপরে ?
আত্মজিবনী ধরনের।
ফাইল থেকে মুখ তুলে চশমার ওপরে দিয়ে তাকালেন মাহমুদ, এগুলো এখন আর কেউ পড়তে চায়না হাসান, পাঠক চায় প্রেমের গল্প। যে সময়ের যে চাহিদা।
পারলাম না এবার, মাথা একদম শূন্য, পারলামই না। হাসানের মাথার পেছনের ব্যাথাটা আবার শুরু হয়েছে। আশে পাশের সব কিছু আঁকা বাঁকা হতে শুরু করেছে।
কালকের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। কালকে সন্ধ্যায় একটা কল দিও আমাকে।
মাথা নাড়ে হাসান, তার ব্যাথা বেড়েই চলেছে।
তোমার শরীরর কি খারাপ ? চোখ মুখ এমন শুকনো কেন?
হাসান উঠে দাঁড়ালো,তেমন কিছু না। শুধু মাথা ব্যাথা, ঘুম হলেই ঠিক হয়ে যাবে।
ভালো একটা ডাক্তার দেখাও, আমার পরিচিতি একজন আছে, তুমি আজকেই পারলে যাও, আমি বলে দেব।
আচ্ছা যাব, আজকে যাই মাহমুদ ভাই।কালকে কল দেব আপনাকে।

পৌষের ক্লান্ত বিকেল।
হাসান এলোমেলো ভাবে পা ফেলছে। তার মনে হচ্ছে সে বাসা পর্যন্ত যেতে পারবে না,রাস্তা বেঁকে যাচ্ছে পায়ের নিচে। শুকনো পাতা পায়ের নিচে পড়তেই অদ্ভুত একধরনের শব্দ হচ্ছে। ঝরা পাতার দিনগুলো এমনই হয়, বছরের অন্য সব সময় থেকে আলাদা। প্রকৃতি এসময় নিজেকে রহস্যের চাদরে ঘিরে ফেলে, বৃত্তবন্দী হয়ে যায় সে।

লীনার বাসায় যাওয়া দরকার। হাসান জানে তার কোনো ব্যবহারে মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে, কিন্তু কি সেটা বুঝতে পারছে না সে। ডাক্তারের কাছেও যাওয়া দরকার। চোখের অবস্থা খারাপ তার, দেরী করে হলেও বুঝতে পেরেছে সে। আশেপাশের মানুষগুলো কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকাচ্ছে তার দিকে, ভাবছে এত শীতে পাতলা একটা শার্ট গায়ে কিভাবে। তার ঠাণ্ডা লাগছে না, সে শুধু ক্লান্ত। প্রচণ্ড ক্লান্তি

তার শরীরকে অবশ করে দিচ্ছে। সে একটু ঘুমোতে চায়, প্রশান্তির একটা ঘুম।


পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত কিছু ঘটনা ঘটলো।
লীনার বিয়ে আচমকাই ঠিক হয়ে গেল। পাত্রপক্ষ এসেছিল দেখতে, কিন্তু মেয়ে তাদের এতই পছন্দ হলো যে আংটি পরিয়ে যাবে না, পরের শুক্রবার আকদ। লীনা পাগলের মত খুঁজছে হাসানকে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ। শেষ বারের মত কিছু বলবে সে হাসানকে। জানে এতে কাজ হবে না, কিন্তু নিজের কোনো ভুলের কারণে সে তার জীবনটা নষ্ট হতে দেবে না।
হাসান চোখের যে টেস্টগুলো করিয়েছিল,রিপোর্টে ২ দিনের মধ্যে অপারেশান করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।তার দুচোখেরই রেটিনা ৮০ ভাগ ছিঁড়ে গিয়েছে।এধরনের সার্জারিতে সাফল্যের ভাগ খুব কম, তাও তারা চেষ্টা করবে যাতে চোখের আলোটা ধরে রাখা যায়।
মাহমুদ সাহেব দুবার হাসানের খোঁজে বাসায় লোক পাঠিয়েছেন, তাকে পাওয়া যায়নি। কোথায় কেউ বলতে পারছে না। শেষে দরজার নিচে থেকে চিঠি রেখে রেখে এসেছেন।

ঘটনাক্রমে রিপোর্ট আর চিঠি দুটোই লীনার হাতে পড়লো।

আজ হাসানের অপারেশান ।

হাসপাতালের সাদা বিছানায় নিজেকে কেমন যেন বেমানান লাগছে ওর। কিছুক্ষন আগেই সুন্দর মত একজন ডাক্তার এসে তার চোখের প্রেসার মেপে গেলো। চোখে ড্রপ দিতে দিতে বলল, মাইনর সার্জারি, একদম চিন্তা করবেন না।

হাসানের চোখ বন্ধ, সে মৃদু হাসল।
আপনার সাথে কেউ নেই, কাউকে কি খবর দিতে হবে?
কেউ সাথে থাকা কি জরুরী? চোখের পাশ দিয়ে পড়তে থাকা পানি সে মুছতে মুছতে বলে হাসান।
না, আমাদের এখানে নার্সিং খুবই ভালো, তারপরেও আপন কেউ থাকাটা ভাল।
এমন কেউ নেই, স্বাভাবিক গলায় বলে হাসান।

সে জানলো না যেতে যেতে ডাক্তার কেমন অদ্ভুত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

হঠাৎ করেই খুব চোখ জ্বলছে, শুকিয়ে আসছে গলা। সিগারেট খেতে পারলে ভালো হত, সেটা কোনো ভাবেই সম্ভব না। এরা আর যাই দিক সিগারেট দেবেনা, তাও আবার সার্জারির ঠিক আগে। চিন্তাগুলোক মনে হচ্ছে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা লেখাটা কি শেষ পর্যন্ত ছাপা হবে? না হওয়ারই কথা, আসলেও আজকাল কেউ আর আত্মজীবনী পড়ে না। ছাপা হলে লীনা কি কিছু বুঝতে পারবে? পারবে বুঝতে যে হাসান চেয়েছিল সারা জীবন শুধু তার সাথেই জোছনা দেখতে? চেয়েছিল সেই মুখটি দেখতে জোনাকির আলোয়, তার প্রিয় মুখখানি।

চোখ বন্ধ করলো হাসান। ক্রমশ সব কিছু ঘোলাটে হয়ে আসছে।এমন একটা অন্ধকার জগতে সে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যেখানে দ্বিতীয় কারো অস্তিত্ব নেই।

লীনা হাসানের ঘরে বসে আছে।
আজকে তার বিয়ে, সে একেবারে চলে এসেছে। তার হাতে রিপোর্ট আর মাহমুদ সাহেবের চিঠি। সব শেষে সে চিঠিটা খুলল।

হাসান,
তোমার লেখা এবছর প্রথম হয়েছে, সামনের সংখ্যায় তোমার সাক্ষাৎকার যাচ্ছে। সাথে চলতি সংখ্যার একটা কপি দিয়ে দিলাম।
জানতাম তোমার পথ একদিন তুমি ঠিকই বের করে নেবে।

দোয়া রইলো।
মাহমুদ হাসান

পুনশ্চঃ একজন প্রকাশক যোগাযোগ করেছেন, ওনারা তোমার লেখা নিয়ে বই করতে চাচ্ছেন সামনের বই মেলায়। ঠিকানা দিলাম, যোগাযোগ করে নিও।

লীনা ছাদে বের হয়ে এল। তার শরীর থর থর করে কাঁপছে। সে নিজেকে সামলাতে পারছেনা। জোনাকির আলো তার চোখের পানিতে পড়ে চিক চিক করছে, সব জোনাকিরা আজ কথা বলছে যেন।
--------------------------------------------------------------------------------
*** হাসান আর কোনো দিন লিখতে পারেনি, অপারেশানের তিন মাস পর দুটো চোখই হারায় সে। জোনাকির আলোয় তার প্রিয় মুখটা তার আর দেখা হয়নি। লীনা হাসানকেই বিয়ে করে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর তারা জোনাকির সাথে কথা বলে, এসময় লীনা শক্ত করে হাসানের হাত ধরে থাকে।
---------------------------------------------------------------------------------------------

[ শুভ জন্মদিন লীনা, যে মায়া নিয়ে তুমি পৃথিবীতে এসেছ, তোমার প্রিয়জনদের তার দরকার আছে... ]

গল্প-৮

ঘটনা শুরু হয় ২০০৬ সালের পহেলা এপ্রিল। বয়স বেশি ছিল না। টিন এজ সময় চলছিল... সে সময়েই আমি মোবাইল ব্যবহার করতাম... পহেলা এপ্রিল এ একটা মেসেজ আসে। ওই রকম মেসেজ দেখে আমি অভ্যস্ত নই। মেসেজ শুধু লেখা ছিল i love you 4ever....আমি ভাবলাম কেও মনে হয় এপ্রিল ফুল করার জন্য পাঠিয়েছে। এরপর ১২ দিন ওই নাম্বার থেকে কোন মেসেজ/কল আসল না... আমি এটাকে তেমন পাত্তা দিলাম না।

এরপর ১৪ই এপ্রিল আমি আর আমার ফ্রেন্ড স্যার এর কাছে পড়তে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একটি ছেলে এসে বলল... তুমি কি কাওকে পছন্দ কর??...... আমি অবাক হলাম... আমি বললাম - আপনাকে বলব কেন... সে তখন বলল-- আমি একজন কে অনেক পছন্দক করি...আর সেইটা হল তুমি... একথা বলেই সে তার সাইকেল নিয়ে চলে গেল...

আমি অনেক অবাক হলাম... চিনিনা জানিনা...একজন এসে প্রপস করে দিল আর হল!! আসলে ওকে যে আমি একেবারে চিনতাম না তা না... চেহারায় চিনতাম। এমন কি ওকে নিয়ে আমরা আমাদের ফ্রেন্ডদের মাঝে আলাপ করেছিলাম। প্রথমবার দেখে বলেছিলাম ফ্রেন্ডদের... দেখ... কি সুন্দর...দেখলেই প্রেম করতে মন চায়...

কিন্তু যত যাই-ই হোক আমি এমন ভাবে কখনও প্রেম করতে চাইতাম না... এমন ভাবে মানে... আমাকে একজন প্রথমেই বলে দিল আর আমি সব শুরু করে ফেললাম! আমি কিছুটা সময় নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে ছাড়ল না। ওরা বলত প্রেমটা করেই ফেল। এরপরেও আমি একটু সময় নিতে চাইলাম।

এরপর থেকে আমাদের দেখা হলেই কথা হত... আস্তে আস্তে আমার ফ্রেন্ড সারকেল আর তার ফ্রেন্ড সারকেল এর মাঝে ভাল ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গেল...আমরা প্রায়ই একসাথে ঘুরতে যেতাম। শীতের দিন আমরা সব ফ্রেন্ডরা ব্যাড মিনটন খেলতাম... কত যে মজা করতাম...তা বলে শেষ করা যাবেনা... এভাবে ১ বছর কেটে গেল... ওর জন্য মনে অনেক ভালবাসা জন্ম নিতে থাকল। ও আমার অনেক কেয়ার করত... ভাবতাম ওর মত আর কেও হয়ত আমাকে এত ভালবাসবে না। উঠতে -বসতে -খেতে -ঘুমাতে এই ছেলেটা আমাকে সঙ্গ দিত...আমিও যে ওকে পছন্দ করতাম এইটা আমার আর ওর ফ্রেন্ডরা সবাই জানত। এমনকি ও নিজেও জানত। কিন্তু কখনও মুখ ফুটে বলে হয়নাই। আমি ঠিক করলাম এইবার বলেই দিব। সাম্নেই এইচ এস সি ছিল... তাই ভাবলাম আরেকটু দেরি করে পরীক্ষার পরেই বলি...

ও যে আমাকে কত প্রেম দেখাইসে এই দুই বছর... আমার জ্বর হলে ও প্রায় পাগলের মত হয়ে যেত...যদি দিন কথা/দেখা না হত তবে ৩য় দিন দেখতাম কলেজ যাওয়ার পথে দাঁড়ায়ে আছে... আমি একবার বলসিলাম... কিছু ভাল লাগতেসে না... মিষ্টি খাব... এমনিতেই বলসিলাম... ও কিভাবে জানি খবর পেয়ে ফ্রেন্ডকে দিয়ে মিষ্টি পাঠায়ে দিসে! ও আমাকে এত ভালবাসা দেখাইসে যে আমি বলে শেষ করতে পারবনা... এভাবে দুই বছর কেটে গেল...

অনেক ভেবে ডিসিশন নিলাম... আমি যে ওকে ভালবাসি সেইটা তো ও বুঝেই... তাই এবার বলেই দিব... এইচ এস সির জন্য আর অপেক্ষা করলাম না... ওকে একদিন বলেই দিলাম...কিন্তু আমি বলার সাথে সাথে ওর মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন চলে আসল... ও আমাকে Avoid করতে লাগল... আগের মত কথা বলা থামায়ে দিল... এখন আর আমাকে না দেখলে কষ্ট হয়না... আমার জ্বর হলেও ওর কিছু যায় আসে না। আমার তখন মরে যাওয়ার মত অবস্থা... সামনে পরীক্ষা... কি করব কিছুই বুঝতে পারতেসিলাম না... এই ডিপ্রেশন নিয়ে পরীক্ষা দেই...

ফ্রেন্ডরা বলল ওর সাথে ফেস টু ফেস কথা বলতে... কিন্তু ও আমার সাথে ফেস টু ফেস কথা বলতে চায় না... ও বলে ওর সাথে দেখা করতে হলে আরেকজন কে নিয়ে যেতে হবে... আমি তাতেও না করিনা... যখন দেখা করি তখন ও কিছু বলে না...শুধু বলে আমাকে ভুলে যাও...I dnt lv u.... তখন কি বলব বুঝতে পারতেসিলাম না...। শুধু বললাম আমি এতা পারব না...

এখন ওর নতুন গার্ল ফ্রেন্ড আছে... আমার কোন খোঁজই নেয়না... অনেক ফোন দিসি... অনেক কান্নাকাটি করসি... কি অপরাধ করেছিলাম যে আমার সাথে এমন করল... ওর ফ্রেন্ড আমার ফ্রেন্ড কে বলসে যে ও নাকি এক জনের সাথে বাজি ধরসিল আমাকে পটাবে এই বলে...কিন্তু আমার বিশ্বাস হয়না... কারন একটা মানুষ ২ বছর ধরে এমন অভিনয় করতে পারেনা। ওকে মেসেজ দিলে ও কোন উত্তর নেয়না... ফোন করলেও কথা বলতে চায় না... ওকে আর ফোনও দেই না... মাঝে মাঝে আমার স্বপ্নে ও আসে... কথা বলে... এরপর সারাদিন ওর কথা আমার কানে বাজতে থাকে... খুবই খারাপ লাগে...

২ বছর ধরে ওর উপর আমি অনেক নির্ভরশীল ছিলাম। এখন কলমের হেড খুজে না পেলেও ওর কথা মনে পরে... আমাকে অনেক অসহায় করে দিয়ে গেসে... যা ই করি... ওর কথাই ভাবি... প্রতিদিন রাতে ভাবি কাল হয়ত ও কল করবে...এভাবে রাত পার হয়... অন্য কোন নাম্বার থেকে ফোন আসলেই ভাবি এটাই বুঝি ওর ফোন... একদিন যেমন হঠাৎ করে ওর মেসেজ পেয়েছিলাম...সেই হঠাৎ এর অপেক্ষায় আমি দিন কাটাই... ওকে আর ফোন দেইনা... ভাল আছে ওর নতুন মানুষ নিয়ে... কে জানে এটা আরেকটা বাজি কিনা ?

।। কাছে আসার গল্প ।। (অসম্ভব সুন্দর একটি ভালোবাসার গল্প)

।। কাছে আসার গল্প ।। (অসম্ভব সুন্দর একটি ভালোবাসার গল্প)

২০০৯ এর জুন এর দিকে।বর্ষা আসবে আসবে ঠিক এমন একটা সময়।নতুন ক্যাম্পাসে নতুন সেমিষ্টার শুরু। সেমিষ্টার শুরু বলে পড়ার চাপ ও নেই বললেই চলে, তার উপর আবার নতুন ক্যাম্পাস। অদ্ভুত সুন্দর একটা ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসেই থাকতে ইচ্ছে করে সারাদিন। তো আমার মত ছেলে যে কিনা ক্লাস শেষ হলেই দৌড়, সেও এখন ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে অনেক আড্ডাবাজিতে মেতে থাকে। প্রিয় জায়গা সাউথ একাডেমিক ভবনের সপ্তম তলা। সত্যি বলছি, আমি ঢাকা শহরের আকাশ এর চেয়ে সুন্দর অন্য কোথাও থেকে দেখিনি। প্রবল রোদ কিংবা অঝড় বৃষ্টি, আলাদা করে শুধু সুন্দর আকাশটা দেখা- পার্থক্যটা শুধু ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্যে।

আমি তো ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র আর গল্পের নায়িকা ইংরেজী ডিপার্টমেন্টের।গল্পের শুরু ক্লাস রুম এ। ইউনিভার্সিটিতে এই ভিন্ন ডিসিপ্লিনের ছাত্রছাত্রীরা এক ই ক্লাস রুমে আসে শুধু জিসিই(জ়েনারেল এন্ড কন্টিনিউইং এডুকেশ্ন) বিভাগের ক্লাস করতে। সৌভাগ্যবশত, আমারা দুজনেই একই জিসিই সাবজ়েক্ট এ রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। সেই সাবজ়েক্ট এর আবার ২টা সেকশন ছিল। যেদিন আমার প্রথম ক্লাস ছিল সেদিন আমি ওকে ক্লাস এ দেখিনি। সে অন্য সেকশনে ছিল। ওই সেকশনে ওর কোন বন্ধু ছিলনা। তাই ও স্যার কে বলে আমাদের সেকশনে চলে এল এবং দ্বিতীয় দিন থেকে এখানেই ক্লাস করা শুরু করল। “Love at 1st sight” হয়ত একেই বলে, কখনো ধারনা ছিলনা। ক্লাসে ঢুকার সাথে সাথেই ওকে চোখে পড়ল এবং সারাটা পিরিয়ড বলতে গেলে ওর দিকেই তাকিয়ে কাটিয়েছিলাম।দু একবার চোখাচোখিও হল, ও চোখ সরিয়ে নিল। জীবনে অনেক কিছুই প্রথমবার হয়। বিশ্বাস করুন আর না ই করুন, এই জিনিস আমার সাথে যায়না। ভা্বলাম, ব্যাপারটা হয়ত কিছুই না; কেটে যাবে এই ভাললাগা। তারপরের দিন ও ক্লাস এ একি অবস্থা। হাস্যকর!নিজের উপর কোন কন্ট্রোল ই নাই আমার। আমার বন্ধু মারূফ ছিল আমার সাথে ওই ক্লাসে। সেদিন, ক্লাস শেষে ওকে বললাম সব।মারূফ তার চিরাচরিত হাসি হাসল আর বলল গিয়ে কথা বললেই পার। ইউনিভার্সিটিতে যার কখনও কোন মেয়ের সাথে হায়,হ্যলো ছাড়া একটা অতিরিক্ত কথা হয়নি সে গিয়ে বলবে তার ভাল লাগার কথা।

এও কি সম্ভব, তাও সম্পূর্ন একটা অপরিচিত মেয়েকে!!!

যে কোন কারনেই হোক,পরের ক্লাসটা আমার করা হয়নি। মারূফের ও ক্লাস করার কথা ছিল না সেদিন। সেদিন মারূফ ক্লাস না করলে হয়ত আজকে লিখতেও পারতাম না!! স্যার সেদিন ক্লাসের সবার সেলফোনের নম্বর আর ইমেইল আইডি নিয়েছিল। মারূফ নিজ থেকেই ওর নম্বর আর ইমেইল আইডি টুকে রেখেছিল। মজার বিষয় হচ্ছে, আমরা কেউই ওর নাম জানতাম না।ও আর ওর একটা ফ্রেন্ড এক সাথে বসত সবসময়। তো মারুফের কাছে যখন লিস্টটা আসল নিজেরটা লিখার জন্য, ও ওদের সিট এরেঞ্জমেন্ট দেখে গুনা শুরু করল ওদের নাম কোথায় লিখা। হাস্যকর!!আমি এখনও এর উত্তর খুজি, মারূফ এটা কেন করল!! খুবই অবাক হলাম, পরদিন যখন মারুফ এগুলো আমাকে দিল। অনুভূতিটা কেমন ছিল বলে বুঝান সম্ভব না!! কিন্তু, তখনো আমি গল্পের নায়িকার নাম জানিনা। এতদিন ব্যাপারটা ভাল লাগাতেই সীমাবদ্ধ ছিল,কিন্তু এখন তার চেয়েও বেশি কিছু!! সেই বেশি কিছু কি তার সংগা আমি দিতে পারব না।

২ ২টা সেল নম্বর আর ইমেইল আইডি এখন আমার কাছে। কিন্তু কিভাবে বুঝব কোনটা কার?? ফোনও তো করা সম্ভব না। কি বলব?? হয়ত রেস্পন্সও করবে না। ভাবলাম যে, ফেইসবুক এ ২ টা আইডি দিয়ে সার্চ দেই। ১মটা দিয়ে সার্চ দেয়াতে কোন রেসাল্টই পেলাম না। মনটা খারাপ হয়ে গেল।ভাবলাম,২য়টতেও যদি একই হয়!!যা ও একটু আশার আলো দেখলাম,তাও হয়ত শেষ। কিন্তু তা হল না। ২য় সার্চ রেসাল্টটা দেখে অনেকক্ষন হাসলাম!! বাবলি বারাকাত, স্বপ্নকন্যার নাম।

তারপর তো ভাললাগা জমানো শুরু। আমি ওকে দেখতাম, মনে মনে অজানা ভবিষ্যৎ এর কিছু সুন্দর ছবি আঁকতাম।

মাসখানেক পরের একদিন।

সারাদিন বৃষ্টি হল।

মিস করছিলাম ওকে খুব। কিন্তু কি করব? সন্ধায় ওকে একটা মেইল করলাম “anonymous” হিসেবে,নতুন একটা মেইল আইডি থেকে।জানতে চেয়েছিলাম বৃষ্টি সম্পর্কে ওর অনুভূতি। খুব একটা আশা রাখিনি যে রেস্পন্স পাব। কিন্তু ২-৩ দিন পর পেলাম তাও।জানতে চাওয়া হয়েছে আমি কে???? আমি আর যাই বললাম, আমরা যে একসাথে ক্লাস করি তা বললাম না। এমন মেইল চালাচালি চলতে থাকল বেশ কিছুদিন; তারপর মেসেঞ্জার। নিজেদের নিয়ে অনেক কথা হত।

ইউনিভার্সিটিতে আমি ওকে খুব ফলো করতাম। ওর আশেপাশে থাকলে খেয়াল করতাম ও কি করে, কি কথা বলে!!এবং এগুলো এসে ওকে মেইল করতাম। যেহেতু, ও আমাকে চিনে না, ব্যাপারটাতে আমি যতটাই মজা পেতে শুরু করলাম, ও ততটাই বিরক্ত এবং একই সাথে কৌতহলী। আস্তে আস্তে পড়াশোনার চাপ বাড়ল।আমার মেসেঞ্জারে যাওয়া কমল।অল্প একটু সময়ের জন্যও যখন ঢুকতাম, ও অনেক অভিমানমাখা সুরে বলত, “আর আসছেন কি করতে?”।

।আমি বুঝলাম, ও আমাকে মিস করা শুরু করেছে। আমাদের ফোনে কথা হত না। একদিন, আমার নম্বরের জন্য খুব ধরল। আমি প্রথমে দিতে চাইলাম না। পরে দিলাম।কিন্তু এমন একটা নম্বর দিলাম যেটা শুধু রাতেই খোলা থাকে। ও আমাকে সারাদিন চেষ্টা করত। পেত না!!!রাতে খুব রাগিরাগি গলায় বলত “নম্বরটা না দিলেই পারতেন”!!আমি দেখতে চাইতাম ওর ধৈর্য কেমন!! একটা পর্যায়ে এসে আমি নিজেই আর পারলাম না।কথা বলা শুরু হল অনেক। কথা হত নিজেদের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ আর ভাললাগা নিয়ে। নিজেদের অনুভুতিগুলো আমরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতে থাকলাম। একদিন ও বলল দেখা করার কথা। আমি বললাম, তা তো করবই!! আমার মনে হছিল খুব সুন্দর এক্তা মুহুর্তের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আরো কিছু সময় যদি আটকে রাখতে পারতাম। কিন্তু ও নাছোড়বান্দা। দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, এই বর্ষায় এরপর যেদিন সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি পড়বে,সেদিন দেখা করব।

খুব বেশীদিন অপেক্ষা করতে হয়নি।তার ঠিক চারদিনের মাথায়, সকাল থেকে অঝোরে বৃষ্টি। ভাল লাগছিল। সেদিন আমার ক্লাস ছিল না। ও আমাকে এসএমএস করল “আজ কিন্তু আমাদের দেখা করার কথা!!”অনেক কষ্টে কাকভেজা হয়ে ইউনিভার্সিটিতে পৌছালাম।ঠিক তখন ই আরেকটা এসএমএস। “সরি!!আমাকে এখুনি চলে যেতে হচ্ছে। আমার বড় খালামনি স্ট্রোক করেছে।” এসএমএস পড়ে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। সেলফোনটা অফ করে পকেটে রেখে দিলাম। জানি ওর অপারগতা, তারপরো খারাপ লাগল।বাইরে তখনো বৃষ্টি। ছেলেপেলে ভার্সিটির গেটে জটলা পাকিয়েছে। আমি দাড়িয়ে আছি। হঠাৎ পাশে ফিরে দেখি বাবলী সমানে সেলফোন টিপে যাচ্ছে।কাউকে হয়ত চেষ্টা করছে, পাচ্ছে না। চোখগুলো ছলছল করছে। আমি সাথে সাথে সেলফোন অন করলাম। আমিই সেই সৌভাগ্যবান। রিং রিং!!! হ্যালো বলতেই, বাবলী আমার দিকে তাকাল,আমিও তাকালাম। কতক্ষন দুজনই নিসচ্চুপ থাকলাম। ও দৃঢ় দৃষ্টি আর ধরা গলায় বলল, “এখনো কি নামটা বলবেন না!!”
গল্পের পটভূমি বাংলাদেশে না হলে হয়ত একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরতাম।

তারপর তো আস্তে আস্তে প্রণোয়াপাখ্যান। ও ই বলেছিল একদিন হঠাৎ করে খুব অনাকাংখিত একটা সময়ে। তারপর একসাথে রিকশা করে বৃষ্টি ভেজা, ফুচকা খাওয়া আর স্বপ্ন দেখা আজীবনের জন্য।পরের গল্পগুলো সাধারন কিন্তু নিজেদের মত। এখনো আমরা মান অভিমানের মুহুর্তগুলো জমা করে রাখি আমাদের মেইল বক্স এ। পুরনো সময়গুলো এখনো আমাদের কাছে ছবির মত।
(সংগৃহীত গল্প)ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে জানাবেন ।

গল্প-৭

রাত্রিতে ঘুমানোর আগে আপনাদের জন্য রইলো একটি মিষ্টি গল্প।।

।। ও বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষণ ।।

-: চুপ কর ।আর একটাও
কথা বলবিনা ।

-: আমি কথা না বললে সত্যিই
কি খুসী হবি ?

-: হ্যাঁ ।অনেক অনেক ।

-: আচ্ছা যা ।আমি আর তোর
সাথে কথা বলবো না ।যতক্ষণ তুই আগে না বলিস ।

-: ওকে থ্যাংকস ।

কথাটি শোনার পরই নীল লগ আউট করে বের হয়ে ঘুমুতে গেলো ।নীল ও মিম খুব ভালো বন্ধু ।
ওরা একে ওপরকে অনেক ছোট থেকেই চেনে ।পরষ্পরের সাথে ওদের ঝগড়া না করলে পেটের ভাত ওদের হজম হয় না ।আজকের মত এমন ঝগড়া ওদের প্রায়ই হয় ।তবে আজ ওরা একটু বেশীই সিরিয়াস ।
নীল এবার এইচ এস সি দিবে ।মিম ও ।ওরা অনেক অনেক ভালো বন্ধু । এতটাই ভালো যে পরষ্পর পরষ্পর ছেড়ে থাকতে পারে না ।প্রতিদিন তারা দিনে ফোনে কথা বলতো আর রাতেফেসবুকের সুবাদে চ্যাট করতো ।
ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে নীল তার ফোন চেক করলো ।না কোন ম্যাসেজই নেই ।মিমের কি আমার
কথা মনে পড়ছেনা ?ভাবে নীল । ওদিকে মিমেরও একই অবস্তা ।সেও মনে মনে ভাবছে যে একটু মনে হয় সে বেশীই বলেছে ।মিম ঠিক করে যে নীলতাকে কোন ম্যাসেজ করলে সে সরি বলবে ।
নীল সকালে ঘুম
থেকে উঠে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লোফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিতে ।
সামনে পরীক্ষা কিন্তু নীল গেলো আড্ডা দিতে ।এর একমাত্র কারণ হলোমিমকেভুলে থাকা ।কিন্তু সে তা পারছে না । তার আজ আড্ডা জমছে না ।সে একটু পর পরই ফেসবুকে লগ ইন
করে ইনবস্ক্য চেক করছে ।কিন্তু না কোনই রেসপন্স সে পাচ্ছেনা মিমের কাছে থেকে ।
মিম ও তার পিসির
সামনে বসে আছে ।কেবল একটি মাত্রইচাওয়া তার ।সে মনে করছে নীল কে ম্যাসেজ করতে ।কিন্তু এই বিষয়ে সে সামনে একধাপ
আগালে পেছনে যাচ্ছে তিন ধাপ ।
দুপুর আড়াইটা ।এসময় মিম নীলকে ফোন দিত ।তার খোঁজ খবর করতো ।কিন্তু আজ আর নীল কোন ফোন কলই পাচ্ছেনা ।
সে মাঝে মাঝে তার ফোন চেক করে দেখছে যে ফোনের নেটওয়ার্ক আছে কিনা ।না ,সবই ঠিক ।মিমই ওকে ফোন দিচ্ছেনা ।নীল এসময় কখনোই শুয়ে থাকত না ।আজ
সে শুয়ে আছে আর ভাবছে মিমের কথা ।
আজ কি মিম চ্যাটে আসবে ?
কথা বলবে আমার সাথে ?এমন কিছু প্রশ্ন নীল তার মনকে ছুড়ে দিল । কিন্তু উত্তর পেলো না ।
আর কয়েক ঘন্টা পড়ই তাদের কথা না বলার এক দিন পূর্ণ হবে । ভাবে মিম ।প্রতিদিন মিম সাড়ে দশটার দিকে নীলকে মিস কল দিয়ে অন লাইন হতো ।আর তখনই নীল চলে আসতো । তবে আজ আর সে মিস কল দিলো না । সে সরাসরিই অন লাইন করল ।প্রথমেই সেনীল কে খুঁজলো ।কিন্তু নীল বাদে সবাই ই উপস্থিত ছিল । ছেলেটা এমনকেন ?একটু
আগে কথা বললে কি ক্ষতি হয় ওর ? মনে মনে বলে মিম।
প্রায় এক ঘন্টা পর নীল আসে অন লাইনে ।কিন্তু মিমকে নক করে না ।তারা দুজনই বসে আছে একটি মাত্র নকের আসায় ।প্রায় ২

ঘন্টা কেঁটে গেলো কিন্তু এখনও তারা কেউই কথা বলেনি ।মিম এবার আর থাকতে পারলো না ।
সে নীলকে ফোন দিলো ।নীল ফোন আসারসাথে সাথে তা রিসিভ করে চুপ করে থাকল ।দুজনই নিরব ।কোন কথা নেই কারো মুখে ।একসময় নীল শুনতে পেলোমিমের কান্নার শব্দ । তারপর সেও কাঁদতে শুরু করে দিলো ।

*********************************************

গল্পটি ভালো লাগলে Like করবেন কিন্তু।।

গল্প-৬

"নীরব ভালোবাসা" --- A Silent Love Story....
এটা একটা বাংলাদেশের কোন এক মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে ও একটি মেয়ের নীরব প্রেমের গল্প। মেয়ের পরিবার চিরাচরিত নিয়মে ছেলেটাকে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানায়। স্বাভাবিকভাবেই মেয়ের পরিবার মেয়েটাকে বুঝানোর চেষ্টা করে যে ছেলেটার খুবএকটা ব্রাইট ফিউচার নেই, তার সাথে সম্পর্ক রাখাটা বোকামি ছাড়া আর কিছু না।
পরিবারের চাপে পড়ে একদিন মেয়েটা ছেলেটাকে বলে,"আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা কতটা গভীর? তুমি একটা কিছু অন্তত করো। তাছাড়া আমাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নিবে না।" ছেলেটাকোন উত্তর খুঁজে পায় না। সে চুপ করে থাকে। মেয়েটা রাগ হয়ে চলে যায়। তারপরেও স্বপ্নবিলাসী ছেলেটা তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, কিছুটা অন্জন'দা এর গানের মতো, "সাদা-কালো এই জন্জালে ভরা মিথ্যে কথার শহরে, তোমার-আমার লাল-নীল সংসার।"
ছেলেটা একদিন হায়ার-স্টাডিসের জন্য বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যাওয়ার আগ-মুহূর্তে সে মেয়েটাকে বলে, "আমি হয়তো কথায় খুব একটা পারদর্শী না, কিন্তু আমি জানি যে আমিতোমাকে অনেক ভালোবাসি। তারপরেও তুমি যদি চাও, তোমার-আমার বিয়ের কথা আমি তোমার পরিবারকে একবার বলে দেখতে পারি। তুমি কি আমার সাথে সারাজীবন কাটাতে রাজি আছ?"
মেয়েটা ছেলের দৃঢ়-সংকল্প দেখে রাজি হয়। ছেলেটা মেয়ের পরিবারকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করে ফেলে। তারপর তাদের এনগেজমেন্ট হয়ে যায় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে ছেলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে ফিরলে তারপর তাদের বিয়ে হবে। এরপর ছেলেটা চলে যায় দেশের বাইরে।
মেয়েটা একটা অফিসে জব করা শুরু করে দেয়। এদিকে ছেলেটাও তার রিসার্চ-ওয়ার্ক নিয়ে দেশের বাইরে ব্যস্ত। তারপরেও তারা শত ব্যস্ততার মাঝেও ফোন আর ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের ভালোবাসার অনুভূতি যতটা সম্ভব আদান-প্রদান করে।
একদিন মেয়েটা অফিসে যাওয়ার পথে রোড-অ্যাক্সিডেন্ট করে। সেন্স ফিরে সে দেখতে পায় যে সে হাসপাতালে ভর্তি এবংবুঝতে পারে যে সে মারাত্মকভাবে আহত। তার বাবা-মাকে বিছানার পাশে দেখতে পায় সে। তার মা কান্না করতেছে তা বুঝতে পেরে যখন মেয়েটা কথা বলতে যায় তখন সে বুঝতে পারে যে তার বাকশক্তি লোপ পেয়েছে। ডাক্তারের ভাষ্যমতে মেয়েটা তার ব্রেনে আঘাত পাওয়ায় আজীবনের মতো বোবা হয়ে গেছে।
একসময় মেয়েটা খানিকটা সুস্থ হয়ে বাসায় চলে আসে। এদিকে ছেলেটা তাকে বার বারফোন করতে থাকে কিন্তু মেয়েটা বোবা বলে তার করার কিছুই থাকে না। মেয়েটা একদিন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। সে তার কথোপোকথন-হীন এই জীবনের সাথে ছেলেটাকে আর জড়াতে চায় না।
তার ফলশ্রুতিতে সে একদিন একটা মিথ্যা চিঠিতে লেখে যে সে আর ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করতে পারবে না। তারপর মেয়েটা চিঠির সাথে তার এনজেজমেন্ট রিং ছেলেটার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়। ছেলেটা মেয়েটাকে হাজার-হাজার ই-মেইল করে কিন্তু তার কোন রিপ্লাই সেপায় না। ছেলেটা শত-শত বার ফোন করে কিন্তু মেয়েটার ফোন রিসিভ না করে নীরবে কান্না করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
একদিন মেয়েটার পরিবার বাসা বদল করে অন্য কোন এলাকায় নতুন কোন একটা পরিবেশে যাওয়ার সিদ্ধান্তনেয় যাতে করে মেয়েটা কিছুটা হলেও এই দুঃস্মৃতী ভূলে যায় এবং সুখে থাকে।
নতুন পরিবেশে মেয়েটা"সাইন-ল্যাংগুয়েজ" শেখে এবং নতুন জীবন শুরু করে। বছর দুয়েক পর একদিন মেয়েটার এক বান্ধবী এখানে চলে আসে এবং মেয়েটাকে বলে যে ছেলেটা দেশে ব্যাক করেছে। মেয়েটা তার বান্ধবীকে রিকুয়েস্ট করে যাতে ছেলেটা কোনভাবেই যেন তার এই অবস্থার কথা জানতে না পারে। তারপর কয়েকদিন পরমেয়েটার বান্ধবী চলে যায়।
আরো এক বছর পর আবার একদিন মেয়েটার বান্ধবী মেয়েটার কাছে একটা ইনভাইটেশন কার্ড নিয়ে চলে আসে। মেয়েটা কার্ড খুলে দেখতে পায় যে এটা ছেলেটার বিয়ের ইনভাইটেশন কার্ড। মেয়েটা অবাক হয়ে যায় যখন পাত্রীর জায়গায় তার নিজের নাম দেখতে পায়। মেয়েটা যখন তারবান্ধবীর কাছে এ সম্পর্কে কিছু জানতে চাইবে তখন সে দেখতে পায় যে ছেলেটা তার সামনে দাঁড়িয়ে। ছেলেটা তখন "সাইন ল্যাংগুয়েজ" ব্যবহার করে মেয়েটাকে বলে,"I've spent a year's time to learn sign language. Just to let you know that I've not forgotten our promise. Let me have the chance to be your voice. I Love You." এই বলে ছেলেটা আবার সেই এনগেজমেন্ট রিং মেয়েটাকে পড়িয়ে দেয়। কয়েক বছর পর মেয়েটা আবার হেসে উঠে। এ যেন এক নীরব ভালোবাসার নীরব হাসি। ভাল লাগলে লাইকে ক্লিক করতে ভুলবেন না ।

গল্প-৫

বসুন্ধরায় সিনেপ্লেক্সে একটা মুভি দেখবো বলে বসুন্ধরায় ঢুকলাম।আজ অন্যদিনের চেয়ে অনেক ফাকা।ক্যপসুলে শুধু আমি একা,উঠবে এমন সময় হঠাত্‍ কে লিফটাকে আবার স্টপ করালো,দরজা খুলে গেলো আর ভিতরে ঢুকলো আমারই বয়সী এক রূপবতী।আমি সাধারণত মেয়েদের দিকে তাকাই না,আমার মা আমাকে আর বাবাকে রেখে আরেক পুরুষের সাথে পালিয়ে যাওয়ায় ছোট থেকেই মেয়ে জাতিকে ঘৃনা করি,তাই আজো ব্যতিক্রম হলো না অর্থাত্‍ আর তাকালাম না।
টিকিট কেটে নির্দ্দিষ্ট আসনে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম,আজকের মুভি লাল টিপ।পিছনে চোখ পড়তেই দেখলাম লিফটের মেয়েটি।১৪৫ ডিগ্রি কৌনিক দূরুত্বে চোখটাকে ঘুরিয়ে নিলাম।
মুভিটা চরম লাগছে।
.
.
টিএসসি তে ভার্সিটির বন্ধুদের সাথে বসে চা খাচ্ছি।পাশেই একটা রিক্সা এসে দাড়ালো,আর রিক্সা থেকে নামলো সেই লিফটের রূপবতী।নেমেই আমার কাছে এসে বলল "১০ টাকা ভাংতি হবে"।
আমি অবাক হলাম তবুও পকেট হাতড়ে একটা ১০ টাকা বের করে তার হাতে ধরিয়ে দিলাম।
মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,"আরেকদিন আপনার টাকাটা দিয়ে দিবো আজ ভাংতি ছিলো না "
আমি মুখকে অন্যদিকে ফিরিয়ে বললাম,"টাকা দিতে হবে না"
"আমি ভিক্ষুক নই যে আপনার থেকে ভিক্ষা নিবো",এই বলে মেয়ে চলে গেলো।
"কিরে মামা এসব কি দেখতেছি?মেডিকেলের মাইয়্যা আসি তোমার থেকে টাকা খুজে,কাহিনী কি?"অর্নব অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।
সবাই একসঙ্গে প্রশ্নদিপ্ত চোখে তাকিয়ে রইলো।

"আরে না ঐদিন মেয়েটা আর আমি বসুন্ধরায় ক্যাপসুলে উঠছিলাম ,তখন মনে হয় খেয়াল করছে।আর মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে এটা তোরে কে কইলো ?"
"মেয়েটা আমার কাজিনের বান্ধবী"
"তাইলে তো তোকে চিনার কথা, তোর থেকে টাকা চাইলো না কেন?"
"মেয়েই ভালো জানে"
.
.
.
.
.
.
বাইক নিয়ে বেশ জোরেই টানছিলাম ,হঠাত্‍ রাস্তার মধ্যে একটা জটলা দেখলাম,চরমভাবে ব্রেক কশলাম।বাইক রেখে সামনে গিয়ে জানতে পারলাম একটা মেয়ের রিক্সাকে বাস বলতে গেলে পিশে দিয়েছে।ভিড় ঠেলে দেখি আরে এতো সেই রূপবতী, মেয়ের হাত পা ভেঙ্গে গেছে প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে।আমি তত্‍ক্ষনাত সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই ওর ভার নিবো।কোন গাড়ি পাচ্ছিলাম না তাই কষ্ট আমার বাইকে করেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলাম ।ডাক্তাররা সবাই ওকে চিনে তাই আমার তেমন কষ্ট হয়নি,তারা বলেন,অবস্থা বেশি খারাপ।!CU তে রাখা হয়।তখনি ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়।আমার ক্রেডিট কার্ড টাকা আছে আর ৪ লাখ ১৫ হাজার।বাবা এখন ফ্রান্সে থাকার কথা আসবে আরো ১সপ্তাহ পর।তবুও ফোন দিলাম "বাবা তুমি কোথায় ?"
"এই তো ১ ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলাম।"
"তার মানে বাংলাদেশে ?"
"হ্যাঁ"
"বাবা তুমি এখনি ঢাকা মেডিকেলে আসো।"
"কেনো বাবা তোমার কোন সমস্যা হয়েছে ?"
"না বাবা তুমি আসো তারপর বলছি।"
"ঠিক আছে।"
যাক বাচা গেছে বাবা যখন আসবে তখন আর চিন্তা নেই।
এরই মধ্যে মেয়েটার কয়েকজন বন্ধু এসে হাজির ।তখনি ১ম মেয়েটার নাম শুনলাম,মেয়েটার নাম রিয়া।রিয়ার বন্ধুরা বান্ধবীরা আমার প্রতি বেশ কৃতজ্ঞতা দেখালো।ততক্ষনে বাবা হাজির এবং প্রথমেই বললঃ "ইমরান বাবা তোর কিছু হয়েছে?"
বাবাকে সব খুলে বললাম।সব শুনে বাবা প্রথমে টাকা পে করলো।এদিকে রিয়ার বাবা মা থাকে চট্টগ্রাম।ফ্লাইটে তাড়াতাড়ি আসার কথা কিন্তু বাংলাদেশ বিমান লেট করলো তাই আধ ঘন্টার যায়গায় ৩ ঘন্টা লেগে গেলো।আমি তাদের ওখানে বাসায় এলাম।সেদিন কেনজানি রিয়ার প্রতি বেশ ভালোবাসা জন্মে,জানি না এটা দয়া নাকি প্রেম।
সুস্থ হতে হতে ৩ মাস লেগে যায়।রিয়ার পরিবারের সাথে এই ৩মাসে সম্পর্ক বেশ ভালো হয়ে যায়।আমি তাদেরকে অনেক বলেছি আমার বাসায় থাকার জন্য কিন্তু তারা থাকেনি,৩ মাস থাকার জন্য তারা একটা ফ্ল্যাটই কিনে ফেলে।তারা আমাকে চট্টগ্রাম যাওয়ার আহ্বান জানায় কিন্তু কয়দিন পর ইয়ারলি এক্সাম,তবে তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করতে হলো পরীক্ষার পর যাবো।
.
১মাস পর পরীক্ষা শেষ হলো।আঙ্কেল ফোন করলো অর্থাত্‍ রিয়ার বাবা,তিনি বলেন আগামী শুক্রবার তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে অর্থাত্‍ রিয়ার বড় বোনের বিয়ে,আমাকে বুধবারের মধ্যে যেতেই হবে,আমিও সায় দিলাম যাবো।বিকালে এয়ারপোর্টে গিয়ে বুধবারের টিকেট বুক করি।এই ১ম চট্টগ্রাম যাবো।
.
.
.
.
.
.
ল্যান্ড করলাম।বেরিয়ে এসে দেখলাম আমার নামের প্ল্যাকার্ড নিয়ে একজন দাডিয়ে আছে গিয়ে বললাম আমিই ইমরান।লোকটি বললঃ"আমি ড্রাইবার ,নাম মোকলেস, স্যার আপামনির বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত তাই আসতে পারেন নি ।"
"সমস্যা নেই তুমি চলো"
চট্টগ্রাম জায়গাটা খুব সুন্দর মনে হচ্ছে ,তেমন একটা জ্যাম নেই।" আচ্ছা মোখলেখ বাসা কোথায়? অর্থাত জায়গার নাম ?"
"খুলশি"
.
.
.
বাড়িটা ডুপ্লেক্স।বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথে সবাই যেভাবে আপ্যায়ন করতে লাগলো মনে হয় যেন আমি তাদের মেয়ে জামাই।তারা বারবার বলছে আমার কারনেই রিয়া জীবন ফিরে পেয়েছে,আমি কি বলবো বুঝতেছিলাম না।কোনমতে বললাম আমাকে একটু ফ্রেশ হবে।সাথে সাথে আমাকে আমার রুমে নিয়ে গেলো।হাফ ছেড়ে বাচলাম,গোসল করে টেবটা নিয়ে যা একটু বসলাম সাথে সাথে দরজায় নক।

খুলে দেখলাম রিয়া।আজ একটা সবুজ শাড়ি পড়েছে চোখ চশমা।এ যুগের মেয়েরা শাড়িও পরে ?অবাক লাগলো।"ব্যস্ত ? ভিতরে আসতে পারি ?"
"অবশ্যই অবশ্যই ভিতরে আসুন"
ঢুকেই আমার হাতে একটা দশ টাকার নোট গুজে দিলো
"দশ টাকা ?কেন ?"
"ভুলে গেলেন? টিএসসির মোড়ে আপনার থেকে দশ টাকা নিয়েছিলাম"
"ও ! ভুলে গিয়েছিলাম"
"ভুলে গেলে বুয়েটে কেমনে পড়েন ?"
"জানি না"..........
...কথা বলছিলাম অনেকক্ষন এমনসময় দরজার ওপাশ কে জানি চট্টগ্রামের আন্চলিক ভাষা বলল,"রিয়া আফা তুই হডে গিয়্যো ?,আম্মা জ্বি তোয়ারে তোআর"
"আসছি তুই যা"
"আচ্ছা রাতে দেখা হবে,রাতে একটা ক্যাম্পফায়ারের পার্টি হবে এসো"
আমি হঠাত্‍ লক্ষ করলাম রিয়া আপনি থেকে তুমিতে নেমে গেছে।এটাতো ঠিক না তুমি হলেই প্রেম আর প্রেম মানেই বিয়ে আর বিয়ে মানেই বাবার মতো অবস্থা,অসম্ভব অসম্ভব !ঐ মহিলার অর্থাত্‍ আমার মার কথা মনে হতেই মাথা প্রচন্ড গরম হয়ে যায়।বাবাকে ফোন করলাম ,"বাবা তুমি কি এখন আমার সাথে একটু ভিডিও চ্যাট করতে পারবে ?"
"কেনো যা ফোনেই বললে হয় না ?"
"না হয় না,তুমি আসবা নাকি বলো,"
"আসছি"
.
.
.
"বল কি বলবি?"
"তুমি কি মা কে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলে ?"
"হঠাত্‍ এই প্রশ্ন কেনো ?"
"বাবা তুমি বলো ,"
"আমি পছন্দ করতাম কিন্তু তোর মা পছন্দ করতো আরেকজনকে ,তোর দাদা তোর নানা দুজন ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু তাই বিয়েটা হয়ে যায় ,বাকিটাতো তুই জানিস"
"বাবা আচ্ছা কাল কথা হবে"
"কেন"
"আজ ভালো লাগছে না"
"অসুস্থ ?"
"না"
"ও বুঝছি,বয়সটা আমিও পার করেছি ,আচ্ছা পরে কথা হবে এখন একজন ক্লায়েন্ট আসবে"
"বাই"
বাবার কথায় হোক আর আমার বিবেকের মাধ্যমেই হোক মেয়েদের সম্পর্কে আমার ধারনা পাল্টে যায় মনে হতে থাকে মেয়ে জাতিটা খারাপ না।
.
.
.
.
রাতে ক্যাম্প ফায়ারের চারদিকে সবাই বসে মজা করছিলো এমন সময় ছাদ থেকে আঙ্কেল খবর পাঠালেন যাতে আমি উনার কাছে যাই,
"ডাকছিলেন ?"
"আরে ইমরান আসো আসো,শুনলাম বিকালে এসেছো ,আসতে কোন সমস্যা হয়েছিলো ?"
"না,কোন সমস্যাই হয়নি ,ঠিক সময়ে ফ্লাই করেছে।"
"তাইলতো ভালোই,আমাদের চট্টগ্রাম আমাদের ঘর কেমন লাগছে?"
"খুব ভালো ,বেশ ফ্রেন্ডলি সবাই।"
"আমি আসলে ব্যস্ত ছিলাম বলে এয়ারপোর্ট যেতে পারিনি এজন্য দুঃখিত"
"না ঠিক আছে,"
"ড্রিংস করবে?"
"সরি আঙ্কেল ওরকম অভ্যাস নেই"
"মজা করেছি আমরাও অভ্যাস নেই,আচ্ছা তুমি নিচে যাও মজা করো।"
.
.
.
আজ বিয়ে শেষ হয়ে গেলো ।আমি ব্যাগ গোছাচ্ছি।"আসতে পারি?"
রিয়ার আওয়াজ
"আসো আসো"
ভেতরে এসে বসলো।আজো একটা শাড়ি পরেছে কিন্তু চোখে চশমা নেই।
তুমি ড্রাইভিং পারো ?
হ্যা পারি কেনো?
চলো
কোথায় ?
লং ড্রাইভে
আমার কার আর বাইক ঢাকায়
তোমার গাড়ি নিতে কে বলেছে আমাদের একটা গাড়ি নিলেই তো হয়
না আজ ইচ্ছা করছে না
আচ্ছা তুমি বসে থেকো আমি চালাবো
মেয়েতো দেখি নাছোড়বান্দা,অবশেষে রাজি হয়ে গেলাম।আঙ্কেলরা মনে হয় আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য বসে ছিলেন,রিয়া গিয়ে বলতেই ট্রেতে করে চাবি পৌছে দিয়ে গিয়ে।
.
.
.
রাস্তা চিনি না তবুও চালিয়ে চলছি।পাশে রিয়া ,ওকে খুব সুন্দর লাগছে।আজ মনে হচ্ছে রিয়াকে বিয়ে করলে কেমন হয়,আমি মনে হয় ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।সাথে সাথে প্রপোজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম ।রাস্তা ফাকা দেখে গাড়ি আর থামালাম না,ওতেই বলে দিলাম "! LOVE U,"
ওর REPLY,"! LOVE U 2"
হঠাত্‍
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
বাবা ফোন দিলো,
"হ্যা বাবা কি খবর?"
"এই তো ভালোই তুই কেমন আছিস?"
"বাবা তোমার সাথে একটা কথা বলবো ভিডিও চ্যাটে আসো।"
"আমি জানি তুই কি বলবি,আমি রিয়ার বাবার সাথে কথা কথা বলে ঠিক করেছি তোদের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার পর বিয়ে হবে।ভালো মতো ড্রাইভ কর।বেষ্ট অফ লাক।"
আমি অবিশ্বাস্য চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
5 yearz later,
ফ্রান্সে হানিমুন বেশ ভালোই লাগছে।সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো আইফেল টাওয়ারের নিচে সবার সামনে K.....না আর লেখলাম না।[ সংগ্রহীত ]

গল্প-৪

একটি ছেলে আর একটি মেয়ে রিক্সায়
করে ঘুরতে বের হয়েছে......

ছেলেঃ তোমাকে কিছু কথা বলারছিল।।
মেয়েঃ কি কথা??
ছেলেঃআমি জানি না কথা গুলো তুমি কি ভাবে নিবে...।।
মেয়েঃআরে বাবা এত না ভেবে বল তো কি হয়েছে???
ছেলেঃ আমি আর পারছি না, তোমার
সাথে মানিয়ে চলতে, অনেক চেষ্টা করেছি,কিন্তু পারিনি আর তাছাড়া আমি আর একজনকে এখন ভালোবাসি।।
আমি আর তোমাকে ভালোবাসি না।।
আমাকে একটু একা থাকতে দিবে???
ছেলেটা একনাগাড়ে সব বলে ফেলল.........
মেয়েটি সব শুনে দুই মিনিট চুপ
করে রইল............
তারপর
মেয়েটা ছেলেটার গালে একটা kiss
দিয়ে বলল,
মেয়েঃআমি জানি আমার জন্য এত ভালোবাসা ত্যাগ করে তুমি অন্য কাউকে ভালবাসতে পারবে না,দুনিয়ার যত সুন্দর মেয়েই হোক না কেন, সে তোমাকে যতই ভালবাসুক না কেন,তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কেউকে ভালবাসবে না।।অন্তত তুমি আমায় ছেড়ে যাবে না... কেন শুধু শুধু এগুলো বলে আমায়
কাঁদাও,নিজেও কষ্ট পাও???
এই বলে মেয়েটা ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে......
ছেলেটা কিছু বলতে পারে না শুধু তার
চোখ দিয়ে আনন্দ অশ্রু বেয়ে পড়ে মেয়েটির গাল ভিজিয়ে দেয়.........

গল্প-৩

একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালবাসত কিন্তু
মেয়েটি ছেলেটিকে ঘৃনা করত...

ছেলেটি বললঃ আমি তোমার ঘৃনাকে ভালবাসায় পরিনত করব এবং আমি তোমার বাড়ির সামনে আগামী ১০০ দিন দাড়িয়ে থাকব।

কখনো প্রচন্ড রোদ ওঠে ,কখনো বৃষ্টি হয়
কিন্তু
ছেলেটি সেই মেয়েটির বাড়ির সামনে দাড়িয়ে রইলো।

৯৯ তম দিন থেকে মেয়েটি
ছেলেটিকে ভালবাসতে শুরু করল।

মেয়েটি স্বিদ্ধান্ত নিলো সে ছেলেটিকে তার ভালবাসার কথা জানাবে।

১০০ তম দিনে সূর্য ওঠার সাথে সাথে মেয়েটি
ছেলেটি যে জায়গায় দাড়িয়ে ছিল সেখানে গেল
কিন্তু
ছেলেটি সেখানে ছিল না !

সে একটি "চিরকুট" খুজে পেল ,
যেখানে লেখা ছিলঃ

“তুমি বাড়িতে বসে যখন রোদ বৃষ্টি উপভোগ করছিলে ঠিক সেই সময় গুলো তে তোমার পাশের বাড়ির মেয়ে টি আমায় ভালবাসতে শুরু করে

সে আমায় ২৭ দিনের দিন থেকে বলছিল সে আমায় ভালোবাসে আমি ৯৯ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি
এর মাঝে সে প্রতিদিন জানিয়েছে
সে আমায় ভালোবাসে

অবশেষে
আমি আমার সত্তিকারের ভালবাসা খুঁজে পেয়েছি

তাই
আমি তোমার পাশের বাড়ির মেয়েটিকে কথা দিয়েছি
তোমার মাঝে যে পৃথিবী খুঁজেছিলাম
ঐ মেয়ে আমার মাঝে খুঁজে
ভালো থেকো ”

মোরাল :
যখন তুমি সত্যিকারের ভালবাসা পাও
তাকে সন্মান করতে শেখো ।
কারন
আজ যা তুমি খুব সহজে পেতে পারো ,
হয়ত কাল তা তুমি হাজার কাদলেও পাবে না।

-কিছুটা প্রেম আর বাকীটা ভালোবাসা ।।

-কিছুটা প্রেম আর বাকীটা ভালোবাসা ।।

মুখ ভার করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো বৃষ্টি। আমাকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে
ধরে বলেই ফেললো , " আমি তোমাকে ভালোবাসি" ; ঘটনার আকস্মিকতায় আমি ততক্ষনে বোকা বনে গেছি। চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে নাকি। কোনভাবে বৃষ্টির বাহুবন্ধন ছারিয়ে দৌড়ে পাশের ঘরে আম্মুর কাছে গেলাম। সেখানে আম্মু আর বৃষ্টির মা গল্প করছিলেন। আমি আম্মুর কোলে যেয়ে কাঁদো কাদোঁ হয়ে বলে দিলাম, "আম্মু বৃষ্টি বলে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে। আমাকে ছারা নাকি বাঁচবে না। আমার এখন কি হবে আম্মু। ও কত পঁচা মেয়ে।" আমি হাউ মাউ করে কেঁদেই ফেললাম। আমার কান্না না থামিয়ে দুই মহিয়সী নারী তখন আমার কথা শুনে অট্টহাসিতে ব্যাস্ত।

আমার বয়স তখন সাত কি আট বছর আর বৃষ্টি পাঁচের আশেপাশে। সেই বয়সে আমি সুকুমার রায় কিংবা তিন গোয়েন্দা পড়ে বিশাল জ্ঞানী আর বৃষ্টি সারাদিন বাংলা আর হিন্দি সিনেমা দেখে ভীষন রোমান্টিক মেয়ে। আমাকে দেখলেই গান শুরু করতো, " তুম পাস আয়ে, ইউ মুজকো রায়ে..." বৃষ্টির আচার আচরন তেমন পছন্দ না করলেও বৃষ্টিকে ছারা আমার কোন উপায় ছিল না। চারদেয়ালের বন্দী জীবনে বৃষ্টিই ছিল আমার খেলার সাথী অথবা বলা যেতে পারে সবথেকে ভালো বন্ধু। আমি যখন ওকে হারকিউলিসের অভিযানের গল্প শোনাতে চাইতাম ও উল্টা আমাকে হিন্দী মুভির রিভিউ শুনিয়ে দিতো। খুব ভালো নাচতে পারতো, হাত পা কোমড় দুলিয়ে নেচেও দেখাতো। মাঝে মাঝে গলার ওড়না ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কি একরকমের নাচ দিত যা সেই বয়সে আমার জ্ঞানের বাইরে ছিল। দু একবার সর্প নাগিনের নাচ দেখার সৌভাগ্যও আমার হয়েছিল।

আমার সুহৃদয় সম্পন্না আম্মাজান বৃষ্টিকে অতিশয় পছন্দ করতেন। বৃষ্টিকে ঘরে তোলার বেশ ইচ্ছেও তার মাঝে দেখা যেতো। হয়ত নিজের মেয়ে ছিলনা বিধায় এই দুষ্ট মেয়েটিকে অনেক বেশি আদর করতেন। ছোট বেলা থেকে দেখেছি বৃষ্টি ওদের বাসায় না থেকে আমাদের বাসাতেই থাকতো বেশি। বৃষ্টির বাবা মাঝে মাঝে রসিকতা করে বলতেন, "এখন থেকেই এই বাড়িতে ঘর সংসার বেঁধে ফেলেছো, যখন একেবারে তোমাকে এই বাড়িতে পাঠিয়ে দেব তখনতো বাবা মা কে চিনবে না।" এই কথায় বৃষ্টি লজ্জিত হওয়ার পরিবর্তে আমার দিকে তাকিয়ে হাফ ইঞ্চির ঠোট দুই ইঞ্চি করে একটা হাসি দিতো। ওর সেই হাসির রহস্য উদঘাটনের কোন আভাস আমি তখনো টিনটিন সিরিজে পাইনি।

এভাবেই দেখতে দেখতে বেশ কিছু বছর কেটে যায়। আমি তখন দশম শ্রেনীতে পড়ি আর ও ক্লাস সেভেনে। তখনো আমাকে জ্বালাতন করা থামেনি। ও যখন আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো, ওকে দেখতে আমার কেমন যেন কার্টুন কার্টুন মনে হতো। হাতে পায়ে লম্বা হলেও দুষ্টামি কমেনি ওর। একদিন পরীক্ষার আগে আমি কোচিং এ। ও কখন যে একটা লাভলেটার লিখে আমার টেবিলে রেখে গেছে আমি জানতামই না। আমার বাবা কখনো আমার খোঁজ খবর না নিলেও সেদিন কি মনে করে আমার ঘরে যেয়ে এই ভয়ংকর মেয়ের লাভলেটার উদ্ধার করে। আমি যখন বাসায় ফিরলাম দেখি যে দুই ফ্যামিলি একত্র হয়ে বসে আছে। আম্মু আমার দিকে লাভলেটারটা বাড়িয়ে দিলেন। চিঠির শেষে ছোট্ট করে প্যাচের হাতে লেখা, " ইতি , তোমার ভালোবাসার বৃষ্টি।" আমি এবারও ঘটনার কিছু বুঝতে না পেরে কেঁদেই ফেললাম, একটু পরে দেখি বৃষ্টিও আমার সাথে কান্নাকাটি জুরে দিয়েছে। দুজনকে কান্না করতে দেখে দুজন বাবা আর দুজন মা কিভাবে এত হাসতে পারে সেটাও আমি এখনো বুঝতে পারি না।

এরই মাঝে বছর দুয়েক পেরিয়ে যায়। আমি কলেজে তখন ভবিষ্যত গড়ায় ব্যাস্ত। নিক্তি আর ক্যালভিন স্কেলের সুক্ষ রিড খাতায় টুকে স্যারকে দেখিয়ে মার্ক বাড়ানো ছারা তখন আর কোন লক্ষ্য স্থির করতে পারছিলাম না। হঠাৎ করেই একদিন আমার জন্মদিনে বৃষ্টির দেয়া গিফট দেখে ওর কথা মনে পরে গেলো। কিছুদিন থেকে যে ও আমাকে জ্বালাতন করছে না সেটা আমি বুঝতেই পারিনি। কেন যেন ওকে দেখতে খুব ইচ্ছে হলো সেদিন। আর সেদিন বিকেলেই আমার জীবনের সব থেকে বড় হৃদকম্প হয়েছিল, রিকটার স্কেলে পরিমাপ করলে যার মাত্রা নয় ছারিয়ে যাবে।

সেদিন বিকেলে ছাদে বসে আমি ভাবছিলাম বৃষ্টির আবার অসুখ করলো নাকি। নইলে যে মেয়ে সারাদিন আমার পাশে ঘুর ঘুর করে সে হঠাৎ করে কোথায় চলে যাবে? হঠাৎ করেই দেখি কোন একটা মেয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আমি যেদিকটায় তাকিয়ে ছিলাম সেদিকে তাকিয়ে আছে। পড়নে লাল পারের শাড়ি, ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক, চোখে বেশ করে কাজল দেয়া, চুল ছেরে দেয়াতে মেয়েটাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছিলো। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম এইটা বৃষ্টি। আমি পুরাই আহাম্মক হয়ে গেলাম। এই কয়দিনে বৃষ্টি কত বড় হয়ে গেছে,আবার তার উপরে পুরাই অপ্সরী ছারিয়ে গেছে! আমি কাছে যেয়ে আস্তে করে বললাম," বৃষ্টি, তোকে আজ দেখতে খুব সুন্দর লাগছেরে, মনে হচ্ছে আধোনীল আর আধো গোধূলীর আকাশ থেকে কোন রাজকন্যা নেমে এসেছে" ; লজ্জায় টমেটোর মত মুখ করে দৌড়ে পালিয়ে যায় বৃষ্টি।

এরপর আমার ধারে কাছেও ভিরতো না বৃষ্টি। কোন কারনে ভুল করে যদি আমি ওর সামনে পরে যেতাম লজ্জায় মাথা নীচু করে রাখতো। আমি এক সময় অনুভব করলাম এই মেয়েটার সাথে আমার হৃদয়ের কোন সম্পর্ক আছে। আমি ঘুমাতে গেলে ঘুমাতে পারি না, রাস্তায় হাটার সময় বিরবির করে কি যেন বলতে থাকি, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বৃষ্টিদের বাসায় উঁকিঝুকি মারি ওকে একটু দেখার আশায়। বুঝলাম আমি শ্যাষ।

এরই মধ্যে আমি চুয়েটে চান্স পেয়ে যাই। ঢাকায় হয়নি বলে মনে তখন বিশাল ক্ষত। সবচেয়ে বেশি কস্ট হচ্ছিল বৃষ্টিকে দেখতে পারব না ভেবে। ইচ্ছে ছিলো যাওয়ার আগে বৃষ্টিকে ভালোবাসার কথা বলবো, কিন্তু আমার হৃদয়ের অপারেটিং সিস্টেম থেকে বলতে লাগলো, " আপনার বুকে যথেষ্ঠ পরিমান সাহস জমা নেই, অনুগ্রহ পূর্বক রিচার্জ করে আবার আসুন, ধন্যবাদ।"

প্রতি সেমিস্টার শেষ করে সোজা ঢাকায় চলে যেতাম, কিন্তু তখনো আমি সাহসের ফার্স্ট লেভেল পার করতে পারিনি। টুকটাক কথা চলতো আমাদের, কিন্তু সাহস করে ভালোবাসি শব্দটা বলতে পারতাম না। আমি তখন বুঝতে পারি যারা সত্যিকারের ভালোবাসে , ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রথমবার এই শব্দটি বলা কতবড় দুষ্কর কাজ। কনকনে শীতের মাঝেও ওকে দেখলে আমি ঘামিয়ে যেতাম। এভাবেই লুকোচুরিতে চলতে থাকে দুটি মনের নিরন্তর ভালো লাগার খেলা। কিন্তু হঠাৎ করেই সব কিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেলো।

আমি তখন ফাইনাল দিয়েছি। দুইদিন পরে রেজাল্ট আসবে। আর মাত্র দুইদিন পরে আমি গ্রাজুয়েট হতে যাচ্ছি ভাবতেই কেমন যেন শিহরন জাগে গায়ে। এরই মধ্যে আমার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। মেসেজে লিখা ছিলো, "কাল আমার বিয়ের কথাবার্তা পাকা করবে। যদি ভালোবাসো ফিরে এসো; বৃষ্টি।" আমি স্তদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। পাশে থেকে বন্ধু ইমন ঝুকে পরে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো," কিরে খিজ খাইলি কেন? কি হইছে?" আমি অস্ফুস্ট স্বরে শুধু বললাম ,"বৃষ্টির বিয়ে।"

বন্ধু যে কত মহান হতে পারে আমি সেদিন হারেহারে বুঝতে পেরেছিলাম। রাত সাড়ে চারটায় ইমন আমাকে নিয়ে মোটরসাইকেল হাকিয়ে রওনা দিলো বাস কাউন্টারে। যেয়ে দেখি লাস্ট বাস ছেরে গেছে। সকাল ছারা উপায় নাই। কি আর করা, দুই বন্ধু মোটর সাইকেল নিয়েই রওনা দিলাম ঢাকায়। আমি কিছুতেই বৃষ্টিকে হারাতে চাই না। ছোট বেলার ছোট ছোট সব স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছিল। কেউ যদি আমাকে রচনা লিখতে বলে চাইল্ডহুড মেমরী নিয়ে তাহলে সাত পৃষ্টা জুড়েই থাকবে বৃষ্টির কথা। সেই বৃষ্টিকে আমি হারাতে বসেছি !

সন্ধ্যায় ঠিক আগে আগে আমার বাসার কাছেই পৌছলাম। দৌড়ে আমাদের বাসায় না যেয়ে সোজা বৃষ্টিদের বাসায় ঢুকলাম। বাসা ভর্তি মেহমান। কিছু অচেনা লোক। আমি তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। হাপাতে হাপাতে মুরব্বিদের সামনে যেয়ে পাগলপ্রায় হয়ে সিনেমার স্টাইলে বলে ফেললাম,"এই বিয়ে হতে পারে না। I Love Her From Childhood !"

পাশে তাকিয়ে দেখি আমার বাবাও বসে আছে। মুরুব্বিরা সব একে অপরের দিকে তাকাতে শুরু করেছে। আমি পাগলের মত কিসব বলে ফেলেছি। আজ এখানে নির্ঘাত কোন লঙ্কাকান্ড না হয়ে যায় না। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘরে হাসির রোল পরে গেলো। কেউ হাসি থামাতে পারছে না। আমি ভাবলাম লং জার্নিতে গায়ে মুখে কালি লেগেছে তাই হয়ত হাসছে, হাত দিয়ে গাল ঘষতে লাগলাম। পরে যেয়ে জানতে পারলাম সেদিন বৃষ্টির সাথে আমারই বিয়ের কথা হচ্ছিল।

পাশের ঘরের জানালায় বৃষ্টি তাকিয়ে ছিল। পা টিপে পেছন থেকে যেয়ে ওর ঘাড়ে হাত রাখলাম। বৃষ্টি মৃদু কেঁপে উঠলো। আজ ওকে অপ্সরীর মত দেখাচ্ছে। ওর গাল টিপে দিয়ে বললাম," এখনো দুষ্টুমী কমেনি তোমার?" লজ্জা রাঙা মুখ ঢাকতে আমার বাহুডোরে এসে ধরা দিলো আমার স্বপ্নের অপ্সরী। দুহাতে জরিয়ে নিলাম সারা জীবনের জন্য। আজও দুষ্টুমী কমেনি ওর বরং ভালোবাসা বেড়েছে।

[সংগ্রহীত ]

“এক অজানা ভালবাসা”



এক অজানা ভালবাসা
মোঃমাসুদ রানা

এই রিফাত দোস্ত একটা নাম্বার দে না।দোস্ত তুই না আমার দোস্ত আমার এই হাল দেখে কি তোর একটু মায়া হয় না।তুই যখন তোর বউরে নিয়ে আমার সামনে দিয়া লাইন মারস আমার কি একটু খারাপ লাগে না।আমারো তো মন চাই তোর মত একটা গার্লফ্রেন্ড আমার থাকবে।আমাকে অনেক ভালবাসবে। অনেক জোরা-জোরি করার পর রিফাত আমাকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ইমা এর নাম্বার দিল। ইমা সম্পর্কে প্রথমে এতটা জানতাম ন।সে যাই হোক নাম্বার পেয়েছি মনে হচ্ছে আলাদিনের একটা প্রদিপ পেয়েছি।সাথে সাথে নিচে চলে গেলাম রির্চাজ করব বলে।১০০ টাকা রির্চাজ করেছি অনেকক্ষন কথা বলব।ফোন দিয়ে কি বলব আগে তো এমন কারও সাথে আগে তো কথা বলিনি।তো রাতে কল দিব ভাবলাম।সন্ধ্যা ৭ টা বেজে গেছে এসব ভাবতে ভাবতে।রিফাত যদি জানতে পারে এখনো কল দেইয়নি।আমার পেইসটিজ এর ১২x১২=২৪ টা বাজাবে।তো ৮ টায় কল দিলাম।
ঐ পাশ থেকে মিষ্টি একটা গলা শোনা গেল।
হ্যালো কে বলছেন?
কি বলব বুঝতেছি না।হাত-পা এর দিকে তাকালাম দেখি কাপছে।তো পেসটিজ এর কথা ভেবে সাহস করে বলেই ফেললাম ভূত এর রাজ্যের ভূত।
আপনি ভূত হোন আর জাই হোন কে আপনি কার কাছে ফোন দিছেন এবং কেন?
প্রথমের মিষ্টিগলাটা এমন তেতো হয়ে গেল নিমিষেই। আর কথা না বলে লাইন কেটে দিলাম।
সকালে একটা মেসেজ পাঠালাম।কোন রিপ্লাই আসলো না।আমি প্রতি ঘন্টায় মেসেজ পাঠাতাম।জানতে চাইতাম কি করছে আর ভালবাসার কিছু উক্তি তো আছেই।একদিন ওপার থেকে রিপ্লাই আসলো কে আপনি এত মেসেজ পাঠান কেন।সত্যি করে বলেনতো আপনি কে?
যাক ভাগ্যের লাড্ডু তাহলে ফেটেছে।তো শুরু করলাম এ জার্নি বাই প্রেম।
প্রতিদিন আমাদের কথা হতো।আমরা আমাদের সম্পর্কে সবই বলতাম।আমার আসল পরিচয় টা বাধে।আমি ইমা এর প্রতি আমার দুর্বলতা লক্ষ করলাম।সত্যি আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি।যাই হোক ইমা যতদিন আমাকে না বলবে আমিও ওকে বলব না।তখন সময়টা ছিল ২০১১ সাল।আমি রাফি কে বললাম দোস্ত ইমার সাথে একদিন দেখা করিয়ে দিবি।
রাফি বলল কথা না বলিস তোরা নিজেরাই গিয়ে দেখা কর না।না দোস্ত আগে ওকে দেখব ও আমাকে দেখে পছন্দ করবে কিনা। তাই পরদিন রাফি এর সাথে ওর ভার্সিটিতে গেলাম।সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল রাফি।হঠাত একটা মেয়ে এসে বলল আরে দোস্ত তোর বউ কই কখন থেকে খুজতেছি।রাফি আমাকে চোখের ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে দিল এটাই ইমা। এক পলকে তাকিয়ে রইলাম।এ যেন আকাশ থেকে নামানো এক অপরূপ সুন্দরী পরী।আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল রাফি।ইমা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড শাকিল।ইমা তো মুখ চেপে হাসতে শুরু করল।রাফির কানে কানে কি জানি বলে হাসতে শুরু করল।পরে রাফির কাছে শুনতে পেরেছিলাম আমাকে আবুল বলেছে।
ইমাকে আর কল দেইয়নি রাগ করে তাই রাতে ইমা আমাকে মেসেজ করল কি আজ কোন মেসেজ পাঠাওনি কেন।রিপ্লাই দিলাম মেসেজ এর আজ অনেক মন খারাপ।ইমা আমার কথা শুনে আমাকে হাসানোর জন্য তার ভার্সিটিতে আজ দেখা আবুল মার্কাছেলেটির কথা বলছে।আমার তো গা টা আরও জ্বলে উঠছে।সে তো জানে না সেই ছেলেটিই আমি।আর কথা বলতে ইচ্ছা করছে না তাই লাইন কেটে মোবাইল এর সুইচ অফ করে ভাবতে লাগলাম।মনে পড়ে গেল শাহরুখ খানের রাব নে বানা দে জুড়ি ছবির কথা।আমাকেও স্মার্ট হতে হবে।বর্তমানের কথা ভেবে তো বাবাকে বললাম আমার এইভাবে ক্লাসে যেতে ভাল লাগে না।বাবা গ্রামের মানুষ সহজ সরল ছিল তাই যা চাইতাম তাই দিত।বাইক কেনার জন্য টাকা পাঠিয়ে দিল।ভাল একটা বাইক কিনেফেললাম।কাটা-ছেড়া পেন্ট আরো কত কি।সবি ইমার জন্য।ওকে দেখাব আমার ভালবাসা কাকে বলে সংজ্ঞা সহ উদাহরন।আমার ভার্সিটিতে আমাকে নিয়ে সবার মুখে এখন আমার বিশাল পরিবর্তন এর কথা শুনা যায়।
ইমা আমাকে প্রায় বলত দেখা করতে কিন্তু সাহস হয়নি যদি সেই আবুল মনে করে আমাকে রুটির ছ্যাক দেই।ইমাকে বলতাম ভূতেরা দেখা করতে পারে না।দিন যত যায় আমাদের সম্পর্ক আরোও গভীর হতে থাকল।আজ তারিখটা ০৭-১১-২০১১।রাফি কে বললাম চল আজ আবার তোর ভার্সিটিতে যাব।আবুল যে সুপার ম্যান হতে পারে তার একটা প্রমান তো আমার দিতে হবে।যেই আবার তার ভার্সিটিতে গেলাম অন্যরা তো আমাকে আর আমার বাইক দেখে তাকিয়ে আছে কিন্তু যখন ইমার সামনে গেলাম।একটা হেব্বি মুডে দাঁড়িয়ে আছি।কিন্তু জানতাম না আবুল তো আবুলি।আবারও আমাকে দেখে হাসতে শুরু করল।আর এক মূহর্ত না।বাসায় এসে মোবাইল অফ করে শুয়ে পড়লাম।আজ ১০ তারিখ মোবাইল অন করলাম।দেখি মেসেজ এর অভাব নাই।সব গুলো পড়ে আমার তো অনেক ভাল লাগছে।সব গুলাই ছিল ইমার।রাফির কাছে ইমার কথা শুনতে গেলাম।রাফি বলল আজ ২দিন দরে দেখছি ও সবসময় আনমড়া হয়ে বসে থাকে।কারো সাথে কথা বলে না।আর কত দেরি করবি নিজের পরিচয়টা এখন দিয়ে দে।অনেক ভাবলাম যা হবার হবে এইবার বলেই দিব আমার নাম শাকিল।আর আমিই সে আবুল।আর দেরি না করে ইমাকে ফোন দিলাম।আমার লাইন কেটে দিচ্ছে আজব তো।আবার দিলাম কেটে দিচ্ছে।কিছুক্ষন পরে কল ধরল।ঐ পাশ থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম।আমার খুব খারাপ লাগছে ওর কান্না দেখে।ওর কথা আমি তোমাকে খুন করব ভূত হয়েছো না।সামনে এসো একবার তোমাকে চাপড়াইতে চাপড়াইতে ভূতগিরি ছুটাব।অনেক কষ্ট করে তার রাগ থামালাম।ওকে নিজে থেকেই বললাম চল কাল দেখা করি।ও তো আমার কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারছে না।তো ঠিক আছে আমরা কাল পার্কে দেখা করব।তুমি একটা নীল শাড়ী পরে আসবা। আর আমি কি পরব বললাম না ইমা জানতে চাওয়ার পরেও।
পরদিন একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়লাম।কারন সাদা রঙ ইমা ও আমার খুব পছন্দ।বাসা থেকে বেরিয়ে ইমাকে ফোন দিলাম ইমা বলল ও আমার আগেই এসে পরেছে।এখন ৯ টা বাজে।আজ ১১ টা গোলাপ ফুল কিনলাম ইমাকে দেওয়ার জন্য।১০.৩০ বাজে এখন পার্কে প্রবেশ করলাম।ইমাকে খুজতেছি।অবশেষে পেলাম।নীল শাড়ীতে ওকে খুব সুন্দর লাগছে।আমাকে আসতে দেখে ও মুচকি মুচকি হাসতেছে।ওর কাছে গিয়ে বললাম আপনি আমাকে দেখলে এত হাসেন কেন।
ইমা বলল হাসি আসে তাই।ইমা আরো জিজ্ঞাসা করল আপনি আজ পার্কে কেন কেউ আছে নাকি।এই বলে আরো হাসতে লাগল।কিছু বললাম না এক পলকে তাকিয়ে রইলাম।এই যে মিঃ এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড না।এই বলে ইমা মোবাইল বের করে কল দিতে লাগলো।১১.১১ বাজে  আমি ইমাকে বললাম ফুল গুলি একবার দরবেন ও দরল।
আমি ইমাকে ১১ বার I LOVE YOU বললাম।ইমা আমার কথা শুনে তো অবাক মোবাইলটা বের করে ওর কল রিসিভ করে বললাম আমাকে চিনতে পারছেন আমিই হচ্ছি সেই ভূতের রাজ্যের ভূত ।ইমার চোখ দিয়ে পানি পরতে শুরু করল।আমাকে কিছু না বলে ওঠে চলে যেতে লাগল।আমি বসে পরলাম আর ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।কিছুক্ষন পর আমার পাশে কে যেন এসে বসল।এই যে মিঃশাকিল ওরফে ভূতের রাজ্যের ভূত আমাকে চিনতে পারছেন।আমি ইমা না আমি ইমার পেত্নী।এখন তোমার রক্ত পান করব আবুল ভূত কোথাকার।এই বলে ওর মাথাটা আমার বাহুর সাথে জড়িয়ে ধরল।
আজ প্রায় ১ বছর হয়ে গেছে।আজ ১১-১২-১২ তারিখ আজ আমাদের বিয়ে।এখন রাত ১২ বাজে ওকে১২.১২ তে আবারো সেই দিনের কথা মনে করিয়ে  গুনে গুনে ১২টা গোলাপ দরিয়ে ১২ বার I LOVE YOU বললাম. ওর কান্নাবেজা চোখে অপলক দৃষ্টিতে সুখের আবেশে ও আমাকে জড়িয়ে ধরল।
তাই সবসময় বলি ইমাকে ভালবাসি তাই ভালবেসে যাই।

(আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন)

"বাঁদর"

"বাঁদর"
এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব। বেহায়া, বাঁদর। যা ভাগ, নাহলে এইখানেই পাবলিকের হাতে গণধোলাই খাওয়াব।

শুনে ৩২টা দাঁত বের করে একটা ভিলেন টাইপ হাসি দিলাম। হাসিটা বিফলে গেল। অন্তরার ভ্রুকুটি আরও বাড়ল। বিরক্ত হয়ে বলল তুই যাবি? নাকি মাইর খাবি?
মুখটা একটু ভোতা করে বললাম “দুলাভাইয়ের সাথে একটু দেখা করেই যাই?”

আমিই আজ প্রথম দেখা করতে এসেছি। প্রথম দেখায় এসে যদি দেখে তোর মতো এক বাঁদরকে সাথে এনেছি তাহলে আমাদের প্রথম দেখাই শেষ দেখা হয়ে যাবে। যা ফুট............ অন্তরার রাগি উত্তর। মুচকি হেসে চলে আসলাম। মনে মনে বললাম সুন্দরী অনেক কিছুই তুমি জাননা। এই বাঁদর যে কত বড় বাঁদর সেটা যেদিন জানবে সেদিন তোমার চেহারাটা দেখার মত হবে ............

চলুন গল্পটা বোঝার জন্য আমরা কিছু পেছনে যাই। আমি তপু। বাঁদর বিশেষণ ইতিমধ্যে অন্তরার মুখে শুনেছেন, আরও এরকম অনেক সুন্দর সুন্দর বিশেষণ আমার বন্ধুমহল অকৃপণ হাতে আমাকে দান করেছে। মিথ্যা বলব না, পড়ালেখা ছাড়া বাকি সব বিষয়েই আমি আমার বিশেষণের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছি শুধু পড়াশুনায় কিভাবে কিভাবে জানি একটু বেশিই ভালো হয়ে গেলাম, যদিয়ও এ নিয়ে আমাকে বিস্তর টিটকারি শুনতে হয়। যাই হোক, গল্পে ফিরে আসি গল্পের শুরু ফেইসবুক থেকে আমার একটা গ্রুপ ছিল, “মুখোশে ঢাকা কবি” নামে। আমি লুকিয়ে লুকিয়ে কবিতা লিখতাম। লুকিয়ে বলছি কারণ বন্ধুমহলে আমার যে ইমেজ,যদি তারা জানে আমি কবিতা লিখি তবে দিন দুপুরে আমার বলাৎকার তথা ইজ্জত-হরণ হয়ে যাবে সে গ্রুপ চালানোর জন্য আমার একটি ছদ্ম আইডি ছিল। গ্রুপটা অনেক পপুলার ছিল। গ্রুপে আমাদের ক্লাসের একটি মেয়ে নিয়মিত পোস্ট করত, আমার কবিতায় কমেন্ট করত। মেয়েটি আর কেউ নয়, অন্তরা আমাদের সেকেন্ড গার্ল। ফাস্ট কে ছিল জানেন? ঠিক ধরেছেন, সেই অধম আমিই ছিলাম।অন্তরা সারাদিন পড়ত, পণ্ডিত গ্রুপ এর সাথে গ্রুপ-স্টাডি করত। আমাকে দুচোখে দেখতে পারত না। সেকারণে গ্রুপে তার সকল কমেন্ট এর উত্তর খুব মজা করে দিতাম । এভাবেই ফেইসবুকে তার সাথে আমার পরিচয় ছদ্মনামের আড়ালে । দিন গড়িয়ে মাস বছর গেল । আমরা তখন থার্ড ইয়ারে ।ততদিনে ভার্সিটিতেও অন্তরার সাথে ভালো খাতির , খুব জ্বালাতন করতাম । সে আমাকে ফেইসবুকে সব বলত , তার কথা , ভার্সিটির কথা , বন্ধুদের কথা , এমনকি আমার কথা । আমাকে বলত “জান আমাদের ফাস্ট বয় পড়ালেখার ধার ধারেনা , সারাদিন বাঁদরামি করে । তার পরেও আমি তার নাগাল পাই না । মাথায় কি নিয়ে জন্ম নিয়েছে কে জানে।’ আমি এসব শুনতাম আর মুচকি মুচকি হাসতাম । সে অনেকবার আমার নাম্বার চেয়েছিল । আমি বলেছিলাম সময় হলে একেবারে দেখা করব । আমার পরিচয় গোপন রাখার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত সাবধানী ছিলাম । আমি চাইনি আমার কবি-সত্তা সম্পর্কে আমার বিচ্ছু বন্ধুমহল জানুক আর আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাক ।
একসময় নিজেও দুর্বল হয়ে যাচ্ছিলাম । সেই দুর্বলতা তার সামনেও প্রকাশ হতে লাগল । ক্লাসে আনমনে তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম । একসময় সে বুঝতেও পারল হয়তো । অন্তরা অনেক শান্ত আর ভালো একটা মেয়ে । তাই বিষয়টা অন্যরকমভাবে সমাধানের জন্য একদিন সে আমাকে ডেকে বলল “এই শোন , আমি না একজনকে পছন্দ করি । ফেইসবুকে আমাদের পরিচয় ’’।
আমি হেসে বললাম ‘দেখেছিস’ ।
না ।
না দেখেই প্রেম ?
হম ।
যদি দেখিস পঞ্চাশ বছরের বুড়া ?
তাতে তোর কোন সমস্যা ?
না , আমার আর কি সমস্যা । বেস্ট অফ লাক......... আমি চলে আসলাম । সে ভাবল আমি হয়তো মনে কষ্ট পেয়েছি । আমি তখন হাসতে হাসতে পাগল হওয়ার দশা । আমার প্রেমে পড়ে আমাকেই রিফিউজ । যাই হোক , সেদিন রাতে সে মোবাইলে কথা বলার জন্য চাপাচাপি শুরু করল চেট এ । আমি বললাম ঠিক আছে , কাল দেখা করব । একদম সামনা সামনি দেখা, কথা সব হবে । কাল বিকাল চারটায় , টি এস সি থাকবে । আমি আসব ।
চিনব কিভাবে তোমায় ?
আমায় চিনতে হবে না । আমি তোমায় চিনি।
তার পরেও ।

ঠিক আছে , আমি কালো স্যুট পড়া থাকব আর তোমার ফুল তোলা নীল রুমালটা তোমায় ফেরত দিব , গত সপ্তাহে যা হারিয়ে গিয়েছিল । তা দেখে চিনে নিও ।

মানে ? আমার রুমাল তুমি কিভাবে পেলে ? সত্যি করে বল কে তুমি ?

“বললাম তো দেখবে কাল । এত উতলা হউ কেন ? আমি যাই , ঘুম পেয়েছে । বাই ’’ এই বলে অন্তরাকে হতভম্ব অবস্থায় রেখে ফেইসবুক থেকে বেরিয়ে আসলাম । পরেরদিন ক্লাসে দেখি অন্তরা শুধু ছটফট করছে । আমি পিছনে বসে শুধু মজা নিচ্ছিলাম । দুপুরের দিকে সে বাসায় চলে গেল । আমি বাসায় এসে গোসল করে ভালভাবে তৈরি হলাম । তারপর ময়লা একটা টিশার্ট আর বিবর্ণ এক জিন্স পরে সাড়ে তিনটার সময় বাইক নিয়ে অন্তরার বাসার কাছের একটা গলিতে গিয়ে দাঁড়ালাম । অল্পক্ষণ পরে অন্তরা এসে রাস্তায় দাঁড়াল । নীল শাড়ী পরে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছিল । বাইকটা টান মেরে অন্তরার সামনে নিয়ে ব্রেক করে দাঁড়ালাম ।
আরে অন্তরা , তুই ? কোথায় যাবি ?
টি এস সি ।
তাই নাকি ? আমি ও সেখানেই যাব । আয় ।
না থাক , আমি রিক্সা নিয়ে যাব ।
আয় তো , এত প্যাঁচাল পাড়িস না ।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্তরা বাইকে উঠে বসলো । যেতে যেতে বললাম “ কিরে । এত মাঞ্জা মারতে তো তোকে জীবনেও দেখলাম না । কাহিনী কি ?
প্রথমবার দেখা করতে যাচ্ছি ।
তাই?
হম ।
ভালো , ভালো ।
কিছুক্ষণের মাঝে টি এস সি এসে বসলাম দুজন । শুরু করলাম আমার শয়তানি । অন্তরা এমনিতেই টেনশনে ছিল । তার মাঝে আমার খোঁচাখোঁচিতে চরম বিরক্ত হয়ে রেগে গেল ।
এই , তুই যাবি না ?
না , দুলাভাইকে দেখে যাই। ২৫ বছরের ছোকরা নাকি ৪৫ বছরের বুড়া ।
যা ভাগ । সময় হয়ে গেছে । এসে পরবে এখন ।
দোস্ত , একটা কথা বলি ?
কি ?
যদি ৪৫ বছরের বুড়া হয় তো সেকেন্ড অপশন হিসাবে আমাকে রাখিস ?
এখন ফাজলামি করার মুড নাই । তুই যা দোস্ত , প্লিজ ।
শুধু বল রাজি , তাহলেই আমি ভাগব ।
এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব । বাঁদর । যা ভাগ , নাহলে এইখানেই পাবলিকের হাতে গণধোলাই খাওয়াব ।

শুনে ৩২টা দাঁত বের করে একটা ভিলেন টাইপ হাসি দিলাম । হাসিটা বিফলে গেল । অন্তরার ভ্রুকুটি আরও বাড়ল । বিরক্ত হয়ে বলল তুই যাবি ? নাকি মাইর খাবি ?
মুখটা একটু ভোতা করে বললাম “দুলাভাইয়ের সাথে একটু দেখা করেই যাই ?”

আমিই আজ প্রথম দেখা করতে এসেছি । প্রথম দেখায় এসে যদি দেখে তোর মতো এক বাঁদরকে সাথে এনেছি তাহলে আমাদের প্রথম দেখাই শেষ দেখা হয়ে যাবে । যা ফুট............

বাইক নিয়ে চলে আসলাম কাছেই আপার বাসায় । এসে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করলাম । স্যুট পরে আপার কার নিয়ে গেলাম টি এস সি ।

কিরে ? তোর বুড়া আসেনি ?

চমকে গিয়ে অন্তরা আমার দিকে তাকালো । আমি তখন কালো স্যুট পড়া , কার থেকে নেমে অন্তরার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম । “ এখনো ভেবে দেখ ,সেকেন্ড অপশন হিসাবে আমি কিন্তু খারাপ না । কি বলিস ? ’’

চোখে সন্দেহ নিয়ে অন্তরা জিজ্ঞেস করল “ স্যুট পরেছিস কেন ?”

এইটা তোকে দেয়ার জন্য----- বলে আমি রুমালটা বের করলাম ।

অন্তরার মুখে তখন কোন কথা নেই । অনেক্ষন ডাগর ডাগর চোখ মেলে বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে ছিল । তারপর হটাত মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নিচু করল ।

আমি জিগ্যেস করলাম “ কি , প্রথম অপশন নাকি দ্বিতীয় অপশন ?

আস্তে করে মাথা তোলে আমার চোখের দিকে তাকাল অন্তরা । তারপর তার বিখ্যাত হাসিটি দিয়ে বলল............বাঁদর .........দ্বিতীয় অপশন............খুশি ?

লিখেছেন-দেবাশীষ মজুমদার সাগর

গল্প-২

প্রথম কথোকপথন....

-: ঐ মেয়ে, তোমার নাম কি ?
-: আমার নাম দিয়ে আপনার
কি কাম ?
(ঐ ছেরি, এত কস ক্যান ?
যেটা জিগাইছি সেটার উত্তর
দে)
-: না মানে..... এমনি !
-: না মানে..... এমনি ?
এমনি মানে কি ? আমি প্রায়
সময় খেয়াল
করি আমি ছাদে উঠলে আপনি আমার
দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন !
আপনার জ্বালায়
আমি ছাদে পর্যন্ত
উঠতে পারি না । আপনাদের মত
ছেলেদের আমি খুব ভাল করেই
চিনি !
প্রথম দিন বলবেন- হাই !
দ্বিতীয় দিন-
নাম্বারটা চাই !
তৃতীয় দিন- ভালবাসি তোমায় !
যত্তসব !
(ও খোদা ! এ মাইয়্যা কয় কি ?
গত ছয় মাস ধরে নাকের আগায়
আগায় ঘুরতেছে । কোনদিন
তো কথাও বলি নাই ! আজ প্রথম
বারের মত কথা বলতে গিয়েই
এই ব্যবহার ! ধুর, কি দরকার
ছিল
গায়ে পড়ে গিয়ে কথা বলার ?
ভাগ্যটাই খারাপ আমার ! এর
সামনে আর বেশিক্ষণ
থাকা যাবে নাহ ! মুখ
লুকিয়ে কিভাবে পালিয়ে বাঁচা যায়
সেটা ভাবছি, এমন সময়
সে বলে উঠল-)
-: By the way, আমার নাম
পিয়া ! আপনার নাম কি ?
(কোন সুন্দরী তার নাম
বললে খানিকক্ষণ তার নামের
প্রশংসা করতে হয়- এটাই
নিয়ম । কিন্তু এ
মাইয়া প্রথমেই যে বাঁশ দিল,
তাতে প্রশংসা করার আর মুড়
নাই !)
-: নীল । আমার নাম নীল ।
-: হি হি হি ! আমার এক
বান্ধবীর নাম নীলা !
(আশ্চার্য ! তার
বান্ধবী একটা মেয়ে আর
একটা মেয়ের নাম নীলা হতেই
পারে । এখানে হাসার
কি হল ?)
-: না মানে... আমার নাম নিলয়
। নিলয় থেকে সংক্ষিপ্তরূপ
নীল !
-: নিলয়.....? হা হা হা ! আমার
এক কাজিন ময়মনসিংহ গার্লস
ক্যাডেট কলেজে পড়ে । তার
নাম নিলয় !! আপনার
তো দেখি পুরাই মেয়েদের
নাম !
(নিলয় মেয়েদের নাম ??
জীবনে এ কথা প্রথম বারের মত
কেউ আমাকে বলল ! এ
মেয়েকে এখন মজায় পাইছে !
এখন আমি যদি বলি আমার নাম
আলবার্ট আইনস্টাইন,
আমি ড্যাম শিউর যে এ
মেয়ে তখন বলে উঠবে-
হো হো হো ! আমার ছোট খালার
নাম তো আলবার্ট আইনস্টাইন !
যাগ্গে ! সে রিক্স আর নিলাম
না । হাসুক । যত খুশি হাসুক ।
তাতে আমার কি আসে যায় ?)
:- ও আচ্ছা ! কি আর করব বল ?
আম্মায় আব্বায় রাখছে । তখন
ছোট ছিলাম তো, তাই
বুঝতে পারি নি এটা ছেলেদের
নাকি মেয়েদের নাম !!
:- হুম । সেটাই ! আচ্ছা,
আপনি যদি আপনার নাম রাখার
সুযোগ পেতেন
তবে কি রাখতেন ?
(এ মেয়ে তো দেখি পিতির
পিতির অনেক কথা কয় !
তাইলে প্রথমে এমন বাঁশ দিল
ক্যান ?)
-: উইলিয়াম শেক্সপিয়ার !
-: হা হা হা ! খারাপ হত না ।
তবে নীল নামটাও খারাপ না ।
মেয়েরা সাধারণ ছেলেদের
নামের প্রশংসা করে না ।
কিন্তু এ মেয়ে তো দেখি তাও
করে ফেলল । এখন
যদি তারে একটু পাম্প না দিই
তবে সেটা একটু খারাপ দেখায়)
-: তোমার নামটাও খারাপ না ।
পিয়া ! অনেক সুন্দর একটা নাম
। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন
আমাদের
সাথে পিয়া নামে একটা মেয়ে ছিল
। এত্ত সুন্দর ! বলার বাইরে !
আমার জীবনে এত সুন্দর
মেয়ে আর
দ্বিতীয়টি দেখি নি ! মিস
ইউনিভার্সও তার কাছে হার
মানবে ! কিন্তু সমস্যা হল-
মেয়েটা হিন্দু ছিল !
পিয়া রানী পাল !
নইলে নির্ঘাত তার
সাথে প্রেমে করতাম !
(মেয়েরা নাকি কখনোই তার
সামনে অন্য মেয়ের
প্রশংসা সহ্য করতে পারে না ।
পরীক্ষামূলক বাঁশ)
-: অনেক সুন্দর ছিল বুঝি ?
-: হুম । অনেক.....
(মেয়ের মন খারাপ
হয়ে গেছে । যাক, ডোজ
তাহলে জায়গামত পড়ছে)
-: তুমিও অবশ্য কম সুন্দর না !
(পাম্প ! পাম্প !! পাম্প !!!)
-: থ্যাংকস ।
(মেয়ের মুখে হাসি ফুটছে ।
আরেকবার বাঁশ দিব
কিনা ভাবতেছি । না থাক ।
বেশি দিলে আবার মাইন্ড
খাইতে পারে ! মেয়েও চুপ ।
আমিও চুপ । কারো মুখে কোন
কথা নাই । একবার ভাবলাম
জিজ্ঞাসা করি- প্রথমে এমন
করলে কেন ? পরে ভাবলাম-
থাক । কি দরকার ? সব কারণ
জানতে হয় না । মেয়েই আবার
শুরু করল-)
-: আপনি এখন নিয়মিত
ছাদে আসেন না কেন ?
(হায় আল্লাহ ! কয় কি এ
মাইয়্যা ? আমি যে এখন
রেগুলার
ছাদে আসি না সেটা তো আমি নিজেও
জানি না ! এ মাইয়া এসব
খেয়াল করে নাকি ?)
-: কই আসি তো !
-: না । আগের মত আসেন না ।
আগে প্রতিদিন
বিকেলে ছাদে উঠলে আপনাকে দেখতাম
। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ
দেখি নাহ !
-: ও আচ্ছা !
আসলে আগে বিকেলে বাসায়
থাকতাম । এখন থাকি না ।
জিমে যাই ।
-: জিম ? আপনি ? হা হা হা !
এমনিতেই তো স্বাস্থ্যমন্ত্রী !
জিমে গিয়ে কি করবেন ?
(এ মেয়ে এত হাসে ক্যান ?
হাসুনি গোটা খাইছে নাকি ?
সেই তখন থেকে হাসতেছে ।
যত্তসব)
-: মাইন্ড করলেন নাকি ?
-: না তো ! মাইন্ড অনেক
দামি জিনিস । এত
দামি জিনিস আমি খাই না ।
হজম হয় না !
(আমার ফেবারেট ডায়ালগ !)
-: ওহ ! সেটাই ভাল ! আপনার
ফেসবুক আইডিটা দেন তো ?
(ওরে বাবা ! ডিরেক্ট একশন !
জটিল মেয়ে)
-: আমি তো ফেসবুক ইউজ
করি না !
-: কি বলেন ? আপনি ফেসবুক
ইউজ করেন না ? কোন যুগে বাস
করেন আপনি ?
(মেয়ে,
তুমি কি নিজেকে ইসমাট ভাব ?
তাইলে মনে রাইখো-
আমি হইলাম উভার ইসমাট !)
-: আসলে ফেসবুক খুব কমন
হয়ে গেছে ইদানীং ! এত কমন
জিনিস ইউজ করতে ভাল
লাগে না আমার । আমি সব সময়
ইউনিক টাইপ জিনিস খুঁজি ।
আমি টুইটার ইউজ করি !
(পার্ট লইছি ! পুরাই পার্ট!!)
-: নাহ ! আসলে টুইটার অনেক
হার্ড ! কিছুই বুঝি না ।
-: হুম সেটাই ! সবাই টুইটার
ইউজ করতে পারে না । টুইট
করার জন্য
এক্সটা কোয়ালিফিকেশনের
দরকার হয় ! সবার
সেটা থাকে না !!
(সুন্দরী,
তুমি প্রথমে আমাকে বাঁশ
দিছিলা ! বাঁশ কিন্তু আমিও
দিতে জানি- মনে রাখবা)
-: কি ভাবে টুইটার ইউজ
করতে হয়
সেটা আমাকে শেখাবেন ?
-: আমি তো ফ্রি কোন কিছু
কাউকে শিখাই না ! এর
জন্যে তো চার্জ দিতে হবে !!
-: আপনি এত হিংসুক কেন ?
-: আমি হিংসুক না ! আমি হলাম
বাস্তববাদী ।
তুমি চারপাশে একটু
তাকিয়ে দেখ । আজকাল কি কোন
কিছু ফ্রি আছে ?
-: হয়েছে । হয়েছে । থাক । আর
লেকচার দিতে হবে না । যান,
দেবনে.... শিখাবেন তো ?
-: হুম । শিখাবো !
(এমন সময়
ছাদে একটা পিচ্ছি এল ।
কি জানি বলল ওকে)
-: আম্মায় ডাকছে । এখন যাই ।
পরে কথা হবে ।
-: ঠিক আছে । যাও !
-: ভাল থাকবেন ।
-: হুম । তুমিও ।
-: বাই ।
-: বিদায় !
(মেয়ে,
যে কথাটি তোমাকে বলা হয়
নি- পরে আর কথা বলার সুযোগ
তুমি আর পাবে না !
বাসা চেইন্জ্ঞ করা হয়েছে ।
জিনিসপত্র ট্রান্সফার চলছে ।
কাল বিকেল কিংবা পরশু
সকালে চলে যাব । জীবনে হয়ত
আর কোনদিন দেখাও হবে না ।
কোন দিন বলাও হবে না-
মেয়ে, তোমাকে ভেবে অনেক
কবিতা লিখেছিলাম ।
দেখেছিলাম অনেক স্বপ্নও !
থাক । সব কথা সব সময়
বলতে হয় না । শুধু বলব-
ভালো থেকো তুমি ।)


লিখেছেন -Forhad Ahmed Niloy