আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১২

গল্প-২

প্রথম কথোকপথন....

-: ঐ মেয়ে, তোমার নাম কি ?
-: আমার নাম দিয়ে আপনার
কি কাম ?
(ঐ ছেরি, এত কস ক্যান ?
যেটা জিগাইছি সেটার উত্তর
দে)
-: না মানে..... এমনি !
-: না মানে..... এমনি ?
এমনি মানে কি ? আমি প্রায়
সময় খেয়াল
করি আমি ছাদে উঠলে আপনি আমার
দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন !
আপনার জ্বালায়
আমি ছাদে পর্যন্ত
উঠতে পারি না । আপনাদের মত
ছেলেদের আমি খুব ভাল করেই
চিনি !
প্রথম দিন বলবেন- হাই !
দ্বিতীয় দিন-
নাম্বারটা চাই !
তৃতীয় দিন- ভালবাসি তোমায় !
যত্তসব !
(ও খোদা ! এ মাইয়্যা কয় কি ?
গত ছয় মাস ধরে নাকের আগায়
আগায় ঘুরতেছে । কোনদিন
তো কথাও বলি নাই ! আজ প্রথম
বারের মত কথা বলতে গিয়েই
এই ব্যবহার ! ধুর, কি দরকার
ছিল
গায়ে পড়ে গিয়ে কথা বলার ?
ভাগ্যটাই খারাপ আমার ! এর
সামনে আর বেশিক্ষণ
থাকা যাবে নাহ ! মুখ
লুকিয়ে কিভাবে পালিয়ে বাঁচা যায়
সেটা ভাবছি, এমন সময়
সে বলে উঠল-)
-: By the way, আমার নাম
পিয়া ! আপনার নাম কি ?
(কোন সুন্দরী তার নাম
বললে খানিকক্ষণ তার নামের
প্রশংসা করতে হয়- এটাই
নিয়ম । কিন্তু এ
মাইয়া প্রথমেই যে বাঁশ দিল,
তাতে প্রশংসা করার আর মুড়
নাই !)
-: নীল । আমার নাম নীল ।
-: হি হি হি ! আমার এক
বান্ধবীর নাম নীলা !
(আশ্চার্য ! তার
বান্ধবী একটা মেয়ে আর
একটা মেয়ের নাম নীলা হতেই
পারে । এখানে হাসার
কি হল ?)
-: না মানে... আমার নাম নিলয়
। নিলয় থেকে সংক্ষিপ্তরূপ
নীল !
-: নিলয়.....? হা হা হা ! আমার
এক কাজিন ময়মনসিংহ গার্লস
ক্যাডেট কলেজে পড়ে । তার
নাম নিলয় !! আপনার
তো দেখি পুরাই মেয়েদের
নাম !
(নিলয় মেয়েদের নাম ??
জীবনে এ কথা প্রথম বারের মত
কেউ আমাকে বলল ! এ
মেয়েকে এখন মজায় পাইছে !
এখন আমি যদি বলি আমার নাম
আলবার্ট আইনস্টাইন,
আমি ড্যাম শিউর যে এ
মেয়ে তখন বলে উঠবে-
হো হো হো ! আমার ছোট খালার
নাম তো আলবার্ট আইনস্টাইন !
যাগ্গে ! সে রিক্স আর নিলাম
না । হাসুক । যত খুশি হাসুক ।
তাতে আমার কি আসে যায় ?)
:- ও আচ্ছা ! কি আর করব বল ?
আম্মায় আব্বায় রাখছে । তখন
ছোট ছিলাম তো, তাই
বুঝতে পারি নি এটা ছেলেদের
নাকি মেয়েদের নাম !!
:- হুম । সেটাই ! আচ্ছা,
আপনি যদি আপনার নাম রাখার
সুযোগ পেতেন
তবে কি রাখতেন ?
(এ মেয়ে তো দেখি পিতির
পিতির অনেক কথা কয় !
তাইলে প্রথমে এমন বাঁশ দিল
ক্যান ?)
-: উইলিয়াম শেক্সপিয়ার !
-: হা হা হা ! খারাপ হত না ।
তবে নীল নামটাও খারাপ না ।
মেয়েরা সাধারণ ছেলেদের
নামের প্রশংসা করে না ।
কিন্তু এ মেয়ে তো দেখি তাও
করে ফেলল । এখন
যদি তারে একটু পাম্প না দিই
তবে সেটা একটু খারাপ দেখায়)
-: তোমার নামটাও খারাপ না ।
পিয়া ! অনেক সুন্দর একটা নাম
। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন
আমাদের
সাথে পিয়া নামে একটা মেয়ে ছিল
। এত্ত সুন্দর ! বলার বাইরে !
আমার জীবনে এত সুন্দর
মেয়ে আর
দ্বিতীয়টি দেখি নি ! মিস
ইউনিভার্সও তার কাছে হার
মানবে ! কিন্তু সমস্যা হল-
মেয়েটা হিন্দু ছিল !
পিয়া রানী পাল !
নইলে নির্ঘাত তার
সাথে প্রেমে করতাম !
(মেয়েরা নাকি কখনোই তার
সামনে অন্য মেয়ের
প্রশংসা সহ্য করতে পারে না ।
পরীক্ষামূলক বাঁশ)
-: অনেক সুন্দর ছিল বুঝি ?
-: হুম । অনেক.....
(মেয়ের মন খারাপ
হয়ে গেছে । যাক, ডোজ
তাহলে জায়গামত পড়ছে)
-: তুমিও অবশ্য কম সুন্দর না !
(পাম্প ! পাম্প !! পাম্প !!!)
-: থ্যাংকস ।
(মেয়ের মুখে হাসি ফুটছে ।
আরেকবার বাঁশ দিব
কিনা ভাবতেছি । না থাক ।
বেশি দিলে আবার মাইন্ড
খাইতে পারে ! মেয়েও চুপ ।
আমিও চুপ । কারো মুখে কোন
কথা নাই । একবার ভাবলাম
জিজ্ঞাসা করি- প্রথমে এমন
করলে কেন ? পরে ভাবলাম-
থাক । কি দরকার ? সব কারণ
জানতে হয় না । মেয়েই আবার
শুরু করল-)
-: আপনি এখন নিয়মিত
ছাদে আসেন না কেন ?
(হায় আল্লাহ ! কয় কি এ
মাইয়্যা ? আমি যে এখন
রেগুলার
ছাদে আসি না সেটা তো আমি নিজেও
জানি না ! এ মাইয়া এসব
খেয়াল করে নাকি ?)
-: কই আসি তো !
-: না । আগের মত আসেন না ।
আগে প্রতিদিন
বিকেলে ছাদে উঠলে আপনাকে দেখতাম
। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ
দেখি নাহ !
-: ও আচ্ছা !
আসলে আগে বিকেলে বাসায়
থাকতাম । এখন থাকি না ।
জিমে যাই ।
-: জিম ? আপনি ? হা হা হা !
এমনিতেই তো স্বাস্থ্যমন্ত্রী !
জিমে গিয়ে কি করবেন ?
(এ মেয়ে এত হাসে ক্যান ?
হাসুনি গোটা খাইছে নাকি ?
সেই তখন থেকে হাসতেছে ।
যত্তসব)
-: মাইন্ড করলেন নাকি ?
-: না তো ! মাইন্ড অনেক
দামি জিনিস । এত
দামি জিনিস আমি খাই না ।
হজম হয় না !
(আমার ফেবারেট ডায়ালগ !)
-: ওহ ! সেটাই ভাল ! আপনার
ফেসবুক আইডিটা দেন তো ?
(ওরে বাবা ! ডিরেক্ট একশন !
জটিল মেয়ে)
-: আমি তো ফেসবুক ইউজ
করি না !
-: কি বলেন ? আপনি ফেসবুক
ইউজ করেন না ? কোন যুগে বাস
করেন আপনি ?
(মেয়ে,
তুমি কি নিজেকে ইসমাট ভাব ?
তাইলে মনে রাইখো-
আমি হইলাম উভার ইসমাট !)
-: আসলে ফেসবুক খুব কমন
হয়ে গেছে ইদানীং ! এত কমন
জিনিস ইউজ করতে ভাল
লাগে না আমার । আমি সব সময়
ইউনিক টাইপ জিনিস খুঁজি ।
আমি টুইটার ইউজ করি !
(পার্ট লইছি ! পুরাই পার্ট!!)
-: নাহ ! আসলে টুইটার অনেক
হার্ড ! কিছুই বুঝি না ।
-: হুম সেটাই ! সবাই টুইটার
ইউজ করতে পারে না । টুইট
করার জন্য
এক্সটা কোয়ালিফিকেশনের
দরকার হয় ! সবার
সেটা থাকে না !!
(সুন্দরী,
তুমি প্রথমে আমাকে বাঁশ
দিছিলা ! বাঁশ কিন্তু আমিও
দিতে জানি- মনে রাখবা)
-: কি ভাবে টুইটার ইউজ
করতে হয়
সেটা আমাকে শেখাবেন ?
-: আমি তো ফ্রি কোন কিছু
কাউকে শিখাই না ! এর
জন্যে তো চার্জ দিতে হবে !!
-: আপনি এত হিংসুক কেন ?
-: আমি হিংসুক না ! আমি হলাম
বাস্তববাদী ।
তুমি চারপাশে একটু
তাকিয়ে দেখ । আজকাল কি কোন
কিছু ফ্রি আছে ?
-: হয়েছে । হয়েছে । থাক । আর
লেকচার দিতে হবে না । যান,
দেবনে.... শিখাবেন তো ?
-: হুম । শিখাবো !
(এমন সময়
ছাদে একটা পিচ্ছি এল ।
কি জানি বলল ওকে)
-: আম্মায় ডাকছে । এখন যাই ।
পরে কথা হবে ।
-: ঠিক আছে । যাও !
-: ভাল থাকবেন ।
-: হুম । তুমিও ।
-: বাই ।
-: বিদায় !
(মেয়ে,
যে কথাটি তোমাকে বলা হয়
নি- পরে আর কথা বলার সুযোগ
তুমি আর পাবে না !
বাসা চেইন্জ্ঞ করা হয়েছে ।
জিনিসপত্র ট্রান্সফার চলছে ।
কাল বিকেল কিংবা পরশু
সকালে চলে যাব । জীবনে হয়ত
আর কোনদিন দেখাও হবে না ।
কোন দিন বলাও হবে না-
মেয়ে, তোমাকে ভেবে অনেক
কবিতা লিখেছিলাম ।
দেখেছিলাম অনেক স্বপ্নও !
থাক । সব কথা সব সময়
বলতে হয় না । শুধু বলব-
ভালো থেকো তুমি ।)


লিখেছেন -Forhad Ahmed Niloy