আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

আবেগের গল্প

 ⓔলিখা: সোহাগ সকাল ⓝ

গতবার ভালবাসা দিবসের শুরুতেই "I love u" লিখে মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছিলাম পছন্দের মানুষটার মোবাইল নাম্বারে। সে এক অসাধারণ মূহুর্ত। ফিরতি মেসেজের অপেক্ষায় ছিলাম অসম্ভব আগ্রহ নিয়ে। রাত পেড়িয়ে সকাল হয়, সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়, বিকেল হয় এবং পূণরায় রাত হয়, ফিরতি মেসেজ আর আসেনা। এদিকে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে তো আমার অবস্থা ক্যাড়াব্যাড়া।­ এক সপ্তাহ অপেক্ষা করেও যখন ফিরতি মেসেজের নাম-গন্ধ কিছুই পেলাম না, তখন রাগে, দুঃখে, কষ্টে আর লজ্জার মাথা খেয়ে স্ব-শরীরে উপস্থিত হলাম প্রিয় মানুষটার বাসায়। তাঁর বাবা আমাকে প্রায় এক ঘন্টা সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে অবশেষে বললেন,
- তুমিই তাহলে সেই বাঁদরটা?
- ইয়ে বাঁদর মানে?
- বাঁদর মানে হারামজাদা!
- চাচা কী বলছেন এসব! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না!
- এখনই যদি সবকিছু বুঝে ফেল, পুলিশের কাছে গিয়ে কী বুঝবে?
- চাচা আপনি কী আমাকে পুলিশে দিতে চাচ্ছেন?
- অবশ্যই।
- আমার অপরাধ?
- তুমি রাত দুপুরে আমার মেয়েকে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করো।

একথা শুনে তো আমি তব্দা খেয়ে গেলাম! ওর মোবাইলের মেসেজ এরা জানবে কিভাবে! যাইহোক, আমাকে পুলিশে দেয়া হলোনা। তবে যা করা হলো তা পুলিশে দেয়ার চাইতে কোনো অংশেই কম নয়। আমার বাসায় বিচার দেবার ভয় দেখিয়ে পাঁচ মিনিট কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখলো। আমি যখন লজ্জা আর কান্না মাখা মুখ নিয়ে, স্ট্যাচুর মতো কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি, তখন খিলখিল করে হাসির শব্দ পেলাম আশেপাশে কোথাও। এক পলক ডানে তাকিয়ে দেখি, যাকে উদ্দেশ্য করে মেসেজ পাঠিয়েছিলাম সেই পাষন্ড গাধীর বাচ্চাটা মজা লুটছে আর হাসছে। আমি বুঝে গেলাম, এই সবই গাধীটার চক্রান্ত। তারপর থেকে এই ঘোড়ার ডিমের ভালোবাসার কথা মুখেও আনিনা। মানুষ জন্মায় একা, মরেও একা। মাঝখানে আরেকজনকে টেনে এনে ঝামেলা বাড়িয়ে কী লাভ? এই এক বছর আমি সবাইকে বুঝাতে চেয়েছি, মেয়েদের গুনার টাইম নাই আমার। মেয়ে মানুষের অপর নাম আবর্জনা। যাইহোক, আজকে আবার সেই বেদনাময় দিনটা হাজির! ঘোড়ার ডিমের ভালোবাসা দিবস! সবচাইতে বিরক্তিকর কথা হচ্ছে, গতবার এই দিনে যেই গাধীটার নাম্বারে I love u লিখে পাঠিয়েছিলাম, সেই নাম্বার থেকে একটু আগে একটা মেসেজ আসছে- "আমি তোমাকে অবহেলা করতে করতেই কখন যেন ভালোবেসে ফেলেছি। জানো, সেদিনের কথা মনে করে আমি কতদিন কেঁদেছি? এখনও কাঁদছি। যদি পারো ক্ষমা করো, । love u"
মেসেজ দেখে রাগে ফুসতে ফুসতে আস্তে করে বললাম,
"গাধীর বাচ্চা গাধী! তোকে ভালোবাসি বলেই তুই ছাড় পেয়ে গেলি!"

(একটি কাল্পনিক স্ট্যাটাস। সবাইকে "I love u")



--------------------------------------------------------------------------------------------------------------


"হয়ত আছ"
 লিখেছেনঃ joya kundu

কোথায় এখন? জানি অনেক দুরে, হয়ত মনসাগরের ওপারেতে ! হয়ত দিগন্ত বিস্তৃতির শেষ সীমানায় , হয়ত অপরিচিতের ভিড়ে হাঁটছ এখন! কিংবা শেষ বিকেলের রোদে পুড়ছ এখন! কোথায় তুমি? জানি বহুদুরে! কিন্তু দুরত্বটুকু শুধু পথেরই! তোমায় যে রেখেছি আমার মাঝেই! চোখের কোনের কাজলটুকু তোমার স্বপ্নে জড়ানো! হয়ত এটা আবেগের ব্যস্ততা, অনুভুতির বাড়াবাড়ি! কিন্তু তবুও মনের অগোচরেই মিশে আছ।
কত রাত্রির নির্ঘুম প্রহর, কত সন্ধ্যার পবিত্র ধুপ, কত শ্রাবণের একাকী দুপুর, বৃষ্টির টাপুর-টুপুর, সবকিছুতেই মিশিয়ে ফেলেছি তোমায়। কোথায় তুমি? দেখ, কত কাছে আমার! মনের অজান্তেই পড়ে থাকা গোলাপটায় কবে যে একটু একটু করে লাল রঙ ধরল - টেরই পাইনি। যেন পদ্মপাতায় পড়া হেমন্তের প্রথম শিশির--একও হল না-আবার আলাদাও নয়!
মনের চিলেকোঠায় উঁকি দেয়া গোধূলির প্রথম আলোর মত কিছু মৃদু অনুভুতি! অনেক পবিত্র, চির অক্ষয়, চির ধ্রুব। কোথায় এখন? হয়ত অজানার পথে। তবুও জানি, নির্ঘুম রাতগুলোর বিনিদ্র চোখ দুটি তে তোমারই ছবি আছে মিশে! হয়ত বেলা শেষের আলসেমিতে উড়তে থাকা খোলা চুলে তমার স্পর্শটুকু মিশে আছে! কিংবা অধর কোণের এক চিলতে হাসি তোমার বোকামির টুকরো গল্পের নামে আঁকা! হয়ত রাতের পুজোর ধূপে তোমার জন্য প্রার্থনার এক পবিত্র গন্ধ মিশে থাকে!
জানি তুমি অনেক দুরে। আমার নুপুরের শব্দও তোমার কানে পৌছবেনা। তবুও তোমার পদধ্বনি ঠিকই আমি চিনে নেব! হুমম, হয়ত এটা আবেগের ব্যস্ততা, কিংবা বাড়াবাড়ি! কি করব? অনুভূতিগুলো যে আজ বাঁধনছাড়া!
এখন শুধু প্রহর গোনা প্র্তীক্ষার! হয়ত আগামী বর্ষা, কিংবা তার পরের শ্রাবণ, অথবা তার পরের প্রথম বৃষ্টি--জানি না কবে, হয়ত এরও পরের কোন এক বিকেলে, যখন খানিক আগের থেমে যাওয়া বৃষ্টির গন্ধ বাতাসে মিশে থাকবে- হয়ত সেই প্রহরে তুমি আসবে!! তখন আমি ঠিকই চিনে নেব তোমার পদধ্বনিটুকু! কোথায় তুমি? জানি, হয়ত অনেক দূরে। রাতের আঁধার যখন নামছে জানালায়, তখন শ্রান্ত চোখে মন অপূর্ণ স্বপ্ন এঁকে যায়!!
এখন প্রহর গোনা শুধুই প্র্তীক্ষার,অপূর্ণটুকু পূরণ করার--
এখন প্রহর গোনা শুধুই প্র্তীক্ষার!!!!!.......................................