আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৩

খুনী

খুনী
লিখেছেনঃ akjn ami

সকাল থেকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে । আমি বসে আছি আমার রুমের জানালার ধারে ।আমি বৃষ্টি দেখছি।এই কয়দিনের প্রচন্ড গরম এক পশলা বৃষ্টিতে শান্ত ।খুব ভিজতে ইচ্ছা করছে ।কিন্তু এ দুপুরে ছাদে গিয়ে ভেজা অসম্ভব ।শত চক্ষু গিলে খাবে ।পুরুষদের চেয়ে বেহায়া দুনিয়াতে আর কেউ আছে বলে আমার জানা নেই । সারাক্ষণ খালি ছোক ছোক করে ।বাসে উঠলে অদৃশ্য ধাক্কায় মেয়েদের গায়ে হামলে পড়ে,রাস্তায় বেরোলে চোখ দিয়ে সারা শরীর চাটে । ব্যাতিক্রম একমাত্র আকাশ ।আকাশের মনটা আকাশের মত্ই বিশাল ।আকাশের বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে মরতেও আমার ভয় নেই । জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম বৃষ্টি ছোঁব বলে ।ঠিক ছুঁতে পেলাম না।আকাশকে খুব মনে পড়ছে । ও এখন সিলেটে অফিসের কাজে । কি মনে করে হঠাত্ ওর রুমে গেলাম । ঠিক আগের মতোই আছে রুমটা ।ঠিক আগের মতোই অগোছালো ।জুতা জোড়া পড়ে আছে ঠিক দরজার সামনে । অগোছালো স্বভাবের এই ছেলেটা ঘর দোর সব এলোমেলো করে রাখত । আর বলত ,মায়া, এলোমেলো থাকার মধ্যেই জীবনের সৌন্দর্য ।আমি ইচ্ছে করে রুমটা গুছাই না ।অগোছালো থাকলে মনে হয় ও বুঝি আমার খুব কাছেই আছে ।
আগে ভীষণ অভিমান হতো ওর উপর । এতো পাগল কেন ও ? আর দশটা মানুষের মতো কেন নয় ?কেন এতো ভালোবাসে আমাকে ? মা বাবা মারা যাওয়ার পর ওদের বাসাতেই বেড়ে উঠেছি । পড়ালেখা শিখেছি এখন চাকরিও করছি । ও সব সময় আমার পাশে ছিল । আমাকে কখনো পর ভাবেনি । বাবা মার অমতে আমাকে বিয়ে করেছে ।
আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর ঠিক আগের দিন আমার অফিসিয়াল কাজে চট্রগ্রাম যেতে হলো ।পুরোটা দিন চলে গেলেও ও কোন ফোন দেয়নি । চিটাগাং আমাকে থাকতে দেয়া হয়েছে এক ডাক বাংলোতে । বারোটা বাজার ঠিক ১০ মিনিট আগে দরজাটা কেউ ভীষণ জোরে ধাক্কা দিচ্ছিল ।আমি একটু ভয় পেলাম ।কী হোলে চোখ রেখে দেখি আকাশ । তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দেখি এক গাদা গিফট হাতে পাগলাটা দাঁড়ায়ে আছে ।

আমার নাম ঈশিতা ।
শোভনের সাথে আমার দেখা হয়েছিল একটা লোকাল বাসে ।কবি কবি চেহারার এ ছেলেটা দুই টাকার জন্য ঝগড়া করছিল কন্ডাক্টরের সাথে ।আমি যাচ্ছিলাম একটা আর্ট গ্যালারীতে । আমার এক বান্ধবীর সাথে ওখানে দেখা হবে ।গিয়ে দেখি বান্ধবী এখনো আসে নাই । ছবিগুলো দেখতে দেখতে একটা ছবিতে চোখ আটকে গেল । আমার ছবি !!! নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না ।অবাক চোখে অপলক তাকিয়ে আছি । পেছন থেকে একটা ভয়েস ভেসে এলো । ঘুরে দেখি বাসের সেই ছেলেটা ।কোকড়া চুল ঢুলু ঢুলু চোখের ছেলেটাই একেঁছে ছবিটা। জানাল আমাদের পাশের বাড়িতে থাকে ওরা । ছাদে দাঁড়িয়ে থাকত আমায় দেখব বলে । কিছুটা বাস্তবতা আর কিছুটা কল্পনায় তৈরি আমার ছবিটা ।
ওকে আমার খুব ভালো লেগেছিল ।একা একা বাসায় থাকি । একাকি জীবন আমার । ঠিক একা আমি তা বলা যাবে না । আমার একটা দুঃস্বপ্ন আছে । আমার নিত্য সঙ্গী । প্রতি রাতে চোখ বন্ধ করলেই দেখি দুটো হাত আমাকে ঝাপটে ধরেছে ।চারিদিকে শুধু অন্ধকার । আমি চিত্কার করছি ।
শোভনের সাথে বিয়েটা হয়েছিল কাজী অফিসে । বনানীতে নতুন ফ্ল্যাট নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলাম ।দুঃস্বপ্নটা এখনো আছে তবে তাকে নিয়েই বাঁচতে শিখেছি ।

আমার নাম জারা ।পুরান ঢাকার একটা ছোট ভাড়া বাসায় আমি থাকি। আমি একটা অফিসের রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করি ।ছোটবেলায় বাবা মা হারিয়ে আমি একা হয়ে যাই । দূর সম্পর্কের এক মামার বাসায় মানুষ হয়েছি । মামা ছিল একটা জাত পিশাচ । চৌদ্ধ বছর বয়স থেকেই আমাকে জোর করে তার শয্যা সঙ্গী বানিয়েছিল ।তার লালসার শিকার বানিয়েছিল । প্রতি রাতে তাদের রান্না ঘরে পাশবিক অত্যাচারের শিকার হতাম ।কোন এক দুপুরে ফাঁকা বাসায় আবার ধর্ষিত হলাম । এবার মামার বড় ছেলের হাতে ।আমার চোখে এরপর থেকে সব পুরুষ ই লোভী ।ওদের কত হাতে পায়ে ধরেছি , কত বাপ ডেকেছি তাও ছাড়ে নি আমাকে ।ওরা ওদের কামনার আগুনে দগ্ধ করত আমায় । মামী বুঝে ও না বোঝার ভান করত ।স্বামী আর সন্তানের রাগ ঝাড়ত আমার উপর ।এমন কোন দিন আমার জীবনে আসেনি যেদিন মামীর হাতের মার খাইনি ।আমার হাতে পায়ে অসংখ্য পোড়া দাগ ।মামীর দেয়া গরম ছেঁকার চিহ্ন।কতবার মরতে চেয়েছি , সাহসের অভাবে পারিনি ।ঠিক করলাম মরার আগে ওদের ও মারব । প্রতিশোধ নিবো । ওই বাসায় থেকেই আমি বি এস সি পাশ করেছি ।মাস ছয়েক আগে মামার ভাতের সাথে মিশিয়ে দিলাম অল্প আর্সেনিক । মামার বড় ছেলে আকাশের ব্যবস্হা পরে করার সিদ্ধান্ত নিলাম ।ওই রাতেই মামার কিচ্ছা খতম ।কিছুদিন পর আমি একটা চাকরি পেয়ে যাই ।একদিন কড়াইয়ে তেল গরম করলাম ।মামী তেলাপোকা ভয় পায় ।মামীকে রান্না ঘরে পাঠিয়ে এক গাদা তেলাপোকা ছেড়ে দিলাম রান্না ঘরে ।কিছুক্ষণ পর একটা ভয়ংকর চিত্কার শুনে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি তেল পড়ে পুড়ে গেছে মামীর শরীরের প্রায় অর্ধেকটা ।
মাস দুয়েক আগে অল্প ভাড়ায় পুরান ঢাকায় এই বাসাটা পেলাম।কয়েকদিন থাকতেই টের পেলাম একটা কবি কবি চেহারার ছেলে প্রায় ই বাসার সামনে ঘোরাঘুরি করে । একদিন সন্ধ্যায় কারেন্ট ছিল না ।মোমবাতি খুঁজছিলাম অন্ধকারে ।হঠাত্ করে ঝাপটে ধরে দুটা হাত ।ধস্তাধস্তি করেও নিজেকে ছাড়াতে পারলাম না । ততক্ষণে নিজের ভেতর আরেকটি শরীরের অস্তিত্ব ভীষণভাবে টের পাই । কারেন্ট এলে চিনতে পারি ছেলেটাকে ।কোকড়া চুল আর ঢুলু ঢুলু চোখ।পরে জেনেছিলাম ওর নাম শোভন ।
আকাশ আর শোভনকে খুন করার পরিকল্পনা করি আমি ।ঠান্ডা মাথায় খুন ।তারপর পুলিশে ধরা দিবো ।

একরাতেই খুন হলো শোভন ও আকাশ। বনানীতে নিজের বাসায় খুন হলো শোভন ।উত্তরায় আকাশ।খুনের প্যাটার্ন ও একরকম ।ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে পুরুষাঙ্গ ।তারপর কেটে দেয়া হয়েছে হাত ও পায়ের বড় আর্টারিগুলো ।অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে দুজন ই।
খুনী মেয়েটা ধরা পড়েছে । পাশে পড়ে থাকা ব্লেডে ফিঙ্গারপ্রিন্টও মিলে গেছে ।মেয়েটার নাম মায়া ।একটা অফিসের রিসেপশনিস্ট । ।মেয়েটার মাথায় মে বি প্রবলেম । তার দাবী সে শোভনকে কখনো দেখেনি ।আর আকাশকে সে ভালোবাসে ।আবার ঘন্টাখানেক পরে দাবী করে তার নাম ঈশিতা । শোভন তার স্বামী।আবার কখনো দাবী করে তার নাম জারা । সে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে ওদের ।প্রতিশোধ নিয়েছে তার নারীত্বের অপমানের ।ডাক্তারদের ধারণা মেয়েটি মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিজিজে ভুগছে ।

জানি তুমি ফিরবে

জানি তুমি ফিরবে
লিখেছেন: Odhora chowdhury meghla

খেয়াল করে দেখলাম নীলা পাশে নেই|তারপরেই শুনতে পেলাম নীলা অনি অনি বলে চিৎকার করছে|নীলা আমার হাত ধরে নেই!! তারমানে নীলা পানিতে…
দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে আমিও পানিতে ঝাপ দিলাম|কলেজ,ভার্সিটিজীবন শহরে কাটালেও আমার শৈশব কেটেছে গ্রামে| পানিতে এখন শৈশবের বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে নীলাকে খোঁজায় ব্যাস্ত আমি| হঠাতকিযেন হাতে লাগল| পানির মাঝেহাতরিয়ে জিনিসটা পেলাম|আর বুঝলাম এটা নীলার পেন্সিল হিল| কিন্তু এই হিলদিয়ে আমি কি করব?
আমার নীলাকেই চাই| এই প্রচন্ড শীতে ঠান্ডা পানিতে ডুব দিয়ে নীলাকে খুজছি, আর নীলা নীলা বলে চেঁচাচ্ছি|এমন সময় শুনতে পেলাম নীলার খিলখিল হাসি|ওর হাসি শুনেই বুকের ভেতরটা শান্ত হয়ে এল|এই হাসির জন্য প্রানও দেয়া যায়|আবছা আলোতে যতটা দেখা যায় তাতে বুঝলামনীলা সাকো পেরিয়ে ওপারে গেছে| সাতরিয়ে আমিও পারে চলে এলাম|ঈশ কতদিন পর এভাবে সাতার কাটলাম!!পাড় বেয়ে উঠে আসতে কষ্ট হল একটু,নীলার জন্য এ কষ্টটা সহ্য করা যায়|
আবারো দুজন একসাথে হাটছি|এবার দুজনে খালিপায়ে|একটু আগে নীলার একটা হিলের সলিল সমাধি হয়েছে|তাই ওর জেদাজেদিতেই এই অবস্হা|নীলা আমাকে অনবরত বলেই যাচ্ছে,“বোকা ছেলে! আমি এদিকে খুলছি সাকো পেরুব তাই, হিলটা পড়ে গেল আর উনি ভাবছে আমিই বুঝি পড়ে গেলাম|হি হি হি……|তারপর পানিতে ঝাপ দিয়ে হিরো আমাকে খুজছে|হিহি|”আমি বললাম,”তোমায় ভালবাসি বলেই তো|” নীলা বলল,“কে বলেছে অত ভালবাসতে?”…
হায় পাগলি বলে কি?ওরে পাগলি তোর মত মেয়েকে কি ভাল না বেসে থাকা যায়?
প্রচন্ড শীতে জমে যাচ্ছি আমি|নীলার হাতটা শক্ত করে ধরলাম|আহা! কি নরম উষ্ঞ হাত! বললাম,“কখনো ছেড়ে যেওনা নিলা” নিলা নিরুত্তর|পাগলিটাকে রাগাতে আমার খুব ভাল লাগে|তাই বকার সুরে বললাম,“আমাকে সাকো থেকে ফেলে দিলে কেন?………এখন আমার শীত করছে না?তোমার জন্য আমার এ অবস্হা” আর অমনি মেয়ের মুখ হাড়ি হয়ে গেল|আমার জানবউটা তো কেঁদে ফেলছে|আমার বউটা কাঁদলে,রাগলে,অভিমান করলে কত সুন্দর লাগে!! কাঁদো কাঁদো মুখে আড়ি নিল পাগলিটা|পাগলি কাঁদছে আর আমি দেখছি|মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি|ওর এই অভিমানি মুখটা যতবার দেখি ততবার নতুন করে যেন ওর প্রেমে পড়ে যাই|আজ আবারো এঘটনার রিপিট হল|এবার তাকিয়ে থাকলে তো হবেনা,নীলার কান্না তো থামাতে হবে|আমি জানি যতক্ষন ওর অভিমান না ভাঙ্গাব পাগলীটা ততক্ষন কাদবে|তাই কানে ধরে ওকে সরি বললাম|এবার নতুন বায়না আমাকে কানধরে উঠবোস করতে হবে|নাহলে ওর কান্না থামবে না|আজ অবধি পাগলীটার কোন আবদারঅপূর্ণ রাখিনি|তাই এটাও অপূর্ণ রাখলাম না|
ও আচ্ছা, বলা হয়নি আজ আমাদের সম্পর্কের আট বছর পুর্তি|ছয় বছর প্রেম,অতপর বিয়ে|কলেজে প্রথম বর্ষেই এই পেত্নীর পাল্লায় পড়েছিলাম,আর আজো চলছে|আট বছর আগেআজকের দিনেই আমাদের প্রথম কথা হয়|আর দু‘বছর আগে এই একি দিনে বিয়ে|তাই এই দিনটা বিশেষের উপর বিশেষ|
প্রতিবছর এই দিনে আমরা কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাই|বিয়ের আগে এই দিনে সারাদিন ঘুরতাম|আর বিয়ের পর রাতে লং ড্রাইভে যাই|যে দিন আমাদের বিয়ে হয়েছিল ঐ দিন রাতের বেলাও আমরা লং ড্রাইভে গিয়েছিলাম|আর তার পরের বছর পাগলিটা বায়না করল লং ড্রাইভে গ্রামের বাড়িতে আসবে|যেই কথা সেই কাজ|দুজনে বেরিয়ে পড়েছিলাম|তবে ঐবছরআসা হয়নি|ঈশশ কেন যে আসা হয়নি! কেন? নীলাকে জিজ্ঞেস করলাম,ও কোন কথা বলল না,তবে হাসল|এত সুন্দর করে হাসল বর্ননা করতে পারছি না|
আবার মনে একি কথা ঘুরছে|কেন ঐ বছর আসা হয়নি? দুজনে গাড়িতে তো আসছিলাম|হঠাত একটা ট্রাক এল| তারপর দেখলাম আমি হাসপাতালে|আর তারপর থেকেই নীলাকে খুজে পাচ্ছিনা|মা বলেছে নীলা রাগ করে গ্রামের বাড়িতে এসেছে|তাই নাকি ও গত একবছর আমার কাছেছিলনা|মাকেএত বলেছি গ্রামে আসার কথা মা আসেনি,আর আমাকেও আসতে দেয়নি|তবে আজ আমি আর মা গ্রামে এসেছি|নীলাটা যেকি দুষ্ট…লুকিয়ে ছিল প্রথম প্রথম|আমি অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম|হঠাত ঘুম থেকে ডেকে তুলল|যাক বাবা মেয়ের অভিমান ভেঙ্গেছে|জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন ফুপিয়েফুপিয়ে কাঁদল;তারপর আবার নতুন বায়না|আজকের বায়না আঁধার রাতে দুজনে সারা গ্রামটা ঘুরব|আজ নীলাটা পড়েছে সাদা রঙ্গের একটা শাড়ি|কেন যে নীল পড়ল না;ভেবেই রাগ হচ্ছে|নীলাকে নীল রংয়ে আজ কেমন লাগত ভাবছি আর ওর হাত ধরে হাটছি|
হঠাত ও থামল|বলল,“থাম অনি|আমরা এসে পড়েছি|”“একি নীলা,এটাতো আমাদের পারিবারিক কবরস্হান|ওহহো দাদুর কবর জিয়ারত করবে বুঝি!!” নীলা নিরুত্তর|দুজনে দাদুর কবর জিয়ারত করলাম|তারপর হঠাত দেখলাম দাদুর কবরের পাশে আরেকটা কবর|আরে এটা কার কবর? নীলা? নী…লা…? কার কবর এটা??
পাশ ফিরে দেখি নীলা নেই|
নীলা,এই আঁধার রাতে লুকিয়ে যেওনা|তোমার না ভুতের ভয়…
নীলা…নীলাআআআ|
আমি জানি তুমি দুষ্টামি করছ|
হঠাত কেন জানি মনে হল ঐ নতুন কবরটা থেকে নীলা বলছে,“ভাল থেক অনি|আমি এবার চলে যাচ্ছি|”
এ তো হতে পারেনা|মাথাটা কেমন যেনকরছে|তবে কি নীলা নেই?এটা কি নীলার…?
না না এ অসম্ভব|আমার নীলা আছে|নীলা,আমি জানি তুমি আসবেই…|
[এইসব পাগল প্রেমিক অনিরা খুব ভাল হয়|তাই নীলারা এভাবে অকালে চলে যেতে পারেনা|নীলা আছে,অনির হৃদয় জুড়ে আছে|
নিজেও জানিনা কি লিখলাম|তবে নিজের কাছে কিছুটা সিনেমাটিক লাগল|কারো ভাল না লাগলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন|
-কি করিস রে ?
-বৃষ্টি দেখি ।
-বৃষ্টির আবার দেখার কি ?খালি তো পানিই পরে ।এর চেয়ে একটা বদনা নিয়ে পানি ঢেলে দেখলে সুন্দর লাগবে ।চমত্‍কার আর্ট ।
-ফাজলামি করিস না পুলি পিঠা ।

লিপুকে উল্টিয়ে পুলি ডাকে মিষ্টি ।লিপু মিষ্টির অনেক কাছের বন্ধু ।কিন্তু থাকে অনেক দূর ।ফেসবুকে কথা ।মিষ্টিকেও একটা নামে ডাকে লিপু ।তিতা বলে ।যদিও মেয়েটা অনেক মিষ্টি তবুও তিতা ডাকে ।

-কি হইছে রে তিতা ?
-কিছু না ।
-বল না ।লজ্জা করলে চোখ বুজে আছি আমি ।দেখছি না ।বলে ফেল ।ফিসফিসিয়ে বল ।বেশি লজ্জার কিছু হলে ।
-শয়তান ।তুই বেশী বুঝিছ ।
-ছেলেদের মাথায় বুদ্ধি একটু বেশী থাকে ।তুই তো পেত্নী ।স্ত্রী জাতি ।মাথায় গোবর। ।আচ্ছা তোর গরুটা কেমন আছে ?যার গোবর তুই প্রতিদিন মাথায় ঠুকাস ?
-মাইর খাবি ।
-টাকা লাগবে না তো ।দে দে ।এই সময়ে মাগনা কেউ খেতে দেয় না ।
-ওহ রাগ উঠছে কিন্তু ।
-তুই রাগতেও পারিস ?
-পারি ।
-কতটুকু ?
-অনেক টুকু ।
-রাগলে কি করবি ?
-আমার চশমাটা ভেঙে ফেলব ।
-রাগলেই কি এটা করিস ?
-হ্যাঁ ।
-তোরে একটা চশমার দোকানওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিব ।
-তোকে একটা ফকিন্নীর সাথে বিয়ে দিব ।
-ভাল তো ।বসে বসে খাব ।বউয়ের ইনকাম ।মাঝে মাঝে আমিও বের হব বউয়ের সাথে ।আমি না ছোটবেলা কুতকুত খেলতাম ।খোড়ার অভিনয় ভাল করতে পারব ।
-তুই এত ফাজিল কেন ?
-তুই যে অনেক ভাল তাই ।এই পাগলী ,মন ভাল হইছে তোর ?
-হুম ।তোর মত পুলিপিঠা থাকলে কারও মন খারাপ থাকে ?
-আমি কিন্তু তিতায় শেষ ।এত তিতা তুই ।
-শয়তান ।
-পেত্নী ।

মিষ্টির মনটা আসলেই অনেক ভাল লাগছে । একটা অদেখা মানুষ কত সহজে মন ভাল করে দিল । দেখা মানুষগুলো কারণে অকারণ কষ্ট দেয় । অদেখা মানুষগুলো দেয় না । কাছের মানুষ ব্যথা দেয় । দূরের মানুষ কিছুই করে না । তবে লিপুর মত কিছু অদেখা দূরের মানুষ ... কাছের দেখা মানুষগুলোর কষ্ট ভুলিয়ে দেয় ।এরা অদেখা কাছের মানুষ । সবার একজন করে অদেখা কাছের মানুষ থাকা দরকার । দেখা কাছের মানুষ গুলোর দুঃখ ভুলিয়ে দিতে । হয়ত অদেখা কাছের মানুষ গুলোকে খুব সহজেই ভুলে যায় । কষ্টের সময়টাতে শুধু তাদের কথা মনে পরে । তবুও বুকের কোণে তাদের জন্য একটু মায়া থাকে । কেউ মায়া বাঁচিয়ে রাখে। কেউ পেন্সিল দিয়ে .সাদা কাগজে আঁকা ছোট দাগের মত. ইরেসার দিয়ে মুছে ফেলে ।

লিখেছেনঃ-শেষ রাতের আঁধার