আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

একদিন কোন এক নির্জন রাস্তায়

একদিন কোন এক নির্জন রাস্তায়
লিখেছেনঃ রিদওয়ান এইচ ইমন

বিকেলটা ছিল বিষন্ন। বিষন্ন দিনে গুমোট ভাব নিয়ে বিষন্ন বনে যাওয়াটা আমার একদম ভাল লাগেনা। তাই প্রকৃতির এরুপ বিরুপ আচরনেও গ্যারেজ থেকে নিজের ২০০৩ মডেলের করোলা জি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম লং ড্রাইভিং এর উদ্দেশ্যে।

আমার সারাটা সময় রচনাকে ঘিরে আবর্তিত হলেও বিষন্ন দিনে তাকে আমার সঙ্গী করিনা। রচনা ব্যানার্জী আমার স্ত্রী। দীর্ঘ তিন বছর অক্লান্ত ভালবেসে লাভ করা আমার অমূল্য রতন।

জীবনের ঝড়-তুফানের প্রতিটি মোড়ে দক্ষ সঙ্গীর মত আমাকে পাশে রাখলেও আমি এসব সিচুয়েশানে তাকে আমার যাত্রাসঙ্গী করিনা। একারনে রচনা ব্যানার্জীর অনেক ক্ষোভ। সেই ক্ষোভের সীমা যখন সহ্যের বাঁধ ভেঙে নিঙড়ে পড়ে, রচনা তখন তার বাপের বাড়ি গমন করে। সাধারনত তিন-চার দিনের বেশী রাগের ব্যাপ্তি বাড়েনা। ব্যাপ্তি কমলে আবার এই অধমের মাঝে ফিরে এসে মাথা গুজায়।

এবার রচনা গেল দিনপঞ্জিকার পাতায় পাতায় প্রায় এক বছর হয়ে গেল, সেই যে গেল জীবনের প্রতিটি মোড়ে তাকে খুঁজে বেরিয়েছি, কিন্তু আমার প্রাণপাখিটাকে সঙ্গে করে নিয়ে কোথায় যে লুকিয়ে গেল আর খুঁজেই পায়নি। শ্বশুরের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে দেখি দরজায় 'তিন রিংয়ের' সেই ঐতিহাসিক তালা ঝুলছে।

প্রথম দিকে বারকয়েক এভাবে খুঁজাখুজি করলেও এখন আর করিনা। যে চলে গেছে, তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও যখন ফিরে পাওয়া যায়না, তখন তাকে তার মতই থাকতে দেয়া উচিত। আমিও মানুষ। সুতরাং এর ব্যতিক্রম আমিও করতে পারলাম না।

আষাঢ়ে মাস। বৃষ্টি বাদল দিন। ব্রেকটা ঠিকমত কাজ করছেনা। তাই নির্জন গাছের ছায়ায় ঢাকা পিচঢালা রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। হঠাৎই বলা নেই কওয়া নেই গাড়িটা 'ঠাস' করে শব্দ করে উঠল। বামে ইন্ডিকেটর শো করে রাস্তার এক পাশে গাড়িটা সাইড করে দেখি সামনের ডান সাইডের চাকায় লিক করেছে।

বেজায় মুশকিলে পড়ে গেলাম। আশেপাশে যতটুকূ চোখ যায় তাতে একটা ছোট ঝুপড়ি টাইপের চায়ের দোকান ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায়না। এদিকে বৃষ্টিটাও ঝুম করে বেড়ে গেছে। এভাবে জানালা বন্ধ করে গাড়ির ভেতর বসে থাকলে দম বন্ধ করে নির্ঘাত মারা যাব। উপায়ান্তর না দেখে তাই ছোট ঝুপড়িটার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।

ঝুপড়িটাতে ঢুকেই এক কাপ চায়ের অর্ডার দিলাম। মেঘেদের গর্জনের সাথে তাল মিলিয়ে চামচ দিয়ে কাপে টুংটাং শব্দ করেই দোকানদার আমাকে এক কাপ গরম চা উপহার দিল। বৃষ্টির সাথে সাথে এবার হাওয়াটাও বাড়তে লাগল। বেশ কাঁপন লাগানো হাওয়া। হাতে এক কাপ গরম চা থাকাতে শীতল হাওয়াটাকে বেশ রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে। এই ধরনের রোমাঞ্চের সাধ আজ থেকে কয়েক বছর আগে আরো একবার পেয়েছিলাম, যেদিন রচনাকে প্রথম ভালবাসার কথা বলেছিলাম।

চায়ের কাপ খালি করে ফেলেছি প্রায় আধঘন্টা হল। বৃষ্টি এখনো থামেনি। এদিকে সকাল থেকে সূর্য্যের কড়া রৌদের দেখা না মিললেও বিকেল যে হয়ে আসছে তা বেশ আন্দাজ করতে পারছি। দিগন্ত জোড়া আকাশ, বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ। তার মাঝ ঝুড়ে ছোট একটা পরিসরে এই চায়ের দোকান আর তার খালিকটা দূরেই হাতের বা পাশে আমার করোলা জি এর রাজত্ব। গাড়িটার দিকে চোখ যেতেই মনে হল এই বৃষ্টি বাদল দিনে কাউকে না পেয়ে গাড়িটা মনের দুঃখে একা ভিজছে, ঠিক যেন রচনাবিহীন আমার মত.…

আমাদের পথচলা…

আমাদের পথচলা…
লিখেছেনঃ Farzbee

২০০৮ সাল… জুন মাস... কলেজের ১ম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। শান্তি… ঝামেলা শেষ… এর মধ্যে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম ইংরেজির জন্যে কোচিং করব সাইকি তে, ওখানে পড়া কম, গল্প বেশি। আহা! কি মজা…
সব কোচিং যদি এমন হত… তাই একদিনও কোচিং বাদ দিতাম না। গল্পে গল্পে আমার দিন ভালই যাচ্ছিল, এর মধ্যে নতুন করে যোগ হল mig33.. কে পায় আর আমাকে। মজা আর মজা। বন্ধু, আডডা,চ্যাটিং… কি দিনটাই না ছিল। বন্ধুদের মাধ্যমে একটা ছেলের সাথে চ্যাটে পরিচয়। হুমম, খারাপ না ছেলেটা… ভালই। আমাদের সাথে একই কোচিং এ পড়ে। আর সেখান থেকেই আমাদের পথচলা শুরু। Mig33 বন্ধুরা তোমাকে আর আমাকে নিয়া খেপাতো, এটা নিয়া বিরক্ত হয়ে বোকার মত কাজ করলে, আমিও তোমাকে সাহায্য করলাম। ঠিক করলাম সবাইকে বলবো আমাদের সম্পর্ক আছে, অনেক আগে থেকেই। কাউকে বলিনি, তাই আমাদের নিয়া আর যেন মজা না করে, আর তাই বলে ফেললাম বন্ধুদের, বন্ধুরা বুঝলো আমাদের অভিনয়ের কথা, শুরু হল আরো খেপানো। বুঝলাম বড় বোকামি করে ফেলেছি।

কিন্তু সেদিন বুঝিনি আমরা আসলেই সত্য কথাটাই বলেছিলাম নিজেদের অজান্তে। আস্তে আস্তে তোমার সাথে চ্যাটিং বেড়ে গেল। তোমার প্রতি ভাললাগা শুরু হল। ভাবলাম এটা কিছুই না, এমনি ভাললাগা, ভালবাসা না। আমিতো কাউকে ভালবাসবো না, এভাবে চলে গেল সময়, হঠাৎ করে তোমার ব্যবহার বদলে যেতে থাকলো, আমার সাথে অন্যরকম ব্যবহার শুরু করলে। কোচিংএ একদিন ফি জমা দেয়ার সময় তোমার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু তুমি খেয়াল করোনি বলে সেটা নিয়া আফসোস করা, ঘন ঘন ফোন করে আমার খবর নেওয়া.... সবকিছুই বুঝতে পারছিলাম আমি, কিন্তু আমিতো ভালবাসা চাই না, ভাল বন্ধু চেয়েছি।

উপেক্ষা করার চেষ্টা করলাম, পারলাম না। কারণ নিয়তি যে তোমার সাথেই লেখা ছিল। আগষ্ট মাসের ২০ তারিখ, তুমি হঠাৎ করে বলে ফেললে তোমার ভাললাগার কথা। অনেক চেষ্টা করেছিলাম যাতে এটা তুমি না বলো। কারণ আমি জানতাম আমি তোমাকে না বলবো। চাইনি আমার বন্ধুটিকে হারাতে। তুমি দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে, কিন্তু আমার জন্যেই বন্ধুত্বটা ধরে রেখেছিলে। নিজের সাথে যুদ্ধ করতে আমাকে খুশি করার জন্যে, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তুমি আরো কষ্ট পাচ্ছিলে। তোমার কষ্ট আমি বুঝতে পারতাম তবে সাহস ছিল না তোমাকে হ্যাঁ বলার, আবার পারছিলাম ও না তোমার সাথে বন্ধুত্ব ভেঙ্গে ফেলতে। তুমি বুঝতে পারছিলে যে আমিও আস্তে আস্তে তোমাকে ভালবাসতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমার মুখ থেকে তুমি এই কথাটা শুনতে পারোনি।

আরো দ্বিধায় পড়ে গেলে। আমাকে অনেকবার বলেছ সত্য বলতে, আমি বলিনি। এভাবেই বলবো না করতে করতেই কখন যে তুমি আমার সবচেয়ে আপন জন হয়ে গেলে জানি না। ওইভাবেই আর বলা হয়ে উঠেনি ভালবাসি তোমাকে। দুইজনই বুঝে নিলাম যে আমরা একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারব না। সামনে এইচ.এস.সি পরীক্ষা, অনেক পড়া পড়তে হবে, তোমার সাথে দেখা হতো খুব কম কেননা আমরা একই কলেজে পড়তাম না। যা দেখা হতো কোচিং এ, তেমন কথা বলাও হতো না সামনাসামনি, তারপরও আমাদের নিশ্চুপ ভালবাসা নিজের গতিতে চলতে থাকলো। এইচ.এস.সি দিলাম, রেজাল্ট দিলো। তুমি চলে গেলে ঢাকাতে পড়ার জন্যে। আমি রয়ে গেলাম চট্রগ্রাম।

নিজেদের ইচ্ছাতেই আমরা একসাথে পড়লাম না। তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়া শুরু করলে আর আমি মেডিকেলে। কারণ তোমাকে আমার আগেই প্র্তিষ্ঠিত হতে হবে। শুরু হলো “Long distance love story”. সবাই বলতো এভাবে ভালবাসা টিকে না, কিন্তু আমাদের জন্যে এটা কষ্টের ছিল না। আমরা অলপতেই খুশি হতাম। তুমি ঢাকা থেকে বেড়াতে আসতে, তখন দেখা হত দুই কি এক বার। কোন কোন সময় দেখাও হতো না, মেনে নিতাম। খারাপ লাগতো অন্যদের দেখে, কিন্তু মন খারাপ করতাম না। তুমি চট্রগ্রা্ম আসলেই ঈদ ঈদ লাগতো। আবার তুমি যখন চলে যেতে, লাগতো আমার চট্র্রগ্রাম ফাঁকা হয়ে গেছে। কান্নাও করতাম, তুমি বুঝাতে। এভাবেই ৪টা বছর কেটে গেল আমাদের। এরপর তোমার আব্বু বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেলেন, সাথে তোমার পুরো পরিবার। আমার চট্রগ্রাম শহর এখন পুরো ফাঁকা। ঈদের সময় ও আর ঈদ ঈদ লাগে না, ভুলাক্কার।

যেবার চলে গেলে তোমরা, তোমার সাথে সেবারো দেখা হয়নি। আমি বাসা থেকে একা বের হতে পারিনি, আর তুমিও বাসার কাজ শেষ করে আমার সাথে দেখা করতে আসতে পারছিলে না। চলে গেলে তোমরা। মন খারাপ করেছিলাম খুব। তোমার চট্র্রগ্রাম আসা হতো না। এরপর প্রায় পাঁচ মাস পর তুমি এলে এক কাজে। তখন দেখা হলো এক ঘন্টার জন্যে। এবারও আসলে কিন্তু দেখা হলো না, আমার পরীক্ষার জন্যে সময় দিতে পারলাম না। জানি তোমার খারাপ লেগেছে, কিছুই বলোনি।

মাঝে মাঝে লাগে কেন একসাথে পড়লাম না, রাগ ও লাগে, কান্না পায় খুব। জানো, তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো বলে আমি আজো বৃষ্টিতে ভিজিনি। তোমার সাথে রিকশাতে ঘুরবো বলে আমি আজো কোন ছেলেবন্ধুর সাথে রিকশাতে উঠিনি, আমার পাশের সিটটা যে শুধুই তোমার জন্যেই খালি। আমাদের জীবনে অনেক সমস্যা এসেছে এই ৫টা বছরে, তাও ভেঙ্গে পড়িনি, এসবই সম্ভব হয়েছে শুধু তোমার জন্যে, তোমার ভালবাসার জন্যে আর আমাদের একজন এর প্রতি আরেকজনের শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাসের জন্যে।

তুমি এত ভাল কেন, আমার সব আবদার মাথা পেতে মেনে নাও, আমাকে বকতেও পারোনা। আর আমি তোমাকে সারাদিন বকি। এটা করো নাই কেন, ওটা কেন করেছ, তোমার ভুলে যাওয়া, আর কত কিছু নিয়া তোমার মাথা খাই, অথচ তুমি আমাকে কিছুই বলোনা। এত কেন ভাল তুমি?

তুমি বলো আমাকে পেয়ে তুমি ভাগ্যবান, বরং আমি তোমাকে পেয়ে ভাগ্যবতী। ভাগিস ৫ বছর আগে আমাকে বলেছিলে তোমার ভাললাগার কথা, তা না হলে এই দিনটা আসতো না আমার জীবনে। আমাদের ভালবাসার সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে কবে এটা শুরু হয়েছে আমরা জানিনা। নিজের অজান্তেই আমাদের একসাথে পথচলা।

তাও প্রতি বছর আমরা ২০শে আগষ্ট একজন আরেকজনকে উইশ করি, যেদিন কিনা আমি তোমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়াছিলাম। তুমি যদি সেদিন আমাকে তোমার ভাললাগার কথা না বলতে তাহলে আজ আমাদের এই পথচলা হত না।

Thank u so much ভুলাক্কার, আমার জীবনে আসার জন্যে, আমাকে ভালবাসার জন্যে। হয়তো আমরা অন্যদের মতো ঘুরতে পারিনা, সময় দিতে পারিনা, দেখা করতেও পারিনা, তাও আমাদের ভালবাসা অন্যদের থেকে কোনো অংশে কম নয়। আমাদের অনেক না পাওয়া আছে তাও আমরা হাসিমুখে তা মেনে নেই। একটা সম্পর্কে এটাইতো অনেক বড় পাওয়া, তাই না?

শুধু বলবো অনেক অনেক অনেক বেশি ভালবাসি তোমাকে। সবসময় আমার ভুলাক্কার হয়ে থেকো। যেমন আছ ঠিক তেমন।

# সোনালি রঙা কার্ড #

# সোনালি রঙা কার্ড #
লিখেছেনঃ Jahid Hasan Ruhan

মাথাটা ঝিমঝিম করছে রবিনের। বুকে কেউ পাথর চেপে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে তার। সে কখনো কাঁদে না। আজ তার খুব চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে।


ঘন্টা খানিক আগের কথাঃ - ড্রয়ার খুলতেই একটি সোনা চকচকে কার্ডের উপর রবিনের চোখ আঁটকে গেল। এই তো সেই বিয়ের কার্ডটি। বড় ভাইয়ার এক বন্ধুর বিয়ের কার্ড। গত বছরে এই বিয়ের মাধ্যমেই মেয়েটির সাথে প্রথম তার দেখা হয়।

বিয়ে বাড়ি কিংবা বিয়ে বাড়ির লোকারন্য কোনটাই রবিনের পছন্দ না। যদিও সে সুস্থির গোছের ছেলে নয়। সেবার ডিসেম্বরে সব কাজিনেরা রবিনের বাসায় একত্রিত হয় বলেই তাকে ওই বিয়ে বাড়িতে যেতে হয়েছে।

ক্যামেরা হাতে সবার ছবি তুলছিল রবিন। টুকিটাকি ফটোগ্রাফির ঝোঁক ছিল বলেই খুব একটা খারাপ ছবি তোলে না সে।

সেই সময় রবিনের চোখে পড়ে লম্বা চুলো লাল শাড়ি পড়া মেয়েটি। আর তা তখনই ঘটে গেল যাকে বলে, লাভ ইন ফার্স্ট সাইথ। মেয়েটির চোখ দুটি অসম্ভব মায়াময়। যেন তার চোখের দিকে তাকালেই সব ক্লান্তি হারিয়ে যায়। তার চোখের মাদকতায় ডুবে যেতে ইচ্ছে করে। রোদ চশমার কল্যাণে রবিন তাকে প্রায় সারাটি সময় দেখছিলো। লুকিয়ে লুকিয়ে তার কয়েকটি ফটোগ্রাফও তুলেছে।

এরপর অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটার সাথে কথা বলার সাহস করে উঠতে পারেনি রবিন। তবে আশেপাশে বলাবলি করে মেয়ের নাম জানতে পারে অর্পিতা।

একসময় রবিন মেয়েটিকে হারিয়ে ফেলে। অনেক খুঁজেছিল সেদিন রবিন, হয়তো মেয়েটি ততক্ষণে বিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।

অর্পিতার মোবাইল নম্বর, বাসার ঠিকানা এসব জোগাড় করার অনেক চেষ্টা করেছিল রবিন কিন্তু কিছুই সে পায়নি।এরপর অর্পিতার ছবি গুলো দেখে আর তাকে খুঁজে দিন পাড় করবে বলে ঠিক করে রবিন।


হঠাৎ করে কলিং বেলের আওয়াজে চিন্তার জগৎ থেকে বের হয়ে এলো রবিন। ড্রয়ার বন্ধ করে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে এগোলো কে এসেছে দেখার জন্য। সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই একটা হালকা মিষ্টি ঘ্রাণ অনুভব করলো। ঘ্রাণটা এত পরিচিত লাগছে কেন তার? আগে কোথায় পেয়েছিল সে এই ঘ্রাণ? সেই বিয়ে বাড়িতে নয় তো??

ড্রইংরুমে যেতেই ধাক্কার মত খেল রবিন। রবিনের মায়ের সামনে সোফায় বসে আছে দুইটি মেয়ে, ডান সাইডে বসে থাকা মেয়েটি অর্পিতা।

রবিন চিন্তা করতে থাকে, অর্পিতা এখানে কেন? সে কি রবিনকে খুঁজতে এসেছে? সে কি জানে রবিন তাকে কয়েকটি মাস হন্নে হয়ে খুঁজেছে? মেয়েটা কি জেনে গেছে রবিন তাকে কতটা ভালবাসে?


মাথা নিচু করে বসে থাকা অর্পিতার হাতে ধরা একটি সোনালি রঙা কার্ড। কার্ডটি সে বাড়িয়ে দিল রবিনের মায়ের দিকে। কিসের কার্ড জানতে চাইলে অর্পিতা জানালো এটা তার নিজেরই বিয়ের কার্ড।


হঠাৎ করে রবিনের সব প্রশ্নের উত্তর রবিন পেয়ে গেল। ড্রইংরুমে এগোলোনা সে, ওখানেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে অর্পিতাকে প্রশ্ন করল, "বেশ তো হারিয়ে ফেলেছিলাম। তোমার ছবি গুলোর মাঝে সুখ খুঁজতাম। সুখ খুঁজতাম তোমাকে খোঁজার মাঝেই। আবারও যখন হারিয়ে যাবে নিজ থেকে দেখা দিতে এলে কেন?"

মাথা ব্যথা ক্রোমোস বাড়ছে রবিনের। চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি এসে পড়ল সোনালি রঙা কার্ডটির উপর।

• আমার জীবনের শেষ কথা •

• আমার জীবনের শেষ কথা •
লিখেছেনঃ অপুর্ব মাসুদ

ও ছিল আমার ছাত্রের বড় বোন। তাকে অফার করছিলাম ২০১০ সালের ৬ই মার্চ। আমার জীবনের প্রথম অফার। তাই এক্টু ভয় এ ছিলাম। যদি ইগ্নোর করে। তখন আমি অপুর্ব, সম্মান ৩য় বর্ষে পড়ি। আর ও শান্তা ইন্টার দিবে। কিছু দিন পর ও আমার অফার গ্রহণ করল। আমরা কথা বলতাম রাতে। অনেক রাত পযন্ত কথা বলতাম। ৬ মাস ঠিক মত চলতেছিল। হঠাৎ ১দিন কোন কারন ছাড়া আমায় বললো যে আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখবে না। পরে জানতে পারলাম ওকে অন্য কেউ অফার করছে। তার পর থেকে ১ সপ্তাহ কোন যোগাযোগ হয় নি।

তারপর.........
ও আমায় সরি বলে। আমি ওকে মাফ করে দি। তার পর থেকে ওর সাথে আমার তেমন কোন ঝগড়া হয়নি ১ বছর। ও ভার্সিটি তে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। CU তে economics এ ভর্তি হয় ২০১২ সালের January তে। এর পর থেকে শুরু হয় ঝগড়া।

ও যেদিন ভর্তি হয় ওই দিন থেকে ওর মোবাইলে call waiting...!!!! ওর বন্ধুর সাথে কথা বলা শুরু। ভার্সিটি তে পড়লে বন্ধু থাকবে, তাই বলে সারা দিন !!! এত কিসের কথা বুঝতাম না।

১৪ February তেও ওর call waiting। জিজ্ঞাসা করছি বলে বন্ধু। আজকের রাত্রে ও তুমি ওদের সাথে কথা বলবা??? এর পর থেকে শুরু হয় আমার কস্টের দিন।

প্রায় রাত্রে ওর call waiting। রাত ২টা বাজে ওর call waiting পাইছি। তারপর ও ওর সাথে সম্পর্ক রাখছি কারন ও আমার জীবন। ওর সাথে ঝগড়া করে আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারতাম না। ও আরো বাড়তে থাকে। কিছু হলে বলে- তুমি ও তো তোমার বন্ধুদের সাথে কথা বলো!!!

ওকে কিছু বললে আমাকে গালিগালাজ করত। সব কিছু মেনে নিয়েছি কারন আমি ওকে খুব ভালবাসতাম। ও ওর বন্ধুদের সাথে রিকশা করে ঘুরত। একদিন আমার বন্ধু ওকে দেখেফেলে। আমি কিছু বলার আগেই ও আমায় অপমান করে। বলে আমি নাকি নিচু মনা। ওরা নাকি শুধু বন্ধু। এর পর থেকে আমি ওকে avoid করে চলতে শুরু করি। লাস্ট ১ বছর ও আমায় অনেক কষ্ট দিচ্ছিল।

ওকে আমি ভুলে ও গেছিলাম কিন্তু ৪মাস আগে ও ওর সব ভুল স্বীকার করে। আমি ওকে ক্ষমা করে দিই। তারপর থেকে ও কে প্রায় অনলাইন এ দেখতাম। কিছু বললে বলত পেজের লেখা পড়ি।

আজ থেকে ২দিন আগে আমি ওর fb তে ঢুকে যা দেখলাম তা আমি মানতে পারতে ছিলাম না। ও ওর ওই বন্ধুর সাথে প্রেম করতেছে এখনও। সব মেসেজ আমি পরলাম। ওর কাছ থেকে যখন জানতে চাইলাম এমন করলে কেন?? ও আমার সাথে উল্টা গরম সব দোষ নাকি আমার। আমি যখন ওকে ছেড়ে চলেগেছিলাম, তখন থেকে ও ওই বন্ধুর সাথে প্রেম করছে।

তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি এখনো। তাই আমার সাথে তুমি যা করেছ, তা আমি কোন মতে ভুলতে পারতেছি না। তুমি আমার সাথে এমন অনেক খারাপ ব্যবহার কর্‌ যা আমি এখানে বলতে পারছিনা। কারন তোমাকে সবার সামনে আমি ছোট করতে পারব না।

আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন তাকে পরকালে আমি তাকে আমার জীবন সংগী হিসাবে পাই।

[ অনুগ্রহ করে কেউ কোন বাজে মন্তব্য করবেন না প্লিজ, আমাদের সবার উচিৎ সবার ভালবাসাকে সন্মান দেয়া! কেউ কেউ হয়, এমন ব্যতিক্রম ]