আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৩

বৃষ্টিস্নাত ভালবাসা

বৃষ্টিস্নাত ভালবাসা
লিখেছেনঃ মুহাইমিনুল ইসলাম অভী

রিকশায় হাত ধরে বসে আছে মিমি।ওর এই এক অভ্যাস,রিকশায় ওঠলে হাত ধরতেই হবে।আরো একটা অভ্যাস আছে ওর,অভ্যাস না বলে বদঅভ্যাস বলাই ভালো,রিকশায় চড়ার পর থেকে মাথার উপর হুড তোলা যাবে না,তা সে রোদ,ব্ ষ্টি যাই হোক।আরো একটা বদঅভ্যাস কথা আছে ওর ,তা হলো কথার তুবড়ি ফোটানো।এমনিতে চুপচাপ টাইপের মেয়ে ও কিন্তু রিকশায় চড়লে পুরো অন্যরকম হয়ে যায় ও।হয়তোবা রিকশায় চড়লে স্বাধীন,মুক্ত পাখির মতো অনুভূতি হয় ওর।এমনিতে গাড়িতে চড়ার অভ্যাস ওর।ভার্সিটিতে ও গাড়িতে করেই আসে।
এতোসব বদঅভ্যাস থাকার পরও ভাবছেন আমি মাথা ঠান্ডা রাখছি কীভাবে?ওর দিকে তাকালে মাথা কেন ,পুরো শরীরই ঠান্ডা হয়ে যায়।এতো সুন্দর মানুষ হয় কীভাবে?রিকশায় চলার সময় যখন বাতাসে ওর চুল ওড়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।অপ্সরী আমি দেখিনি কখনো তবে মিমিকে অপ্সরীর থেকেও বেশি সুন্দর লাগে তখন।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়েই কথা বলার সময় শুধু মুখ নাড়ায়।কিন্তু কথা বলার অরিজিনাল আর্ট যে এক্সপ্রেশন এটা তারা ভুলে যায়।মিমির প্রতিটি কথায় এক্সপ্রেশন থাকতো।হয় চোখের,নয়তো ভ্রুর আবার নয়তোবা হাত নাড়িয়ে কথা বলার, যেটা ওর সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তুলতো।
ভার্সিটিতে ক্লাস শেষ হবার পর প্রতিদিন রিকশা করে ওর সাথে ঘুরতে বের হতে হয়।বিটাক মোড় থেকে রিকশা নিয়ে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির সামনে দিয়ে হাতিরঝিল হয়ে আবার বিটাক মোড়ে আসা এই আমাদের প্রতিদিনের রিকশাভ্রমণ।প্রতিদিন একই জায়গায় ঘুরাঘুরি করে কি মজা তা ও ই জানে।অন্য কোথাও যাওয়ার কথা বললে যায় না,আমার কেন একই জায়গায় বারবার ঘোরা তাও বলে না।
আজও আমরা একসাথে রিকশাভ্রমনে বের হয়েছি।মিমির আজকের সাজটা অন্যরকম।আজ শাড়ি পড়েছে ও।যে মেয়েকে সালোয়ার কামিজে অপ্সরী লাগে তাকে যে শাড়ীতে অনবদ্য লাগবে তা তো বুঝতেই পারছেন।আকাশে মেঘ করেছে।আমি বারণ করেছিলাম আজ রিকশাভ্রমনের দরকার নেই।না তা হবে না,ওনাকে যেতেই হবে।আচ্ছা যাবো ভালো কথা,কিন্তু ব্ ষ্টি এলে রিকশার হুড তোলা যাবে না এ কেমন কথা?
এসব ভাবতে ভাবতেই হুড়মুড়িয়ে ব্ ষ্টি নামলো।আমি রিকশার হুড তুলতে গেলে মিমি বাধা দিয়ে বললো,আহ!থাকুক না।একটু ভিজি ব্ ষ্টিতে।ওর কথা না মানার সাহস আমার নেই।আমিও ওর সাথে রিকশায় কাকভেজা হতে থাকলাম।হঠাৎ রিকশা থেকে নেমে ও রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে পড়লো।দুহাত দুদিকে ছড়িয়ে মাথা উপরের দিকে তুলে ব্ ষ্টির আনন্দ উপভোগ করতে লাগলো ও।আমি তখনো রিকশায় কাকভেজা হয়ে বসে আছি আর বিড়বিড় করে বলছি ,এই ব্ ষ্টিভেজা মেয়ে,তোমাকে ভালোবাসি।
- আরে ফয়সাল নাকি!! কেমন আছিস?
- এই তো দোস্ত, তোর কি খবর?
- আমি তো ভালই আছি। তা এইখানে কি করিস?
- একটা ছেলে দেখা করবে বলল। তাই দাঁড়িয়ে আছি।
- আজকে তোর অফিস ছুটি নাকি?
- না, কয়দিন সকাল করে শরীর খারাপ লাগছিল। তাই ছুটি নিয়েছি।
- ওও, আমার আবার বাজারে যেতে হবে। তো ঠিক আছে দোস্ত, পরে কথা হবে।
- ঠিক আছে দোস্ত

ঠিক ধরেছেন, আমিই ফয়সাল। এই গল্পের নায়ক। এতক্ষণ এক দোস্তের সাথে কথা বলছিলাম। দোস্তকে কয়েকটা মিথ্যা কথা বলেছি। সত্য হচ্ছে, অফিস থেকে কোন ছুটি নেইনি। অফিস চলতেছে। আর আমার সাথে কেউই দেখা করতে চায়নি। বরং আমিই একজনের সাথে দেখা করার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এবং সে ছেলে না। সে হচ্ছে এই গল্পের নায়িকা

ঘটনার শুরু বেশ কয়েকদিন আগে। মেয়েটার নাম জানি না। তবে সে ভার্সিটিতে পড়ে এইটা জানি। আমার চেয়ে দুই-তিন বছরের জুনিয়র ব্যাচ। দেখতে সুন্দর, চালচলনও সুন্দর, কথাবার্তাও সুন্দর। তবে কখনো কথাবার্তা বলিনি। কিভাবে বলব তাই বুঝিনি। তবে পিছন পিছন লেগে আছি। সকালবেলা ভার্সিটির সামনের ওই বুড়োর স্টলে বসে থাকি। চা খাই না। তাও বুড়োর সাথে এই কয়দিনে খাতির ভালই হয়েছে। তাই একদিন বুড়োটা বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাস করেছিল। বুড়োকে ব্যাপারটা বলেছি। আরও বলেছি, যেদিন মেয়েটার সাথে আলাপ হবে সেদিন তার সাথে চা খাব। বুড়োর চায়ের দামটাও আমিই দিব। বুড়ো তখন পোকায় খাওয়া দাঁত বের করে বেশ হাসতেছিল। মেয়েটার সাথে আলাপ হওয়ার পর তাকেও বুড়োর দোকানে নিয়ে আসব। বুড়ো তখন আবার হাসবে। আর তিনজনে মিলে গরম গরম চা খাব।

সকাল করে ভার্সিটির সামনে আসায় অফিসে লেট হচ্ছে। কয়দিন থেকেই বস ব্যাপারটা দেখছে। কিন্তু কিছু বলছে না। না বললেই ভাল। আর যখন বলবে তখন দেখা যাবে।
……… ……… ………

মেয়েটা আজকে নীল শাড়ি পড়েছে। আরো সুন্দর লাগতেছে। চশমাটাও মানিয়েছে। খুবই সুন্দর লাগতেছে। কিন্তু অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে। এখনি যেতে হবে। তাই মন চাইলেও আর থাকা গেল না
……… ……… ………

সারাদিন অফিস করতে আর ভাল লাগেনা। মেয়েটার সাথে কিভাবে কথা বলা যায় ভাবছিলাম। ভাবতে ভাবতেই বাসায় পৌছালাম। রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিচ্ছিলাম। পিছনে তাকাতেই দেখি সেই মেয়েটা!!
মেয়েটা এইদিকে কেন!! কিছু বুঝলাম না। কিছু না বুঝেই দাঁড়িয়ে থাকলাম। মেয়েটা কাছে এসে বলল,

- “সুন্দর ফলো করলাম, তাই না?”

কি বলব বুঝলাম না। তাই শুধু মাথা নাড়লাম

- “চমকে গেলেন নাকি?”

এরকম প্রশ্নে কেমন উত্তর দিতে হয় তাও জানা নেই। তাই চুপ করেই থাকলাম।

- “কি হল!! কথা বলেন না কেন? ওহ সরি, আপনে কি বোবা?”

বলে কি!! বোবা যে না তা প্রমাণ করতেই বললাম- ”না”

- ”ভাল। কয়দিন পিছন পিছন তো ভালই ঘোরাঘুরি করলেন”

হায় হায়, মেয়েটা তো সবই জানে। এখন কি যে হয়!!

- “কি হল কিছু বলেন না কেন? শরীর খারাপ নাকি?”

অবস্থা কোনদিকে যে যায় বুঝতেছি না। উত্তরগুলো মাঝামাঝি দেওয়াই ভাল মনে করলাম। তাই বললাম,

- “না মানে, একটু খারাপ”

- “ওও, আমি মনে করলাম আজ একটু আপনার সাথে ঘুরব। ঠিক আছে, আজ তাহলে যাই”

- “আরে না, বেশী খারাপ তো না। একটু খারাপ ছিল। হঠ্যাৎ করেই ভাল হয়ে গেল। ঘুরতে পারব। কোন সমস্যা নেই। কোথায় ঘুরবে বল”

- “চলেন কোথাও চা খাই। আর হঠ্যাৎ শরীর ভাল হওয়ার কারণটা কি?”

- “তেমন কিছু না। মানে তোমার সাথে কথা বলে ভাল লাগল। তাই ভাল হয়ে গেল”

- “ঠিক আছে। এরকম হঠ্যাৎ হঠ্যাৎ ভাল হলেই চলবে”

প্রথম একটা মেয়ের সাথে ঘোরাঘুরি। কেমন যেন একটা অনুভূতি। তবে ভালই লাগছে।
এই যা, মেয়েটার নামই শুনলাম না। থাক, পরে নাহয় শুনে নিব। এখন ঘোরাঘুরি করি

লিখেছেনঃ Sadik Awal

" ধূসর ভালোবাসা "

" ধূসর ভালোবাসা "
লিখেছেনঃ যে ছেলেটি বিদ্যুতের বন্ধু

সত্যিই তাহলে আর অপেক্ষা করব না ?
--- না, করবে না ।
কেন ?
--জানি না ।
কিন্তু তুমি তো বলেছিলে অপেক্ষা করতে ?!
---না, আমি কখনোই বলিনি ।
হাত ছুয়ে কথা দিয়েছিলে!
---আমি কথা দিতে চাইনি...তুমিই জোর করেছিলে...পাগলামী শুরু করেছিলে!
তাই বাধ্য হয়ে প্রমিজ করেছিলাম ।
তুমি তো জানতে আমি পাগলামো করব!
তবুও কেন দেখা করতে এসেছিলে ?
---জানি না !
তোমার সাথে আমার আগে পরিচয় হয়নি, এটা কি আমার দোষ ?
---একই কথা বারবার বলবা না!
এটা তোমারই দোষ ।
তুমি আগে আসলে না কেন ?
এখন এসেছ পেইন দিতে!
টাইম এন্ড টাইড ওয়েটস ফর নান !
ছোটবেলায় " সময়ের মূল্য" রচনা লিখতে গিয়ে কতবার এই বাক্যটা লিখেছে ।
লেখার ছলে ।
কখনো রিয়েলাইজ করেনি রুদ্র ।
ইউনিভার্সিটিতে আসার পর এই বাক্যটা যে কতটা নির্মম, সেটা সে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এখন।
মাত্র তিনটা দিনের ব্যবধান!
৭২ ঘন্টা!
নিজের পছন্দের মানুষকে অন্যের হয়ে যেতে দেখল!
সে কল্পনাও করতে পারেনি, অবন্তী এমন একটা ডিসিশন নিতে পারে!
অবন্তীকে যখন বলল ভাল লাগার কথা অবন্তী স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিল ।
সেদিনই প্রথম অবন্তীকে কাঁদতে দেখেছিল রুদ্র ।
কাঁদতে কাঁদতে অবন্তী বলেছিল, কুত্তা ! তুই আগে আসলি না ক্যান ?!
রুদ্র ধরা গলায় বলেছিল, আমি কি জানতাম এমন হবে!
সেদিন অবন্তী রুদ্রকে কথা দিয়েছিল, যদি কোনদিন সে তার মন চেঞ্জ করে তাহলে রুদ্রকে বিয়ে করবে ।
আগামীকাল অবন্তীর এনগেজম্যান ।
বিয়ের পর চলে যাবে ম্যারিকা ।
স্বপ্নের দেশ ।
রুদ্রকে আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না কারো ।
ফোন দিয়ে কেউ বলবে না, বড়ইয়ের আচার খেয়ে আমার ব্যাগে বিচি গুলো তুই রেখেছিলি শয়তান!
লাল-নীল, কালো-সাদা স্বপ্ন আর দেখা হবে না ।
দুইটা টুইন মেয়ে বেবির স্বপ্ন দেখা হবে না ।
দেখা হবে না, তাদের চুলে ঝুটি বাঁধার স্বপ্ন!
কখনই হবে না............কোনদিন না....