বসুন্ধরায় সিনেপ্লেক্সে একটা মুভি দেখবো বলে
বসুন্ধরায় ঢুকলাম।আজ অন্যদিনের চেয়ে অনেক ফাকা।ক্যপসুলে শুধু আমি
একা,উঠবে এমন সময় হঠাত্ কে লিফটাকে আবার স্টপ করালো,দরজা খুলে গেলো আর
ভিতরে ঢুকলো আমারই বয়সী এক রূপবতী।আমি সাধারণত মেয়েদের দিকে তাকাই
না,আমার মা আমাকে আর বাবাকে রেখে আরেক পুরুষের সাথে পালিয়ে যাওয়ায় ছোট
থেকেই মেয়ে জাতিকে ঘৃনা করি,তাই আজো ব্যতিক্রম হলো না অর্থাত্ আর তাকালাম
না।
টিকিট কেটে নির্দ্দিষ্ট আসনে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম,আজকের মুভি লাল টিপ।পিছনে চোখ পড়তেই দেখলাম লিফটের মেয়েটি।১৪৫ ডিগ্রি কৌনিক দূরুত্বে চোখটাকে ঘুরিয়ে নিলাম।
মুভিটা চরম লাগছে।
.
.
টিএসসি তে ভার্সিটির বন্ধুদের সাথে বসে চা খাচ্ছি।পাশেই একটা রিক্সা এসে দাড়ালো,আর রিক্সা থেকে নামলো সেই লিফটের রূপবতী।নেমেই আমার কাছে এসে বলল "১০ টাকা ভাংতি হবে"।
আমি অবাক হলাম তবুও পকেট হাতড়ে একটা ১০ টাকা বের করে তার হাতে ধরিয়ে দিলাম।
মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,"আরেকদিন আপনার টাকাটা দিয়ে দিবো আজ ভাংতি ছিলো না "
আমি মুখকে অন্যদিকে ফিরিয়ে বললাম,"টাকা দিতে হবে না"
"আমি ভিক্ষুক নই যে আপনার থেকে ভিক্ষা নিবো",এই বলে মেয়ে চলে গেলো।
"কিরে মামা এসব কি দেখতেছি?মেডিকেলের মাইয়্যা আসি তোমার থেকে টাকা খুজে,কাহিনী কি?"অর্নব অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।
সবাই একসঙ্গে প্রশ্নদিপ্ত চোখে তাকিয়ে রইলো।
"আরে না ঐদিন মেয়েটা আর আমি বসুন্ধরায় ক্যাপসুলে উঠছিলাম ,তখন মনে হয় খেয়াল করছে।আর মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে এটা তোরে কে কইলো ?"
"মেয়েটা আমার কাজিনের বান্ধবী"
"তাইলে তো তোকে চিনার কথা, তোর থেকে টাকা চাইলো না কেন?"
"মেয়েই ভালো জানে"
.
.
.
.
.
.
বাইক নিয়ে বেশ জোরেই টানছিলাম ,হঠাত্ রাস্তার মধ্যে একটা জটলা দেখলাম,চরমভাবে ব্রেক কশলাম।বাইক রেখে সামনে গিয়ে জানতে পারলাম একটা মেয়ের রিক্সাকে বাস বলতে গেলে পিশে দিয়েছে।ভিড় ঠেলে দেখি আরে এতো সেই রূপবতী, মেয়ের হাত পা ভেঙ্গে গেছে প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে।আমি তত্ক্ষনাত সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই ওর ভার নিবো।কোন গাড়ি পাচ্ছিলাম না তাই কষ্ট আমার বাইকে করেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলাম ।ডাক্তাররা সবাই ওকে চিনে তাই আমার তেমন কষ্ট হয়নি,তারা বলেন,অবস্থা বেশি খারাপ।!CU তে রাখা হয়।তখনি ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়।আমার ক্রেডিট কার্ড টাকা আছে আর ৪ লাখ ১৫ হাজার।বাবা এখন ফ্রান্সে থাকার কথা আসবে আরো ১সপ্তাহ পর।তবুও ফোন দিলাম "বাবা তুমি কোথায় ?"
"এই তো ১ ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলাম।"
"তার মানে বাংলাদেশে ?"
"হ্যাঁ"
"বাবা তুমি এখনি ঢাকা মেডিকেলে আসো।"
"কেনো বাবা তোমার কোন সমস্যা হয়েছে ?"
"না বাবা তুমি আসো তারপর বলছি।"
"ঠিক আছে।"
যাক বাচা গেছে বাবা যখন আসবে তখন আর চিন্তা নেই।
এরই মধ্যে মেয়েটার কয়েকজন বন্ধু এসে হাজির ।তখনি ১ম মেয়েটার নাম শুনলাম,মেয়েটার নাম রিয়া।রিয়ার বন্ধুরা বান্ধবীরা আমার প্রতি বেশ কৃতজ্ঞতা দেখালো।ততক্ষনে বাবা হাজির এবং প্রথমেই বললঃ "ইমরান বাবা তোর কিছু হয়েছে?"
বাবাকে সব খুলে বললাম।সব শুনে বাবা প্রথমে টাকা পে করলো।এদিকে রিয়ার বাবা মা থাকে চট্টগ্রাম।ফ্লাইটে তাড়াতাড়ি আসার কথা কিন্তু বাংলাদেশ বিমান লেট করলো তাই আধ ঘন্টার যায়গায় ৩ ঘন্টা লেগে গেলো।আমি তাদের ওখানে বাসায় এলাম।সেদিন কেনজানি রিয়ার প্রতি বেশ ভালোবাসা জন্মে,জানি না এটা দয়া নাকি প্রেম।
সুস্থ হতে হতে ৩ মাস লেগে যায়।রিয়ার পরিবারের সাথে এই ৩মাসে সম্পর্ক বেশ ভালো হয়ে যায়।আমি তাদেরকে অনেক বলেছি আমার বাসায় থাকার জন্য কিন্তু তারা থাকেনি,৩ মাস থাকার জন্য তারা একটা ফ্ল্যাটই কিনে ফেলে।তারা আমাকে চট্টগ্রাম যাওয়ার আহ্বান জানায় কিন্তু কয়দিন পর ইয়ারলি এক্সাম,তবে তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করতে হলো পরীক্ষার পর যাবো।
.
১মাস পর পরীক্ষা শেষ হলো।আঙ্কেল ফোন করলো অর্থাত্ রিয়ার বাবা,তিনি বলেন আগামী শুক্রবার তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে অর্থাত্ রিয়ার বড় বোনের বিয়ে,আমাকে বুধবারের মধ্যে যেতেই হবে,আমিও সায় দিলাম যাবো।বিকালে এয়ারপোর্টে গিয়ে বুধবারের টিকেট বুক করি।এই ১ম চট্টগ্রাম যাবো।
.
.
.
.
.
.
ল্যান্ড করলাম।বেরিয়ে এসে দেখলাম আমার নামের প্ল্যাকার্ড নিয়ে একজন দাডিয়ে আছে গিয়ে বললাম আমিই ইমরান।লোকটি বললঃ"আমি ড্রাইবার ,নাম মোকলেস, স্যার আপামনির বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত তাই আসতে পারেন নি ।"
"সমস্যা নেই তুমি চলো"
চট্টগ্রাম জায়গাটা খুব সুন্দর মনে হচ্ছে ,তেমন একটা জ্যাম নেই।" আচ্ছা মোখলেখ বাসা কোথায়? অর্থাত জায়গার নাম ?"
"খুলশি"
.
.
.
বাড়িটা ডুপ্লেক্স।বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথে সবাই যেভাবে আপ্যায়ন করতে লাগলো মনে হয় যেন আমি তাদের মেয়ে জামাই।তারা বারবার বলছে আমার কারনেই রিয়া জীবন ফিরে পেয়েছে,আমি কি বলবো বুঝতেছিলাম না।কোনমতে বললাম আমাকে একটু ফ্রেশ হবে।সাথে সাথে আমাকে আমার রুমে নিয়ে গেলো।হাফ ছেড়ে বাচলাম,গোসল করে টেবটা নিয়ে যা একটু বসলাম সাথে সাথে দরজায় নক।
খুলে দেখলাম রিয়া।আজ একটা সবুজ শাড়ি পড়েছে চোখ চশমা।এ যুগের মেয়েরা শাড়িও পরে ?অবাক লাগলো।"ব্যস্ত ? ভিতরে আসতে পারি ?"
"অবশ্যই অবশ্যই ভিতরে আসুন"
ঢুকেই আমার হাতে একটা দশ টাকার নোট গুজে দিলো
"দশ টাকা ?কেন ?"
"ভুলে গেলেন? টিএসসির মোড়ে আপনার থেকে দশ টাকা নিয়েছিলাম"
"ও ! ভুলে গিয়েছিলাম"
"ভুলে গেলে বুয়েটে কেমনে পড়েন ?"
"জানি না"..........
...কথা বলছিলাম অনেকক্ষন এমনসময় দরজার ওপাশ কে জানি চট্টগ্রামের আন্চলিক ভাষা বলল,"রিয়া আফা তুই হডে গিয়্যো ?,আম্মা জ্বি তোয়ারে তোআর"
"আসছি তুই যা"
"আচ্ছা রাতে দেখা হবে,রাতে একটা ক্যাম্পফায়ারের পার্টি হবে এসো"
আমি হঠাত্ লক্ষ করলাম রিয়া আপনি থেকে তুমিতে নেমে গেছে।এটাতো ঠিক না তুমি হলেই প্রেম আর প্রেম মানেই বিয়ে আর বিয়ে মানেই বাবার মতো অবস্থা,অসম্ভব অসম্ভব !ঐ মহিলার অর্থাত্ আমার মার কথা মনে হতেই মাথা প্রচন্ড গরম হয়ে যায়।বাবাকে ফোন করলাম ,"বাবা তুমি কি এখন আমার সাথে একটু ভিডিও চ্যাট করতে পারবে ?"
"কেনো যা ফোনেই বললে হয় না ?"
"না হয় না,তুমি আসবা নাকি বলো,"
"আসছি"
.
.
.
"বল কি বলবি?"
"তুমি কি মা কে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলে ?"
"হঠাত্ এই প্রশ্ন কেনো ?"
"বাবা তুমি বলো ,"
"আমি পছন্দ করতাম কিন্তু তোর মা পছন্দ করতো আরেকজনকে ,তোর দাদা তোর নানা দুজন ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু তাই বিয়েটা হয়ে যায় ,বাকিটাতো তুই জানিস"
"বাবা আচ্ছা কাল কথা হবে"
"কেন"
"আজ ভালো লাগছে না"
"অসুস্থ ?"
"না"
"ও বুঝছি,বয়সটা আমিও পার করেছি ,আচ্ছা পরে কথা হবে এখন একজন ক্লায়েন্ট আসবে"
"বাই"
বাবার কথায় হোক আর আমার বিবেকের মাধ্যমেই হোক মেয়েদের সম্পর্কে আমার ধারনা পাল্টে যায় মনে হতে থাকে মেয়ে জাতিটা খারাপ না।
.
.
.
.
রাতে ক্যাম্প ফায়ারের চারদিকে সবাই বসে মজা করছিলো এমন সময় ছাদ থেকে আঙ্কেল খবর পাঠালেন যাতে আমি উনার কাছে যাই,
"ডাকছিলেন ?"
"আরে ইমরান আসো আসো,শুনলাম বিকালে এসেছো ,আসতে কোন সমস্যা হয়েছিলো ?"
"না,কোন সমস্যাই হয়নি ,ঠিক সময়ে ফ্লাই করেছে।"
"তাইলতো ভালোই,আমাদের চট্টগ্রাম আমাদের ঘর কেমন লাগছে?"
"খুব ভালো ,বেশ ফ্রেন্ডলি সবাই।"
"আমি আসলে ব্যস্ত ছিলাম বলে এয়ারপোর্ট যেতে পারিনি এজন্য দুঃখিত"
"না ঠিক আছে,"
"ড্রিংস করবে?"
"সরি আঙ্কেল ওরকম অভ্যাস নেই"
"মজা করেছি আমরাও অভ্যাস নেই,আচ্ছা তুমি নিচে যাও মজা করো।"
.
.
.
আজ বিয়ে শেষ হয়ে গেলো ।আমি ব্যাগ গোছাচ্ছি।"আসতে পারি?"
রিয়ার আওয়াজ
"আসো আসো"
ভেতরে এসে বসলো।আজো একটা শাড়ি পরেছে কিন্তু চোখে চশমা নেই।
তুমি ড্রাইভিং পারো ?
হ্যা পারি কেনো?
চলো
কোথায় ?
লং ড্রাইভে
আমার কার আর বাইক ঢাকায়
তোমার গাড়ি নিতে কে বলেছে আমাদের একটা গাড়ি নিলেই তো হয়
না আজ ইচ্ছা করছে না
আচ্ছা তুমি বসে থেকো আমি চালাবো
মেয়েতো দেখি নাছোড়বান্দা,অবশেষে রাজি হয়ে গেলাম।আঙ্কেলরা মনে হয় আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য বসে ছিলেন,রিয়া গিয়ে বলতেই ট্রেতে করে চাবি পৌছে দিয়ে গিয়ে।
.
.
.
রাস্তা চিনি না তবুও চালিয়ে চলছি।পাশে রিয়া ,ওকে খুব সুন্দর লাগছে।আজ মনে হচ্ছে রিয়াকে বিয়ে করলে কেমন হয়,আমি মনে হয় ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।সাথে সাথে প্রপোজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম ।রাস্তা ফাকা দেখে গাড়ি আর থামালাম না,ওতেই বলে দিলাম "! LOVE U,"
ওর REPLY,"! LOVE U 2"
হঠাত্
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
বাবা ফোন দিলো,
"হ্যা বাবা কি খবর?"
"এই তো ভালোই তুই কেমন আছিস?"
"বাবা তোমার সাথে একটা কথা বলবো ভিডিও চ্যাটে আসো।"
"আমি জানি তুই কি বলবি,আমি রিয়ার বাবার সাথে কথা কথা বলে ঠিক করেছি তোদের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার পর বিয়ে হবে।ভালো মতো ড্রাইভ কর।বেষ্ট অফ লাক।"
আমি অবিশ্বাস্য চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
5 yearz later,
ফ্রান্সে হানিমুন বেশ ভালোই লাগছে।সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো আইফেল টাওয়ারের নিচে সবার সামনে K.....না আর লেখলাম না।[ সংগ্রহীত ]
টিকিট কেটে নির্দ্দিষ্ট আসনে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম,আজকের মুভি লাল টিপ।পিছনে চোখ পড়তেই দেখলাম লিফটের মেয়েটি।১৪৫ ডিগ্রি কৌনিক দূরুত্বে চোখটাকে ঘুরিয়ে নিলাম।
মুভিটা চরম লাগছে।
.
.
টিএসসি তে ভার্সিটির বন্ধুদের সাথে বসে চা খাচ্ছি।পাশেই একটা রিক্সা এসে দাড়ালো,আর রিক্সা থেকে নামলো সেই লিফটের রূপবতী।নেমেই আমার কাছে এসে বলল "১০ টাকা ভাংতি হবে"।
আমি অবাক হলাম তবুও পকেট হাতড়ে একটা ১০ টাকা বের করে তার হাতে ধরিয়ে দিলাম।
মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,"আরেকদিন আপনার টাকাটা দিয়ে দিবো আজ ভাংতি ছিলো না "
আমি মুখকে অন্যদিকে ফিরিয়ে বললাম,"টাকা দিতে হবে না"
"আমি ভিক্ষুক নই যে আপনার থেকে ভিক্ষা নিবো",এই বলে মেয়ে চলে গেলো।
"কিরে মামা এসব কি দেখতেছি?মেডিকেলের মাইয়্যা আসি তোমার থেকে টাকা খুজে,কাহিনী কি?"অর্নব অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।
সবাই একসঙ্গে প্রশ্নদিপ্ত চোখে তাকিয়ে রইলো।
"আরে না ঐদিন মেয়েটা আর আমি বসুন্ধরায় ক্যাপসুলে উঠছিলাম ,তখন মনে হয় খেয়াল করছে।আর মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে এটা তোরে কে কইলো ?"
"মেয়েটা আমার কাজিনের বান্ধবী"
"তাইলে তো তোকে চিনার কথা, তোর থেকে টাকা চাইলো না কেন?"
"মেয়েই ভালো জানে"
.
.
.
.
.
.
বাইক নিয়ে বেশ জোরেই টানছিলাম ,হঠাত্ রাস্তার মধ্যে একটা জটলা দেখলাম,চরমভাবে ব্রেক কশলাম।বাইক রেখে সামনে গিয়ে জানতে পারলাম একটা মেয়ের রিক্সাকে বাস বলতে গেলে পিশে দিয়েছে।ভিড় ঠেলে দেখি আরে এতো সেই রূপবতী, মেয়ের হাত পা ভেঙ্গে গেছে প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে।আমি তত্ক্ষনাত সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই ওর ভার নিবো।কোন গাড়ি পাচ্ছিলাম না তাই কষ্ট আমার বাইকে করেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলাম ।ডাক্তাররা সবাই ওকে চিনে তাই আমার তেমন কষ্ট হয়নি,তারা বলেন,অবস্থা বেশি খারাপ।!CU তে রাখা হয়।তখনি ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়।আমার ক্রেডিট কার্ড টাকা আছে আর ৪ লাখ ১৫ হাজার।বাবা এখন ফ্রান্সে থাকার কথা আসবে আরো ১সপ্তাহ পর।তবুও ফোন দিলাম "বাবা তুমি কোথায় ?"
"এই তো ১ ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলাম।"
"তার মানে বাংলাদেশে ?"
"হ্যাঁ"
"বাবা তুমি এখনি ঢাকা মেডিকেলে আসো।"
"কেনো বাবা তোমার কোন সমস্যা হয়েছে ?"
"না বাবা তুমি আসো তারপর বলছি।"
"ঠিক আছে।"
যাক বাচা গেছে বাবা যখন আসবে তখন আর চিন্তা নেই।
এরই মধ্যে মেয়েটার কয়েকজন বন্ধু এসে হাজির ।তখনি ১ম মেয়েটার নাম শুনলাম,মেয়েটার নাম রিয়া।রিয়ার বন্ধুরা বান্ধবীরা আমার প্রতি বেশ কৃতজ্ঞতা দেখালো।ততক্ষনে বাবা হাজির এবং প্রথমেই বললঃ "ইমরান বাবা তোর কিছু হয়েছে?"
বাবাকে সব খুলে বললাম।সব শুনে বাবা প্রথমে টাকা পে করলো।এদিকে রিয়ার বাবা মা থাকে চট্টগ্রাম।ফ্লাইটে তাড়াতাড়ি আসার কথা কিন্তু বাংলাদেশ বিমান লেট করলো তাই আধ ঘন্টার যায়গায় ৩ ঘন্টা লেগে গেলো।আমি তাদের ওখানে বাসায় এলাম।সেদিন কেনজানি রিয়ার প্রতি বেশ ভালোবাসা জন্মে,জানি না এটা দয়া নাকি প্রেম।
সুস্থ হতে হতে ৩ মাস লেগে যায়।রিয়ার পরিবারের সাথে এই ৩মাসে সম্পর্ক বেশ ভালো হয়ে যায়।আমি তাদেরকে অনেক বলেছি আমার বাসায় থাকার জন্য কিন্তু তারা থাকেনি,৩ মাস থাকার জন্য তারা একটা ফ্ল্যাটই কিনে ফেলে।তারা আমাকে চট্টগ্রাম যাওয়ার আহ্বান জানায় কিন্তু কয়দিন পর ইয়ারলি এক্সাম,তবে তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করতে হলো পরীক্ষার পর যাবো।
.
১মাস পর পরীক্ষা শেষ হলো।আঙ্কেল ফোন করলো অর্থাত্ রিয়ার বাবা,তিনি বলেন আগামী শুক্রবার তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে অর্থাত্ রিয়ার বড় বোনের বিয়ে,আমাকে বুধবারের মধ্যে যেতেই হবে,আমিও সায় দিলাম যাবো।বিকালে এয়ারপোর্টে গিয়ে বুধবারের টিকেট বুক করি।এই ১ম চট্টগ্রাম যাবো।
.
.
.
.
.
.
ল্যান্ড করলাম।বেরিয়ে এসে দেখলাম আমার নামের প্ল্যাকার্ড নিয়ে একজন দাডিয়ে আছে গিয়ে বললাম আমিই ইমরান।লোকটি বললঃ"আমি ড্রাইবার ,নাম মোকলেস, স্যার আপামনির বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত তাই আসতে পারেন নি ।"
"সমস্যা নেই তুমি চলো"
চট্টগ্রাম জায়গাটা খুব সুন্দর মনে হচ্ছে ,তেমন একটা জ্যাম নেই।" আচ্ছা মোখলেখ বাসা কোথায়? অর্থাত জায়গার নাম ?"
"খুলশি"
.
.
.
বাড়িটা ডুপ্লেক্স।বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথে সবাই যেভাবে আপ্যায়ন করতে লাগলো মনে হয় যেন আমি তাদের মেয়ে জামাই।তারা বারবার বলছে আমার কারনেই রিয়া জীবন ফিরে পেয়েছে,আমি কি বলবো বুঝতেছিলাম না।কোনমতে বললাম আমাকে একটু ফ্রেশ হবে।সাথে সাথে আমাকে আমার রুমে নিয়ে গেলো।হাফ ছেড়ে বাচলাম,গোসল করে টেবটা নিয়ে যা একটু বসলাম সাথে সাথে দরজায় নক।
খুলে দেখলাম রিয়া।আজ একটা সবুজ শাড়ি পড়েছে চোখ চশমা।এ যুগের মেয়েরা শাড়িও পরে ?অবাক লাগলো।"ব্যস্ত ? ভিতরে আসতে পারি ?"
"অবশ্যই অবশ্যই ভিতরে আসুন"
ঢুকেই আমার হাতে একটা দশ টাকার নোট গুজে দিলো
"দশ টাকা ?কেন ?"
"ভুলে গেলেন? টিএসসির মোড়ে আপনার থেকে দশ টাকা নিয়েছিলাম"
"ও ! ভুলে গিয়েছিলাম"
"ভুলে গেলে বুয়েটে কেমনে পড়েন ?"
"জানি না"..........
...কথা বলছিলাম অনেকক্ষন এমনসময় দরজার ওপাশ কে জানি চট্টগ্রামের আন্চলিক ভাষা বলল,"রিয়া আফা তুই হডে গিয়্যো ?,আম্মা জ্বি তোয়ারে তোআর"
"আসছি তুই যা"
"আচ্ছা রাতে দেখা হবে,রাতে একটা ক্যাম্পফায়ারের পার্টি হবে এসো"
আমি হঠাত্ লক্ষ করলাম রিয়া আপনি থেকে তুমিতে নেমে গেছে।এটাতো ঠিক না তুমি হলেই প্রেম আর প্রেম মানেই বিয়ে আর বিয়ে মানেই বাবার মতো অবস্থা,অসম্ভব অসম্ভব !ঐ মহিলার অর্থাত্ আমার মার কথা মনে হতেই মাথা প্রচন্ড গরম হয়ে যায়।বাবাকে ফোন করলাম ,"বাবা তুমি কি এখন আমার সাথে একটু ভিডিও চ্যাট করতে পারবে ?"
"কেনো যা ফোনেই বললে হয় না ?"
"না হয় না,তুমি আসবা নাকি বলো,"
"আসছি"
.
.
.
"বল কি বলবি?"
"তুমি কি মা কে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলে ?"
"হঠাত্ এই প্রশ্ন কেনো ?"
"বাবা তুমি বলো ,"
"আমি পছন্দ করতাম কিন্তু তোর মা পছন্দ করতো আরেকজনকে ,তোর দাদা তোর নানা দুজন ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু তাই বিয়েটা হয়ে যায় ,বাকিটাতো তুই জানিস"
"বাবা আচ্ছা কাল কথা হবে"
"কেন"
"আজ ভালো লাগছে না"
"অসুস্থ ?"
"না"
"ও বুঝছি,বয়সটা আমিও পার করেছি ,আচ্ছা পরে কথা হবে এখন একজন ক্লায়েন্ট আসবে"
"বাই"
বাবার কথায় হোক আর আমার বিবেকের মাধ্যমেই হোক মেয়েদের সম্পর্কে আমার ধারনা পাল্টে যায় মনে হতে থাকে মেয়ে জাতিটা খারাপ না।
.
.
.
.
রাতে ক্যাম্প ফায়ারের চারদিকে সবাই বসে মজা করছিলো এমন সময় ছাদ থেকে আঙ্কেল খবর পাঠালেন যাতে আমি উনার কাছে যাই,
"ডাকছিলেন ?"
"আরে ইমরান আসো আসো,শুনলাম বিকালে এসেছো ,আসতে কোন সমস্যা হয়েছিলো ?"
"না,কোন সমস্যাই হয়নি ,ঠিক সময়ে ফ্লাই করেছে।"
"তাইলতো ভালোই,আমাদের চট্টগ্রাম আমাদের ঘর কেমন লাগছে?"
"খুব ভালো ,বেশ ফ্রেন্ডলি সবাই।"
"আমি আসলে ব্যস্ত ছিলাম বলে এয়ারপোর্ট যেতে পারিনি এজন্য দুঃখিত"
"না ঠিক আছে,"
"ড্রিংস করবে?"
"সরি আঙ্কেল ওরকম অভ্যাস নেই"
"মজা করেছি আমরাও অভ্যাস নেই,আচ্ছা তুমি নিচে যাও মজা করো।"
.
.
.
আজ বিয়ে শেষ হয়ে গেলো ।আমি ব্যাগ গোছাচ্ছি।"আসতে পারি?"
রিয়ার আওয়াজ
"আসো আসো"
ভেতরে এসে বসলো।আজো একটা শাড়ি পরেছে কিন্তু চোখে চশমা নেই।
তুমি ড্রাইভিং পারো ?
হ্যা পারি কেনো?
চলো
কোথায় ?
লং ড্রাইভে
আমার কার আর বাইক ঢাকায়
তোমার গাড়ি নিতে কে বলেছে আমাদের একটা গাড়ি নিলেই তো হয়
না আজ ইচ্ছা করছে না
আচ্ছা তুমি বসে থেকো আমি চালাবো
মেয়েতো দেখি নাছোড়বান্দা,অবশেষে রাজি হয়ে গেলাম।আঙ্কেলরা মনে হয় আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য বসে ছিলেন,রিয়া গিয়ে বলতেই ট্রেতে করে চাবি পৌছে দিয়ে গিয়ে।
.
.
.
রাস্তা চিনি না তবুও চালিয়ে চলছি।পাশে রিয়া ,ওকে খুব সুন্দর লাগছে।আজ মনে হচ্ছে রিয়াকে বিয়ে করলে কেমন হয়,আমি মনে হয় ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।সাথে সাথে প্রপোজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম ।রাস্তা ফাকা দেখে গাড়ি আর থামালাম না,ওতেই বলে দিলাম "! LOVE U,"
ওর REPLY,"! LOVE U 2"
হঠাত্
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
বাবা ফোন দিলো,
"হ্যা বাবা কি খবর?"
"এই তো ভালোই তুই কেমন আছিস?"
"বাবা তোমার সাথে একটা কথা বলবো ভিডিও চ্যাটে আসো।"
"আমি জানি তুই কি বলবি,আমি রিয়ার বাবার সাথে কথা কথা বলে ঠিক করেছি তোদের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার পর বিয়ে হবে।ভালো মতো ড্রাইভ কর।বেষ্ট অফ লাক।"
আমি অবিশ্বাস্য চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
5 yearz later,
ফ্রান্সে হানিমুন বেশ ভালোই লাগছে।সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো আইফেল টাওয়ারের নিচে সবার সামনে K.....না আর লেখলাম না।[ সংগ্রহীত ]