আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১২

''জোনাকিরা কথা বলে''

''জোনাকিরা কথা বলে''
By - শুভ্র


মোবাইলটা একটানা ভাইব্রেট করেই চলেছে।
এত ভোরে তাকে কেউ কল দেয়ার কথা না। ভাইব্রেশানের শব্দ মাথা ব্যাথা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে হাসানের। কয়েকদিন ধরেই ভোতা এক ধরনের ব্যাথা ভারী করে রাখছে মাথার পেছনটা। মনে হয় না আর ঘুম আসবে। ভোর ছটার আগে কোনো দিনই বিছানায় যেতে পারেনা সে,ইনসমনিয়া আছে তার। সারা রাত ছাদেই হাঁটাহাঁটি করে সময় পার করে।
দোতলা বাড়ির ছাদের ছোট্ট এই ঘরটাতে সে গত দুই বছর ধরে আছে, দরজা খুললেই খোলা ছাদ। তার লেখালেখির জন্য আদর্শ জায়গা।বিরক্ত করার কেউ নেই, শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে দূরে। যখন সন্ধ্যা নামে, আরও নিস্তব্ধ হয়ে যায় জায়গাটা যেন। বাড়ির দক্ষিন দিকের পুরোটা ছোট জঙ্গলের মত, ছাদের এক পাশ ঘেঁষে আরেক পাশে চলে গিয়েছে ঝোপের মত গাছগুলো। রাত বাড়ার সাথে সাথে সেখানে জোনাকির আলো দেখতে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে হাসানের মনে হয় জোনাকিগুলো তার কথা বুঝতে পারে, যখনি সে বের হয়, আলোগুলো কেমন যেন একটা ছন্দে চলে আসে, যেন তারা কথা বলছে।
ঘুমটা এখন খুব বেশী দরকার ছিল। কাল সারা রাতেও সে লেখাটা শুরু করতে পারেনি। অথচ গত সপ্তাহে লেখা জমার শেষ তারিখ ছিল।প্রভাত আলোর মাহমুদ ভাই নিতান্ত তাকে পছন্দ করেন বলে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, যেখানে ছাপাই হবে শুক্রবারে। সে যে লিখতে পারছে না শুধু তাই না, তার চিন্তাশক্তির ক্ষমতা কমে গিয়েছে বলে তার ধারণা ।শেষ দশ দিন ধরে কাগজ কলম নিয়ে শুধু বসে থাকে, চোখে শূন্য দৃষ্টি, তাকিয়ে থাকে সাদা কাগজ গুলোর দিকে। মাথা কাজ করে না তার।
৩২ টা এসএমএস।
একটানা ভাইব্রেশান এর কারনটা বোঝা গেল। না দেখেই বুঝতে পারছে কে করেছে, এধরনের কাজ একজনই করতে পারে। লীনা জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে শেষ বর্ষে পড়ছে। অনর্গল কথা বলতে পারে যে একটা মানুষ, এটা তাকে দেখলে বোঝা যায়। হাসান আজ পর্যন্ত তাকে কোনো বিষয়ে সিরিয়াস হতে দেখেনি। দেখা যাবে সে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে, কিংবা সবার সামনে হঠাৎ করেই এমন কিছু বলবে যেটা কেউ বলার কথা ভাবতেও পারেনা। মানুষকে বিব্রত করাই তার প্রথম লক্ষ্য। হাসানের মনে আছে একবার শুধু তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আচ্ছা, তুমি পড়ো কখন? যখনই তোমাদের বাসায় আসি, দেখি তুমি হয় থাকো মোবাইলে নয়তো গল্পের বই হাতে।
আপনার কি ধারণা মোবাইলে আমি কারো সাথে প্রেম করি হাসান ভাই? আচমকা লীনার পাল্টা প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় হাসান আর বুঝতে পারে প্রশ্নটা করা কত বড় বোকামি হয়েছে।
আপনি যদি ভাবেন আমি প্রেম করছি, একদম ঠিক ভাবছেন। যে কোনো সময়, কাজী অফিস থেকে আপনাকে কল দেব, আমার একজন সাক্ষী শর্ট আছে। লীনার চোখে চাপা কৌতুক।
হাসান চুপ করে থাকে, কিছু বলার পায়না। লীনার সাথে কথাতে না জড়ানোই ভাল, অযথা কে হেনস্থা হতে চায়।
ঘুমাতে চেষ্টা করে হাসান, লীনার এসএমএস নিয়ে তাকে বিচলিত মনে হয়না। তার মেসেজের কোনো অর্থ থাকে না কখনই,একই মেসেজ বার বার দিয়ে যায় সে। “আপনার জোনাকিরা আজ কথা বলেছে?”, “আজকে কোথায় ছিলেন সারাদিন?” সে কোথায় ছিল সারাদিন এটা জানার জন্য পঞ্চাশ বার মেসেজ দেয়ার কি আছে এটা তার মাথায় আসেনা।
হাসান উঠতে চেষ্টা করলো। মাথাটা যেন বিছানায় আটকে আছে, এত ভারী। মোবাইল হাতে নিল সে। তার ধারণাই ঠিক। লীনা লিখেছে “আজকে বাসায় আছেন?” এটা বত্রিশবার পাঠানোর মানে কি? লেখাগুলো হঠাৎ করে মনে হল বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। মনের ভুল নাতো, ঘুম না হওয়াতে সবকিছু মনে হয় এলোমেলো দেখছে।
দরজায় কি টোকা পড়ছে ? নাকি এটাও বিভ্রান্তি?
এত সকালে কেউ আসার কথা না।


লীনা আজ ক্লাস ফাঁকি দিয়েছে।
সে এখন দাঁড়িয়ে আছে হাসানের ঘরের সামনে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে ,তার কিছু কথা বলা দরকার হাসানকে। আজকে যে করেই হোক সেটা বলে যাবে। প্রথমবার টোকা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল, তেমন সকাল হয়নি। তার ওপর আজকে কুয়াশা একটু বেশী, দুহাত দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। এমন সময় কারও জেগে থাকার কথা না , সে জানে হাসানের রাত জাগা অভ্যাস আছে।
আবার টোকা দিতেই খুলে গেল দরজা, খোলা ছিল কিন্তু সে খেয়াল করেনি।
বাইরে থেকেই লীনা দেখতে পেল হাসানকে, বিছানায় কেমন অদ্ভুতভাবে যেন শুয়ে আছে।
আপনি যে আমার একটা মেসেজেরও উত্তর দিলেন না? ঘরে ঢুকেই খুব স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করে লীনা।
হাসান চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থাকে। সে এখনও বাঁকা দেখছে। লীনার মাথা যে শরীর থেকে বেঁকে যেন পাশে সরে গিয়েছে। এটা ভুল না, সত্যি সত্যি সে সব কিছু বাঁকা দেখছে।
আপনার কি শরীর খারাপ নাকি? চেহারা এমন দেখাচ্ছে কেন? লীনার মেজাজ আস্তে আস্তে খারাপ হচ্ছে, সে বুঝতে পারছে ইচ্ছা করেই হাসান তার মেসেজের উত্তর দেয়নি, সে জেগেই ছিল।
এবারও জবাব দিলনা হাসান, নিশ্চিত হল আসলেও সে বাঁকা দেখছে সব কিছু।হঠাৎ করেই মাথাটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে,মনে হচ্ছে লীনা কিছু বলছে, সে শুনতেও পাচ্ছে, কিন্তু বুঝতে পারছে না কথাগুলো।
আপনি আমার কথার উত্তর দিচ্ছেন না কেন? শীতল কণ্ঠে বলে লীনা।
আমি বুঝতে পারছি না, কি জানতে চাও তুমি?
আপনার কি শরীর খারাপ?
না, ঘুম হচ্ছেনা ঠিক মত, ঠিক আছি আমি।
মেসেজের উত্তর দেননি কেন আমার? দয়া করে কোনো সস্তা অজুহাত দেবেন না। হঠাৎ করেই লীনার প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে।
টাকা ছিল না মোবাইলে, একটু আগেই দেখলাম।
জানতাম এর থেকে ভাল অজুহাত আপনার কাছে নেই। চোখ এমন লাল কেন আপনার? জ্বর নাকি?
কিছু হয়নি লীনা। তুমি বলো কি জন্যে এসেছ? উঠে বসার চেষ্টা করে হাসান।
আজকে ক্লাস হবে না, বাসা থেকে বের হয়ে পড়েছিলাম। ভাবলাম আপনার এখানে আসা যায়। নির্বিকারে মিথ্যা বলে লীনা।
কি বলবে বুঝে পায়না হাসান।
আপনি কি আমার একটা কথা শুনবেন?
তাকিয়ে থাকে হাসান। তার চোখ ঘোলা।
আজকেই ডাক্তারের কাছে যাবেন আপনি, আজকেই। আমি কিছু জানিনা আপনাকে আজকেই যেতে হবে।
তুমি অযথাই চিন্তা করছো। ঘুম হলে ঠিক হয়ে যাবে।
না, আজকেই যেতে হবে, এখনই। আমি আপনাকে নিয়ে যাব। বলেই হাসানের হাত ধরে লীনা, তার কি হয়েছে সে বুঝতে পারছেনা, এত ছেলেমানুষি করছে কেন সে?
হাসানের মাথা ব্যাথা তীব্র হচ্ছে। হাত সরিয়ে নিল সে।
থমকে গেল লীনা।
শুয়ে পড়লো হাসান। সব কিছু আঁকাবাঁকা দেখছে সে । একবার মনে হলো যেন দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল লীনা। বিছানা দুলছে,দরজাটা যেন ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। সেদেখলোনা যাওয়ার সময় লীনার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।


দৈনিক প্রভাত আলোর অফিসে বসে আছে হাসান ।
মাহমুদ সাহেব একগাদা ফাইলের স্তুপের মধ্যে এলোমেলো ভাবে বসে আছেন, দুটো ফাইল হাতে, সামনে আরও ৩ টা। ফাইল থেকে চোখ না সরিয়েই তিনি বললেন, পারলে তাহলে শেষ করতে?
দেরীই করে ফেললাম মাহমুদ ভাই এবার, শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। হাসান চায়ের কাপ হাতে নিল।
ফাইনাল চেক করেছ? নাকি আবার করতে হবে?
নাহ, সব ঠিক আছে।
লিখেছ কিসের ওপরে ?
আত্মজিবনী ধরনের।
ফাইল থেকে মুখ তুলে চশমার ওপরে দিয়ে তাকালেন মাহমুদ, এগুলো এখন আর কেউ পড়তে চায়না হাসান, পাঠক চায় প্রেমের গল্প। যে সময়ের যে চাহিদা।
পারলাম না এবার, মাথা একদম শূন্য, পারলামই না। হাসানের মাথার পেছনের ব্যাথাটা আবার শুরু হয়েছে। আশে পাশের সব কিছু আঁকা বাঁকা হতে শুরু করেছে।
কালকের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। কালকে সন্ধ্যায় একটা কল দিও আমাকে।
মাথা নাড়ে হাসান, তার ব্যাথা বেড়েই চলেছে।
তোমার শরীরর কি খারাপ ? চোখ মুখ এমন শুকনো কেন?
হাসান উঠে দাঁড়ালো,তেমন কিছু না। শুধু মাথা ব্যাথা, ঘুম হলেই ঠিক হয়ে যাবে।
ভালো একটা ডাক্তার দেখাও, আমার পরিচিতি একজন আছে, তুমি আজকেই পারলে যাও, আমি বলে দেব।
আচ্ছা যাব, আজকে যাই মাহমুদ ভাই।কালকে কল দেব আপনাকে।

পৌষের ক্লান্ত বিকেল।
হাসান এলোমেলো ভাবে পা ফেলছে। তার মনে হচ্ছে সে বাসা পর্যন্ত যেতে পারবে না,রাস্তা বেঁকে যাচ্ছে পায়ের নিচে। শুকনো পাতা পায়ের নিচে পড়তেই অদ্ভুত একধরনের শব্দ হচ্ছে। ঝরা পাতার দিনগুলো এমনই হয়, বছরের অন্য সব সময় থেকে আলাদা। প্রকৃতি এসময় নিজেকে রহস্যের চাদরে ঘিরে ফেলে, বৃত্তবন্দী হয়ে যায় সে।

লীনার বাসায় যাওয়া দরকার। হাসান জানে তার কোনো ব্যবহারে মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে, কিন্তু কি সেটা বুঝতে পারছে না সে। ডাক্তারের কাছেও যাওয়া দরকার। চোখের অবস্থা খারাপ তার, দেরী করে হলেও বুঝতে পেরেছে সে। আশেপাশের মানুষগুলো কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকাচ্ছে তার দিকে, ভাবছে এত শীতে পাতলা একটা শার্ট গায়ে কিভাবে। তার ঠাণ্ডা লাগছে না, সে শুধু ক্লান্ত। প্রচণ্ড ক্লান্তি

তার শরীরকে অবশ করে দিচ্ছে। সে একটু ঘুমোতে চায়, প্রশান্তির একটা ঘুম।


পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত কিছু ঘটনা ঘটলো।
লীনার বিয়ে আচমকাই ঠিক হয়ে গেল। পাত্রপক্ষ এসেছিল দেখতে, কিন্তু মেয়ে তাদের এতই পছন্দ হলো যে আংটি পরিয়ে যাবে না, পরের শুক্রবার আকদ। লীনা পাগলের মত খুঁজছে হাসানকে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ। শেষ বারের মত কিছু বলবে সে হাসানকে। জানে এতে কাজ হবে না, কিন্তু নিজের কোনো ভুলের কারণে সে তার জীবনটা নষ্ট হতে দেবে না।
হাসান চোখের যে টেস্টগুলো করিয়েছিল,রিপোর্টে ২ দিনের মধ্যে অপারেশান করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।তার দুচোখেরই রেটিনা ৮০ ভাগ ছিঁড়ে গিয়েছে।এধরনের সার্জারিতে সাফল্যের ভাগ খুব কম, তাও তারা চেষ্টা করবে যাতে চোখের আলোটা ধরে রাখা যায়।
মাহমুদ সাহেব দুবার হাসানের খোঁজে বাসায় লোক পাঠিয়েছেন, তাকে পাওয়া যায়নি। কোথায় কেউ বলতে পারছে না। শেষে দরজার নিচে থেকে চিঠি রেখে রেখে এসেছেন।

ঘটনাক্রমে রিপোর্ট আর চিঠি দুটোই লীনার হাতে পড়লো।

আজ হাসানের অপারেশান ।

হাসপাতালের সাদা বিছানায় নিজেকে কেমন যেন বেমানান লাগছে ওর। কিছুক্ষন আগেই সুন্দর মত একজন ডাক্তার এসে তার চোখের প্রেসার মেপে গেলো। চোখে ড্রপ দিতে দিতে বলল, মাইনর সার্জারি, একদম চিন্তা করবেন না।

হাসানের চোখ বন্ধ, সে মৃদু হাসল।
আপনার সাথে কেউ নেই, কাউকে কি খবর দিতে হবে?
কেউ সাথে থাকা কি জরুরী? চোখের পাশ দিয়ে পড়তে থাকা পানি সে মুছতে মুছতে বলে হাসান।
না, আমাদের এখানে নার্সিং খুবই ভালো, তারপরেও আপন কেউ থাকাটা ভাল।
এমন কেউ নেই, স্বাভাবিক গলায় বলে হাসান।

সে জানলো না যেতে যেতে ডাক্তার কেমন অদ্ভুত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

হঠাৎ করেই খুব চোখ জ্বলছে, শুকিয়ে আসছে গলা। সিগারেট খেতে পারলে ভালো হত, সেটা কোনো ভাবেই সম্ভব না। এরা আর যাই দিক সিগারেট দেবেনা, তাও আবার সার্জারির ঠিক আগে। চিন্তাগুলোক মনে হচ্ছে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা লেখাটা কি শেষ পর্যন্ত ছাপা হবে? না হওয়ারই কথা, আসলেও আজকাল কেউ আর আত্মজীবনী পড়ে না। ছাপা হলে লীনা কি কিছু বুঝতে পারবে? পারবে বুঝতে যে হাসান চেয়েছিল সারা জীবন শুধু তার সাথেই জোছনা দেখতে? চেয়েছিল সেই মুখটি দেখতে জোনাকির আলোয়, তার প্রিয় মুখখানি।

চোখ বন্ধ করলো হাসান। ক্রমশ সব কিছু ঘোলাটে হয়ে আসছে।এমন একটা অন্ধকার জগতে সে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যেখানে দ্বিতীয় কারো অস্তিত্ব নেই।

লীনা হাসানের ঘরে বসে আছে।
আজকে তার বিয়ে, সে একেবারে চলে এসেছে। তার হাতে রিপোর্ট আর মাহমুদ সাহেবের চিঠি। সব শেষে সে চিঠিটা খুলল।

হাসান,
তোমার লেখা এবছর প্রথম হয়েছে, সামনের সংখ্যায় তোমার সাক্ষাৎকার যাচ্ছে। সাথে চলতি সংখ্যার একটা কপি দিয়ে দিলাম।
জানতাম তোমার পথ একদিন তুমি ঠিকই বের করে নেবে।

দোয়া রইলো।
মাহমুদ হাসান

পুনশ্চঃ একজন প্রকাশক যোগাযোগ করেছেন, ওনারা তোমার লেখা নিয়ে বই করতে চাচ্ছেন সামনের বই মেলায়। ঠিকানা দিলাম, যোগাযোগ করে নিও।

লীনা ছাদে বের হয়ে এল। তার শরীর থর থর করে কাঁপছে। সে নিজেকে সামলাতে পারছেনা। জোনাকির আলো তার চোখের পানিতে পড়ে চিক চিক করছে, সব জোনাকিরা আজ কথা বলছে যেন।
--------------------------------------------------------------------------------
*** হাসান আর কোনো দিন লিখতে পারেনি, অপারেশানের তিন মাস পর দুটো চোখই হারায় সে। জোনাকির আলোয় তার প্রিয় মুখটা তার আর দেখা হয়নি। লীনা হাসানকেই বিয়ে করে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর তারা জোনাকির সাথে কথা বলে, এসময় লীনা শক্ত করে হাসানের হাত ধরে থাকে।
---------------------------------------------------------------------------------------------

[ শুভ জন্মদিন লীনা, যে মায়া নিয়ে তুমি পৃথিবীতে এসেছ, তোমার প্রিয়জনদের তার দরকার আছে... ]