আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১২

গল্প-৩

একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালবাসত কিন্তু
মেয়েটি ছেলেটিকে ঘৃনা করত...

ছেলেটি বললঃ আমি তোমার ঘৃনাকে ভালবাসায় পরিনত করব এবং আমি তোমার বাড়ির সামনে আগামী ১০০ দিন দাড়িয়ে থাকব।

কখনো প্রচন্ড রোদ ওঠে ,কখনো বৃষ্টি হয়
কিন্তু
ছেলেটি সেই মেয়েটির বাড়ির সামনে দাড়িয়ে রইলো।

৯৯ তম দিন থেকে মেয়েটি
ছেলেটিকে ভালবাসতে শুরু করল।

মেয়েটি স্বিদ্ধান্ত নিলো সে ছেলেটিকে তার ভালবাসার কথা জানাবে।

১০০ তম দিনে সূর্য ওঠার সাথে সাথে মেয়েটি
ছেলেটি যে জায়গায় দাড়িয়ে ছিল সেখানে গেল
কিন্তু
ছেলেটি সেখানে ছিল না !

সে একটি "চিরকুট" খুজে পেল ,
যেখানে লেখা ছিলঃ

“তুমি বাড়িতে বসে যখন রোদ বৃষ্টি উপভোগ করছিলে ঠিক সেই সময় গুলো তে তোমার পাশের বাড়ির মেয়ে টি আমায় ভালবাসতে শুরু করে

সে আমায় ২৭ দিনের দিন থেকে বলছিল সে আমায় ভালোবাসে আমি ৯৯ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি
এর মাঝে সে প্রতিদিন জানিয়েছে
সে আমায় ভালোবাসে

অবশেষে
আমি আমার সত্তিকারের ভালবাসা খুঁজে পেয়েছি

তাই
আমি তোমার পাশের বাড়ির মেয়েটিকে কথা দিয়েছি
তোমার মাঝে যে পৃথিবী খুঁজেছিলাম
ঐ মেয়ে আমার মাঝে খুঁজে
ভালো থেকো ”

মোরাল :
যখন তুমি সত্যিকারের ভালবাসা পাও
তাকে সন্মান করতে শেখো ।
কারন
আজ যা তুমি খুব সহজে পেতে পারো ,
হয়ত কাল তা তুমি হাজার কাদলেও পাবে না।

-কিছুটা প্রেম আর বাকীটা ভালোবাসা ।।

-কিছুটা প্রেম আর বাকীটা ভালোবাসা ।।

মুখ ভার করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো বৃষ্টি। আমাকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে
ধরে বলেই ফেললো , " আমি তোমাকে ভালোবাসি" ; ঘটনার আকস্মিকতায় আমি ততক্ষনে বোকা বনে গেছি। চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে নাকি। কোনভাবে বৃষ্টির বাহুবন্ধন ছারিয়ে দৌড়ে পাশের ঘরে আম্মুর কাছে গেলাম। সেখানে আম্মু আর বৃষ্টির মা গল্প করছিলেন। আমি আম্মুর কোলে যেয়ে কাঁদো কাদোঁ হয়ে বলে দিলাম, "আম্মু বৃষ্টি বলে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে। আমাকে ছারা নাকি বাঁচবে না। আমার এখন কি হবে আম্মু। ও কত পঁচা মেয়ে।" আমি হাউ মাউ করে কেঁদেই ফেললাম। আমার কান্না না থামিয়ে দুই মহিয়সী নারী তখন আমার কথা শুনে অট্টহাসিতে ব্যাস্ত।

আমার বয়স তখন সাত কি আট বছর আর বৃষ্টি পাঁচের আশেপাশে। সেই বয়সে আমি সুকুমার রায় কিংবা তিন গোয়েন্দা পড়ে বিশাল জ্ঞানী আর বৃষ্টি সারাদিন বাংলা আর হিন্দি সিনেমা দেখে ভীষন রোমান্টিক মেয়ে। আমাকে দেখলেই গান শুরু করতো, " তুম পাস আয়ে, ইউ মুজকো রায়ে..." বৃষ্টির আচার আচরন তেমন পছন্দ না করলেও বৃষ্টিকে ছারা আমার কোন উপায় ছিল না। চারদেয়ালের বন্দী জীবনে বৃষ্টিই ছিল আমার খেলার সাথী অথবা বলা যেতে পারে সবথেকে ভালো বন্ধু। আমি যখন ওকে হারকিউলিসের অভিযানের গল্প শোনাতে চাইতাম ও উল্টা আমাকে হিন্দী মুভির রিভিউ শুনিয়ে দিতো। খুব ভালো নাচতে পারতো, হাত পা কোমড় দুলিয়ে নেচেও দেখাতো। মাঝে মাঝে গলার ওড়না ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কি একরকমের নাচ দিত যা সেই বয়সে আমার জ্ঞানের বাইরে ছিল। দু একবার সর্প নাগিনের নাচ দেখার সৌভাগ্যও আমার হয়েছিল।

আমার সুহৃদয় সম্পন্না আম্মাজান বৃষ্টিকে অতিশয় পছন্দ করতেন। বৃষ্টিকে ঘরে তোলার বেশ ইচ্ছেও তার মাঝে দেখা যেতো। হয়ত নিজের মেয়ে ছিলনা বিধায় এই দুষ্ট মেয়েটিকে অনেক বেশি আদর করতেন। ছোট বেলা থেকে দেখেছি বৃষ্টি ওদের বাসায় না থেকে আমাদের বাসাতেই থাকতো বেশি। বৃষ্টির বাবা মাঝে মাঝে রসিকতা করে বলতেন, "এখন থেকেই এই বাড়িতে ঘর সংসার বেঁধে ফেলেছো, যখন একেবারে তোমাকে এই বাড়িতে পাঠিয়ে দেব তখনতো বাবা মা কে চিনবে না।" এই কথায় বৃষ্টি লজ্জিত হওয়ার পরিবর্তে আমার দিকে তাকিয়ে হাফ ইঞ্চির ঠোট দুই ইঞ্চি করে একটা হাসি দিতো। ওর সেই হাসির রহস্য উদঘাটনের কোন আভাস আমি তখনো টিনটিন সিরিজে পাইনি।

এভাবেই দেখতে দেখতে বেশ কিছু বছর কেটে যায়। আমি তখন দশম শ্রেনীতে পড়ি আর ও ক্লাস সেভেনে। তখনো আমাকে জ্বালাতন করা থামেনি। ও যখন আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো, ওকে দেখতে আমার কেমন যেন কার্টুন কার্টুন মনে হতো। হাতে পায়ে লম্বা হলেও দুষ্টামি কমেনি ওর। একদিন পরীক্ষার আগে আমি কোচিং এ। ও কখন যে একটা লাভলেটার লিখে আমার টেবিলে রেখে গেছে আমি জানতামই না। আমার বাবা কখনো আমার খোঁজ খবর না নিলেও সেদিন কি মনে করে আমার ঘরে যেয়ে এই ভয়ংকর মেয়ের লাভলেটার উদ্ধার করে। আমি যখন বাসায় ফিরলাম দেখি যে দুই ফ্যামিলি একত্র হয়ে বসে আছে। আম্মু আমার দিকে লাভলেটারটা বাড়িয়ে দিলেন। চিঠির শেষে ছোট্ট করে প্যাচের হাতে লেখা, " ইতি , তোমার ভালোবাসার বৃষ্টি।" আমি এবারও ঘটনার কিছু বুঝতে না পেরে কেঁদেই ফেললাম, একটু পরে দেখি বৃষ্টিও আমার সাথে কান্নাকাটি জুরে দিয়েছে। দুজনকে কান্না করতে দেখে দুজন বাবা আর দুজন মা কিভাবে এত হাসতে পারে সেটাও আমি এখনো বুঝতে পারি না।

এরই মাঝে বছর দুয়েক পেরিয়ে যায়। আমি কলেজে তখন ভবিষ্যত গড়ায় ব্যাস্ত। নিক্তি আর ক্যালভিন স্কেলের সুক্ষ রিড খাতায় টুকে স্যারকে দেখিয়ে মার্ক বাড়ানো ছারা তখন আর কোন লক্ষ্য স্থির করতে পারছিলাম না। হঠাৎ করেই একদিন আমার জন্মদিনে বৃষ্টির দেয়া গিফট দেখে ওর কথা মনে পরে গেলো। কিছুদিন থেকে যে ও আমাকে জ্বালাতন করছে না সেটা আমি বুঝতেই পারিনি। কেন যেন ওকে দেখতে খুব ইচ্ছে হলো সেদিন। আর সেদিন বিকেলেই আমার জীবনের সব থেকে বড় হৃদকম্প হয়েছিল, রিকটার স্কেলে পরিমাপ করলে যার মাত্রা নয় ছারিয়ে যাবে।

সেদিন বিকেলে ছাদে বসে আমি ভাবছিলাম বৃষ্টির আবার অসুখ করলো নাকি। নইলে যে মেয়ে সারাদিন আমার পাশে ঘুর ঘুর করে সে হঠাৎ করে কোথায় চলে যাবে? হঠাৎ করেই দেখি কোন একটা মেয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আমি যেদিকটায় তাকিয়ে ছিলাম সেদিকে তাকিয়ে আছে। পড়নে লাল পারের শাড়ি, ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক, চোখে বেশ করে কাজল দেয়া, চুল ছেরে দেয়াতে মেয়েটাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছিলো। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম এইটা বৃষ্টি। আমি পুরাই আহাম্মক হয়ে গেলাম। এই কয়দিনে বৃষ্টি কত বড় হয়ে গেছে,আবার তার উপরে পুরাই অপ্সরী ছারিয়ে গেছে! আমি কাছে যেয়ে আস্তে করে বললাম," বৃষ্টি, তোকে আজ দেখতে খুব সুন্দর লাগছেরে, মনে হচ্ছে আধোনীল আর আধো গোধূলীর আকাশ থেকে কোন রাজকন্যা নেমে এসেছে" ; লজ্জায় টমেটোর মত মুখ করে দৌড়ে পালিয়ে যায় বৃষ্টি।

এরপর আমার ধারে কাছেও ভিরতো না বৃষ্টি। কোন কারনে ভুল করে যদি আমি ওর সামনে পরে যেতাম লজ্জায় মাথা নীচু করে রাখতো। আমি এক সময় অনুভব করলাম এই মেয়েটার সাথে আমার হৃদয়ের কোন সম্পর্ক আছে। আমি ঘুমাতে গেলে ঘুমাতে পারি না, রাস্তায় হাটার সময় বিরবির করে কি যেন বলতে থাকি, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বৃষ্টিদের বাসায় উঁকিঝুকি মারি ওকে একটু দেখার আশায়। বুঝলাম আমি শ্যাষ।

এরই মধ্যে আমি চুয়েটে চান্স পেয়ে যাই। ঢাকায় হয়নি বলে মনে তখন বিশাল ক্ষত। সবচেয়ে বেশি কস্ট হচ্ছিল বৃষ্টিকে দেখতে পারব না ভেবে। ইচ্ছে ছিলো যাওয়ার আগে বৃষ্টিকে ভালোবাসার কথা বলবো, কিন্তু আমার হৃদয়ের অপারেটিং সিস্টেম থেকে বলতে লাগলো, " আপনার বুকে যথেষ্ঠ পরিমান সাহস জমা নেই, অনুগ্রহ পূর্বক রিচার্জ করে আবার আসুন, ধন্যবাদ।"

প্রতি সেমিস্টার শেষ করে সোজা ঢাকায় চলে যেতাম, কিন্তু তখনো আমি সাহসের ফার্স্ট লেভেল পার করতে পারিনি। টুকটাক কথা চলতো আমাদের, কিন্তু সাহস করে ভালোবাসি শব্দটা বলতে পারতাম না। আমি তখন বুঝতে পারি যারা সত্যিকারের ভালোবাসে , ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রথমবার এই শব্দটি বলা কতবড় দুষ্কর কাজ। কনকনে শীতের মাঝেও ওকে দেখলে আমি ঘামিয়ে যেতাম। এভাবেই লুকোচুরিতে চলতে থাকে দুটি মনের নিরন্তর ভালো লাগার খেলা। কিন্তু হঠাৎ করেই সব কিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেলো।

আমি তখন ফাইনাল দিয়েছি। দুইদিন পরে রেজাল্ট আসবে। আর মাত্র দুইদিন পরে আমি গ্রাজুয়েট হতে যাচ্ছি ভাবতেই কেমন যেন শিহরন জাগে গায়ে। এরই মধ্যে আমার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। মেসেজে লিখা ছিলো, "কাল আমার বিয়ের কথাবার্তা পাকা করবে। যদি ভালোবাসো ফিরে এসো; বৃষ্টি।" আমি স্তদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। পাশে থেকে বন্ধু ইমন ঝুকে পরে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো," কিরে খিজ খাইলি কেন? কি হইছে?" আমি অস্ফুস্ট স্বরে শুধু বললাম ,"বৃষ্টির বিয়ে।"

বন্ধু যে কত মহান হতে পারে আমি সেদিন হারেহারে বুঝতে পেরেছিলাম। রাত সাড়ে চারটায় ইমন আমাকে নিয়ে মোটরসাইকেল হাকিয়ে রওনা দিলো বাস কাউন্টারে। যেয়ে দেখি লাস্ট বাস ছেরে গেছে। সকাল ছারা উপায় নাই। কি আর করা, দুই বন্ধু মোটর সাইকেল নিয়েই রওনা দিলাম ঢাকায়। আমি কিছুতেই বৃষ্টিকে হারাতে চাই না। ছোট বেলার ছোট ছোট সব স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছিল। কেউ যদি আমাকে রচনা লিখতে বলে চাইল্ডহুড মেমরী নিয়ে তাহলে সাত পৃষ্টা জুড়েই থাকবে বৃষ্টির কথা। সেই বৃষ্টিকে আমি হারাতে বসেছি !

সন্ধ্যায় ঠিক আগে আগে আমার বাসার কাছেই পৌছলাম। দৌড়ে আমাদের বাসায় না যেয়ে সোজা বৃষ্টিদের বাসায় ঢুকলাম। বাসা ভর্তি মেহমান। কিছু অচেনা লোক। আমি তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। হাপাতে হাপাতে মুরব্বিদের সামনে যেয়ে পাগলপ্রায় হয়ে সিনেমার স্টাইলে বলে ফেললাম,"এই বিয়ে হতে পারে না। I Love Her From Childhood !"

পাশে তাকিয়ে দেখি আমার বাবাও বসে আছে। মুরুব্বিরা সব একে অপরের দিকে তাকাতে শুরু করেছে। আমি পাগলের মত কিসব বলে ফেলেছি। আজ এখানে নির্ঘাত কোন লঙ্কাকান্ড না হয়ে যায় না। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘরে হাসির রোল পরে গেলো। কেউ হাসি থামাতে পারছে না। আমি ভাবলাম লং জার্নিতে গায়ে মুখে কালি লেগেছে তাই হয়ত হাসছে, হাত দিয়ে গাল ঘষতে লাগলাম। পরে যেয়ে জানতে পারলাম সেদিন বৃষ্টির সাথে আমারই বিয়ের কথা হচ্ছিল।

পাশের ঘরের জানালায় বৃষ্টি তাকিয়ে ছিল। পা টিপে পেছন থেকে যেয়ে ওর ঘাড়ে হাত রাখলাম। বৃষ্টি মৃদু কেঁপে উঠলো। আজ ওকে অপ্সরীর মত দেখাচ্ছে। ওর গাল টিপে দিয়ে বললাম," এখনো দুষ্টুমী কমেনি তোমার?" লজ্জা রাঙা মুখ ঢাকতে আমার বাহুডোরে এসে ধরা দিলো আমার স্বপ্নের অপ্সরী। দুহাতে জরিয়ে নিলাম সারা জীবনের জন্য। আজও দুষ্টুমী কমেনি ওর বরং ভালোবাসা বেড়েছে।

[সংগ্রহীত ]

“এক অজানা ভালবাসা”



এক অজানা ভালবাসা
মোঃমাসুদ রানা

এই রিফাত দোস্ত একটা নাম্বার দে না।দোস্ত তুই না আমার দোস্ত আমার এই হাল দেখে কি তোর একটু মায়া হয় না।তুই যখন তোর বউরে নিয়ে আমার সামনে দিয়া লাইন মারস আমার কি একটু খারাপ লাগে না।আমারো তো মন চাই তোর মত একটা গার্লফ্রেন্ড আমার থাকবে।আমাকে অনেক ভালবাসবে। অনেক জোরা-জোরি করার পর রিফাত আমাকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ইমা এর নাম্বার দিল। ইমা সম্পর্কে প্রথমে এতটা জানতাম ন।সে যাই হোক নাম্বার পেয়েছি মনে হচ্ছে আলাদিনের একটা প্রদিপ পেয়েছি।সাথে সাথে নিচে চলে গেলাম রির্চাজ করব বলে।১০০ টাকা রির্চাজ করেছি অনেকক্ষন কথা বলব।ফোন দিয়ে কি বলব আগে তো এমন কারও সাথে আগে তো কথা বলিনি।তো রাতে কল দিব ভাবলাম।সন্ধ্যা ৭ টা বেজে গেছে এসব ভাবতে ভাবতে।রিফাত যদি জানতে পারে এখনো কল দেইয়নি।আমার পেইসটিজ এর ১২x১২=২৪ টা বাজাবে।তো ৮ টায় কল দিলাম।
ঐ পাশ থেকে মিষ্টি একটা গলা শোনা গেল।
হ্যালো কে বলছেন?
কি বলব বুঝতেছি না।হাত-পা এর দিকে তাকালাম দেখি কাপছে।তো পেসটিজ এর কথা ভেবে সাহস করে বলেই ফেললাম ভূত এর রাজ্যের ভূত।
আপনি ভূত হোন আর জাই হোন কে আপনি কার কাছে ফোন দিছেন এবং কেন?
প্রথমের মিষ্টিগলাটা এমন তেতো হয়ে গেল নিমিষেই। আর কথা না বলে লাইন কেটে দিলাম।
সকালে একটা মেসেজ পাঠালাম।কোন রিপ্লাই আসলো না।আমি প্রতি ঘন্টায় মেসেজ পাঠাতাম।জানতে চাইতাম কি করছে আর ভালবাসার কিছু উক্তি তো আছেই।একদিন ওপার থেকে রিপ্লাই আসলো কে আপনি এত মেসেজ পাঠান কেন।সত্যি করে বলেনতো আপনি কে?
যাক ভাগ্যের লাড্ডু তাহলে ফেটেছে।তো শুরু করলাম এ জার্নি বাই প্রেম।
প্রতিদিন আমাদের কথা হতো।আমরা আমাদের সম্পর্কে সবই বলতাম।আমার আসল পরিচয় টা বাধে।আমি ইমা এর প্রতি আমার দুর্বলতা লক্ষ করলাম।সত্যি আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি।যাই হোক ইমা যতদিন আমাকে না বলবে আমিও ওকে বলব না।তখন সময়টা ছিল ২০১১ সাল।আমি রাফি কে বললাম দোস্ত ইমার সাথে একদিন দেখা করিয়ে দিবি।
রাফি বলল কথা না বলিস তোরা নিজেরাই গিয়ে দেখা কর না।না দোস্ত আগে ওকে দেখব ও আমাকে দেখে পছন্দ করবে কিনা। তাই পরদিন রাফি এর সাথে ওর ভার্সিটিতে গেলাম।সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল রাফি।হঠাত একটা মেয়ে এসে বলল আরে দোস্ত তোর বউ কই কখন থেকে খুজতেছি।রাফি আমাকে চোখের ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে দিল এটাই ইমা। এক পলকে তাকিয়ে রইলাম।এ যেন আকাশ থেকে নামানো এক অপরূপ সুন্দরী পরী।আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল রাফি।ইমা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড শাকিল।ইমা তো মুখ চেপে হাসতে শুরু করল।রাফির কানে কানে কি জানি বলে হাসতে শুরু করল।পরে রাফির কাছে শুনতে পেরেছিলাম আমাকে আবুল বলেছে।
ইমাকে আর কল দেইয়নি রাগ করে তাই রাতে ইমা আমাকে মেসেজ করল কি আজ কোন মেসেজ পাঠাওনি কেন।রিপ্লাই দিলাম মেসেজ এর আজ অনেক মন খারাপ।ইমা আমার কথা শুনে আমাকে হাসানোর জন্য তার ভার্সিটিতে আজ দেখা আবুল মার্কাছেলেটির কথা বলছে।আমার তো গা টা আরও জ্বলে উঠছে।সে তো জানে না সেই ছেলেটিই আমি।আর কথা বলতে ইচ্ছা করছে না তাই লাইন কেটে মোবাইল এর সুইচ অফ করে ভাবতে লাগলাম।মনে পড়ে গেল শাহরুখ খানের রাব নে বানা দে জুড়ি ছবির কথা।আমাকেও স্মার্ট হতে হবে।বর্তমানের কথা ভেবে তো বাবাকে বললাম আমার এইভাবে ক্লাসে যেতে ভাল লাগে না।বাবা গ্রামের মানুষ সহজ সরল ছিল তাই যা চাইতাম তাই দিত।বাইক কেনার জন্য টাকা পাঠিয়ে দিল।ভাল একটা বাইক কিনেফেললাম।কাটা-ছেড়া পেন্ট আরো কত কি।সবি ইমার জন্য।ওকে দেখাব আমার ভালবাসা কাকে বলে সংজ্ঞা সহ উদাহরন।আমার ভার্সিটিতে আমাকে নিয়ে সবার মুখে এখন আমার বিশাল পরিবর্তন এর কথা শুনা যায়।
ইমা আমাকে প্রায় বলত দেখা করতে কিন্তু সাহস হয়নি যদি সেই আবুল মনে করে আমাকে রুটির ছ্যাক দেই।ইমাকে বলতাম ভূতেরা দেখা করতে পারে না।দিন যত যায় আমাদের সম্পর্ক আরোও গভীর হতে থাকল।আজ তারিখটা ০৭-১১-২০১১।রাফি কে বললাম চল আজ আবার তোর ভার্সিটিতে যাব।আবুল যে সুপার ম্যান হতে পারে তার একটা প্রমান তো আমার দিতে হবে।যেই আবার তার ভার্সিটিতে গেলাম অন্যরা তো আমাকে আর আমার বাইক দেখে তাকিয়ে আছে কিন্তু যখন ইমার সামনে গেলাম।একটা হেব্বি মুডে দাঁড়িয়ে আছি।কিন্তু জানতাম না আবুল তো আবুলি।আবারও আমাকে দেখে হাসতে শুরু করল।আর এক মূহর্ত না।বাসায় এসে মোবাইল অফ করে শুয়ে পড়লাম।আজ ১০ তারিখ মোবাইল অন করলাম।দেখি মেসেজ এর অভাব নাই।সব গুলো পড়ে আমার তো অনেক ভাল লাগছে।সব গুলাই ছিল ইমার।রাফির কাছে ইমার কথা শুনতে গেলাম।রাফি বলল আজ ২দিন দরে দেখছি ও সবসময় আনমড়া হয়ে বসে থাকে।কারো সাথে কথা বলে না।আর কত দেরি করবি নিজের পরিচয়টা এখন দিয়ে দে।অনেক ভাবলাম যা হবার হবে এইবার বলেই দিব আমার নাম শাকিল।আর আমিই সে আবুল।আর দেরি না করে ইমাকে ফোন দিলাম।আমার লাইন কেটে দিচ্ছে আজব তো।আবার দিলাম কেটে দিচ্ছে।কিছুক্ষন পরে কল ধরল।ঐ পাশ থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম।আমার খুব খারাপ লাগছে ওর কান্না দেখে।ওর কথা আমি তোমাকে খুন করব ভূত হয়েছো না।সামনে এসো একবার তোমাকে চাপড়াইতে চাপড়াইতে ভূতগিরি ছুটাব।অনেক কষ্ট করে তার রাগ থামালাম।ওকে নিজে থেকেই বললাম চল কাল দেখা করি।ও তো আমার কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারছে না।তো ঠিক আছে আমরা কাল পার্কে দেখা করব।তুমি একটা নীল শাড়ী পরে আসবা। আর আমি কি পরব বললাম না ইমা জানতে চাওয়ার পরেও।
পরদিন একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়লাম।কারন সাদা রঙ ইমা ও আমার খুব পছন্দ।বাসা থেকে বেরিয়ে ইমাকে ফোন দিলাম ইমা বলল ও আমার আগেই এসে পরেছে।এখন ৯ টা বাজে।আজ ১১ টা গোলাপ ফুল কিনলাম ইমাকে দেওয়ার জন্য।১০.৩০ বাজে এখন পার্কে প্রবেশ করলাম।ইমাকে খুজতেছি।অবশেষে পেলাম।নীল শাড়ীতে ওকে খুব সুন্দর লাগছে।আমাকে আসতে দেখে ও মুচকি মুচকি হাসতেছে।ওর কাছে গিয়ে বললাম আপনি আমাকে দেখলে এত হাসেন কেন।
ইমা বলল হাসি আসে তাই।ইমা আরো জিজ্ঞাসা করল আপনি আজ পার্কে কেন কেউ আছে নাকি।এই বলে আরো হাসতে লাগল।কিছু বললাম না এক পলকে তাকিয়ে রইলাম।এই যে মিঃ এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড না।এই বলে ইমা মোবাইল বের করে কল দিতে লাগলো।১১.১১ বাজে  আমি ইমাকে বললাম ফুল গুলি একবার দরবেন ও দরল।
আমি ইমাকে ১১ বার I LOVE YOU বললাম।ইমা আমার কথা শুনে তো অবাক মোবাইলটা বের করে ওর কল রিসিভ করে বললাম আমাকে চিনতে পারছেন আমিই হচ্ছি সেই ভূতের রাজ্যের ভূত ।ইমার চোখ দিয়ে পানি পরতে শুরু করল।আমাকে কিছু না বলে ওঠে চলে যেতে লাগল।আমি বসে পরলাম আর ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।কিছুক্ষন পর আমার পাশে কে যেন এসে বসল।এই যে মিঃশাকিল ওরফে ভূতের রাজ্যের ভূত আমাকে চিনতে পারছেন।আমি ইমা না আমি ইমার পেত্নী।এখন তোমার রক্ত পান করব আবুল ভূত কোথাকার।এই বলে ওর মাথাটা আমার বাহুর সাথে জড়িয়ে ধরল।
আজ প্রায় ১ বছর হয়ে গেছে।আজ ১১-১২-১২ তারিখ আজ আমাদের বিয়ে।এখন রাত ১২ বাজে ওকে১২.১২ তে আবারো সেই দিনের কথা মনে করিয়ে  গুনে গুনে ১২টা গোলাপ দরিয়ে ১২ বার I LOVE YOU বললাম. ওর কান্নাবেজা চোখে অপলক দৃষ্টিতে সুখের আবেশে ও আমাকে জড়িয়ে ধরল।
তাই সবসময় বলি ইমাকে ভালবাসি তাই ভালবেসে যাই।

(আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন)

"বাঁদর"

"বাঁদর"
এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব। বেহায়া, বাঁদর। যা ভাগ, নাহলে এইখানেই পাবলিকের হাতে গণধোলাই খাওয়াব।

শুনে ৩২টা দাঁত বের করে একটা ভিলেন টাইপ হাসি দিলাম। হাসিটা বিফলে গেল। অন্তরার ভ্রুকুটি আরও বাড়ল। বিরক্ত হয়ে বলল তুই যাবি? নাকি মাইর খাবি?
মুখটা একটু ভোতা করে বললাম “দুলাভাইয়ের সাথে একটু দেখা করেই যাই?”

আমিই আজ প্রথম দেখা করতে এসেছি। প্রথম দেখায় এসে যদি দেখে তোর মতো এক বাঁদরকে সাথে এনেছি তাহলে আমাদের প্রথম দেখাই শেষ দেখা হয়ে যাবে। যা ফুট............ অন্তরার রাগি উত্তর। মুচকি হেসে চলে আসলাম। মনে মনে বললাম সুন্দরী অনেক কিছুই তুমি জাননা। এই বাঁদর যে কত বড় বাঁদর সেটা যেদিন জানবে সেদিন তোমার চেহারাটা দেখার মত হবে ............

চলুন গল্পটা বোঝার জন্য আমরা কিছু পেছনে যাই। আমি তপু। বাঁদর বিশেষণ ইতিমধ্যে অন্তরার মুখে শুনেছেন, আরও এরকম অনেক সুন্দর সুন্দর বিশেষণ আমার বন্ধুমহল অকৃপণ হাতে আমাকে দান করেছে। মিথ্যা বলব না, পড়ালেখা ছাড়া বাকি সব বিষয়েই আমি আমার বিশেষণের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছি শুধু পড়াশুনায় কিভাবে কিভাবে জানি একটু বেশিই ভালো হয়ে গেলাম, যদিয়ও এ নিয়ে আমাকে বিস্তর টিটকারি শুনতে হয়। যাই হোক, গল্পে ফিরে আসি গল্পের শুরু ফেইসবুক থেকে আমার একটা গ্রুপ ছিল, “মুখোশে ঢাকা কবি” নামে। আমি লুকিয়ে লুকিয়ে কবিতা লিখতাম। লুকিয়ে বলছি কারণ বন্ধুমহলে আমার যে ইমেজ,যদি তারা জানে আমি কবিতা লিখি তবে দিন দুপুরে আমার বলাৎকার তথা ইজ্জত-হরণ হয়ে যাবে সে গ্রুপ চালানোর জন্য আমার একটি ছদ্ম আইডি ছিল। গ্রুপটা অনেক পপুলার ছিল। গ্রুপে আমাদের ক্লাসের একটি মেয়ে নিয়মিত পোস্ট করত, আমার কবিতায় কমেন্ট করত। মেয়েটি আর কেউ নয়, অন্তরা আমাদের সেকেন্ড গার্ল। ফাস্ট কে ছিল জানেন? ঠিক ধরেছেন, সেই অধম আমিই ছিলাম।অন্তরা সারাদিন পড়ত, পণ্ডিত গ্রুপ এর সাথে গ্রুপ-স্টাডি করত। আমাকে দুচোখে দেখতে পারত না। সেকারণে গ্রুপে তার সকল কমেন্ট এর উত্তর খুব মজা করে দিতাম । এভাবেই ফেইসবুকে তার সাথে আমার পরিচয় ছদ্মনামের আড়ালে । দিন গড়িয়ে মাস বছর গেল । আমরা তখন থার্ড ইয়ারে ।ততদিনে ভার্সিটিতেও অন্তরার সাথে ভালো খাতির , খুব জ্বালাতন করতাম । সে আমাকে ফেইসবুকে সব বলত , তার কথা , ভার্সিটির কথা , বন্ধুদের কথা , এমনকি আমার কথা । আমাকে বলত “জান আমাদের ফাস্ট বয় পড়ালেখার ধার ধারেনা , সারাদিন বাঁদরামি করে । তার পরেও আমি তার নাগাল পাই না । মাথায় কি নিয়ে জন্ম নিয়েছে কে জানে।’ আমি এসব শুনতাম আর মুচকি মুচকি হাসতাম । সে অনেকবার আমার নাম্বার চেয়েছিল । আমি বলেছিলাম সময় হলে একেবারে দেখা করব । আমার পরিচয় গোপন রাখার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত সাবধানী ছিলাম । আমি চাইনি আমার কবি-সত্তা সম্পর্কে আমার বিচ্ছু বন্ধুমহল জানুক আর আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাক ।
একসময় নিজেও দুর্বল হয়ে যাচ্ছিলাম । সেই দুর্বলতা তার সামনেও প্রকাশ হতে লাগল । ক্লাসে আনমনে তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম । একসময় সে বুঝতেও পারল হয়তো । অন্তরা অনেক শান্ত আর ভালো একটা মেয়ে । তাই বিষয়টা অন্যরকমভাবে সমাধানের জন্য একদিন সে আমাকে ডেকে বলল “এই শোন , আমি না একজনকে পছন্দ করি । ফেইসবুকে আমাদের পরিচয় ’’।
আমি হেসে বললাম ‘দেখেছিস’ ।
না ।
না দেখেই প্রেম ?
হম ।
যদি দেখিস পঞ্চাশ বছরের বুড়া ?
তাতে তোর কোন সমস্যা ?
না , আমার আর কি সমস্যা । বেস্ট অফ লাক......... আমি চলে আসলাম । সে ভাবল আমি হয়তো মনে কষ্ট পেয়েছি । আমি তখন হাসতে হাসতে পাগল হওয়ার দশা । আমার প্রেমে পড়ে আমাকেই রিফিউজ । যাই হোক , সেদিন রাতে সে মোবাইলে কথা বলার জন্য চাপাচাপি শুরু করল চেট এ । আমি বললাম ঠিক আছে , কাল দেখা করব । একদম সামনা সামনি দেখা, কথা সব হবে । কাল বিকাল চারটায় , টি এস সি থাকবে । আমি আসব ।
চিনব কিভাবে তোমায় ?
আমায় চিনতে হবে না । আমি তোমায় চিনি।
তার পরেও ।

ঠিক আছে , আমি কালো স্যুট পড়া থাকব আর তোমার ফুল তোলা নীল রুমালটা তোমায় ফেরত দিব , গত সপ্তাহে যা হারিয়ে গিয়েছিল । তা দেখে চিনে নিও ।

মানে ? আমার রুমাল তুমি কিভাবে পেলে ? সত্যি করে বল কে তুমি ?

“বললাম তো দেখবে কাল । এত উতলা হউ কেন ? আমি যাই , ঘুম পেয়েছে । বাই ’’ এই বলে অন্তরাকে হতভম্ব অবস্থায় রেখে ফেইসবুক থেকে বেরিয়ে আসলাম । পরেরদিন ক্লাসে দেখি অন্তরা শুধু ছটফট করছে । আমি পিছনে বসে শুধু মজা নিচ্ছিলাম । দুপুরের দিকে সে বাসায় চলে গেল । আমি বাসায় এসে গোসল করে ভালভাবে তৈরি হলাম । তারপর ময়লা একটা টিশার্ট আর বিবর্ণ এক জিন্স পরে সাড়ে তিনটার সময় বাইক নিয়ে অন্তরার বাসার কাছের একটা গলিতে গিয়ে দাঁড়ালাম । অল্পক্ষণ পরে অন্তরা এসে রাস্তায় দাঁড়াল । নীল শাড়ী পরে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছিল । বাইকটা টান মেরে অন্তরার সামনে নিয়ে ব্রেক করে দাঁড়ালাম ।
আরে অন্তরা , তুই ? কোথায় যাবি ?
টি এস সি ।
তাই নাকি ? আমি ও সেখানেই যাব । আয় ।
না থাক , আমি রিক্সা নিয়ে যাব ।
আয় তো , এত প্যাঁচাল পাড়িস না ।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্তরা বাইকে উঠে বসলো । যেতে যেতে বললাম “ কিরে । এত মাঞ্জা মারতে তো তোকে জীবনেও দেখলাম না । কাহিনী কি ?
প্রথমবার দেখা করতে যাচ্ছি ।
তাই?
হম ।
ভালো , ভালো ।
কিছুক্ষণের মাঝে টি এস সি এসে বসলাম দুজন । শুরু করলাম আমার শয়তানি । অন্তরা এমনিতেই টেনশনে ছিল । তার মাঝে আমার খোঁচাখোঁচিতে চরম বিরক্ত হয়ে রেগে গেল ।
এই , তুই যাবি না ?
না , দুলাভাইকে দেখে যাই। ২৫ বছরের ছোকরা নাকি ৪৫ বছরের বুড়া ।
যা ভাগ । সময় হয়ে গেছে । এসে পরবে এখন ।
দোস্ত , একটা কথা বলি ?
কি ?
যদি ৪৫ বছরের বুড়া হয় তো সেকেন্ড অপশন হিসাবে আমাকে রাখিস ?
এখন ফাজলামি করার মুড নাই । তুই যা দোস্ত , প্লিজ ।
শুধু বল রাজি , তাহলেই আমি ভাগব ।
এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব । বাঁদর । যা ভাগ , নাহলে এইখানেই পাবলিকের হাতে গণধোলাই খাওয়াব ।

শুনে ৩২টা দাঁত বের করে একটা ভিলেন টাইপ হাসি দিলাম । হাসিটা বিফলে গেল । অন্তরার ভ্রুকুটি আরও বাড়ল । বিরক্ত হয়ে বলল তুই যাবি ? নাকি মাইর খাবি ?
মুখটা একটু ভোতা করে বললাম “দুলাভাইয়ের সাথে একটু দেখা করেই যাই ?”

আমিই আজ প্রথম দেখা করতে এসেছি । প্রথম দেখায় এসে যদি দেখে তোর মতো এক বাঁদরকে সাথে এনেছি তাহলে আমাদের প্রথম দেখাই শেষ দেখা হয়ে যাবে । যা ফুট............

বাইক নিয়ে চলে আসলাম কাছেই আপার বাসায় । এসে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করলাম । স্যুট পরে আপার কার নিয়ে গেলাম টি এস সি ।

কিরে ? তোর বুড়া আসেনি ?

চমকে গিয়ে অন্তরা আমার দিকে তাকালো । আমি তখন কালো স্যুট পড়া , কার থেকে নেমে অন্তরার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম । “ এখনো ভেবে দেখ ,সেকেন্ড অপশন হিসাবে আমি কিন্তু খারাপ না । কি বলিস ? ’’

চোখে সন্দেহ নিয়ে অন্তরা জিজ্ঞেস করল “ স্যুট পরেছিস কেন ?”

এইটা তোকে দেয়ার জন্য----- বলে আমি রুমালটা বের করলাম ।

অন্তরার মুখে তখন কোন কথা নেই । অনেক্ষন ডাগর ডাগর চোখ মেলে বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে ছিল । তারপর হটাত মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নিচু করল ।

আমি জিগ্যেস করলাম “ কি , প্রথম অপশন নাকি দ্বিতীয় অপশন ?

আস্তে করে মাথা তোলে আমার চোখের দিকে তাকাল অন্তরা । তারপর তার বিখ্যাত হাসিটি দিয়ে বলল............বাঁদর .........দ্বিতীয় অপশন............খুশি ?

লিখেছেন-দেবাশীষ মজুমদার সাগর

গল্প-২

প্রথম কথোকপথন....

-: ঐ মেয়ে, তোমার নাম কি ?
-: আমার নাম দিয়ে আপনার
কি কাম ?
(ঐ ছেরি, এত কস ক্যান ?
যেটা জিগাইছি সেটার উত্তর
দে)
-: না মানে..... এমনি !
-: না মানে..... এমনি ?
এমনি মানে কি ? আমি প্রায়
সময় খেয়াল
করি আমি ছাদে উঠলে আপনি আমার
দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন !
আপনার জ্বালায়
আমি ছাদে পর্যন্ত
উঠতে পারি না । আপনাদের মত
ছেলেদের আমি খুব ভাল করেই
চিনি !
প্রথম দিন বলবেন- হাই !
দ্বিতীয় দিন-
নাম্বারটা চাই !
তৃতীয় দিন- ভালবাসি তোমায় !
যত্তসব !
(ও খোদা ! এ মাইয়্যা কয় কি ?
গত ছয় মাস ধরে নাকের আগায়
আগায় ঘুরতেছে । কোনদিন
তো কথাও বলি নাই ! আজ প্রথম
বারের মত কথা বলতে গিয়েই
এই ব্যবহার ! ধুর, কি দরকার
ছিল
গায়ে পড়ে গিয়ে কথা বলার ?
ভাগ্যটাই খারাপ আমার ! এর
সামনে আর বেশিক্ষণ
থাকা যাবে নাহ ! মুখ
লুকিয়ে কিভাবে পালিয়ে বাঁচা যায়
সেটা ভাবছি, এমন সময়
সে বলে উঠল-)
-: By the way, আমার নাম
পিয়া ! আপনার নাম কি ?
(কোন সুন্দরী তার নাম
বললে খানিকক্ষণ তার নামের
প্রশংসা করতে হয়- এটাই
নিয়ম । কিন্তু এ
মাইয়া প্রথমেই যে বাঁশ দিল,
তাতে প্রশংসা করার আর মুড়
নাই !)
-: নীল । আমার নাম নীল ।
-: হি হি হি ! আমার এক
বান্ধবীর নাম নীলা !
(আশ্চার্য ! তার
বান্ধবী একটা মেয়ে আর
একটা মেয়ের নাম নীলা হতেই
পারে । এখানে হাসার
কি হল ?)
-: না মানে... আমার নাম নিলয়
। নিলয় থেকে সংক্ষিপ্তরূপ
নীল !
-: নিলয়.....? হা হা হা ! আমার
এক কাজিন ময়মনসিংহ গার্লস
ক্যাডেট কলেজে পড়ে । তার
নাম নিলয় !! আপনার
তো দেখি পুরাই মেয়েদের
নাম !
(নিলয় মেয়েদের নাম ??
জীবনে এ কথা প্রথম বারের মত
কেউ আমাকে বলল ! এ
মেয়েকে এখন মজায় পাইছে !
এখন আমি যদি বলি আমার নাম
আলবার্ট আইনস্টাইন,
আমি ড্যাম শিউর যে এ
মেয়ে তখন বলে উঠবে-
হো হো হো ! আমার ছোট খালার
নাম তো আলবার্ট আইনস্টাইন !
যাগ্গে ! সে রিক্স আর নিলাম
না । হাসুক । যত খুশি হাসুক ।
তাতে আমার কি আসে যায় ?)
:- ও আচ্ছা ! কি আর করব বল ?
আম্মায় আব্বায় রাখছে । তখন
ছোট ছিলাম তো, তাই
বুঝতে পারি নি এটা ছেলেদের
নাকি মেয়েদের নাম !!
:- হুম । সেটাই ! আচ্ছা,
আপনি যদি আপনার নাম রাখার
সুযোগ পেতেন
তবে কি রাখতেন ?
(এ মেয়ে তো দেখি পিতির
পিতির অনেক কথা কয় !
তাইলে প্রথমে এমন বাঁশ দিল
ক্যান ?)
-: উইলিয়াম শেক্সপিয়ার !
-: হা হা হা ! খারাপ হত না ।
তবে নীল নামটাও খারাপ না ।
মেয়েরা সাধারণ ছেলেদের
নামের প্রশংসা করে না ।
কিন্তু এ মেয়ে তো দেখি তাও
করে ফেলল । এখন
যদি তারে একটু পাম্প না দিই
তবে সেটা একটু খারাপ দেখায়)
-: তোমার নামটাও খারাপ না ।
পিয়া ! অনেক সুন্দর একটা নাম
। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন
আমাদের
সাথে পিয়া নামে একটা মেয়ে ছিল
। এত্ত সুন্দর ! বলার বাইরে !
আমার জীবনে এত সুন্দর
মেয়ে আর
দ্বিতীয়টি দেখি নি ! মিস
ইউনিভার্সও তার কাছে হার
মানবে ! কিন্তু সমস্যা হল-
মেয়েটা হিন্দু ছিল !
পিয়া রানী পাল !
নইলে নির্ঘাত তার
সাথে প্রেমে করতাম !
(মেয়েরা নাকি কখনোই তার
সামনে অন্য মেয়ের
প্রশংসা সহ্য করতে পারে না ।
পরীক্ষামূলক বাঁশ)
-: অনেক সুন্দর ছিল বুঝি ?
-: হুম । অনেক.....
(মেয়ের মন খারাপ
হয়ে গেছে । যাক, ডোজ
তাহলে জায়গামত পড়ছে)
-: তুমিও অবশ্য কম সুন্দর না !
(পাম্প ! পাম্প !! পাম্প !!!)
-: থ্যাংকস ।
(মেয়ের মুখে হাসি ফুটছে ।
আরেকবার বাঁশ দিব
কিনা ভাবতেছি । না থাক ।
বেশি দিলে আবার মাইন্ড
খাইতে পারে ! মেয়েও চুপ ।
আমিও চুপ । কারো মুখে কোন
কথা নাই । একবার ভাবলাম
জিজ্ঞাসা করি- প্রথমে এমন
করলে কেন ? পরে ভাবলাম-
থাক । কি দরকার ? সব কারণ
জানতে হয় না । মেয়েই আবার
শুরু করল-)
-: আপনি এখন নিয়মিত
ছাদে আসেন না কেন ?
(হায় আল্লাহ ! কয় কি এ
মাইয়্যা ? আমি যে এখন
রেগুলার
ছাদে আসি না সেটা তো আমি নিজেও
জানি না ! এ মাইয়া এসব
খেয়াল করে নাকি ?)
-: কই আসি তো !
-: না । আগের মত আসেন না ।
আগে প্রতিদিন
বিকেলে ছাদে উঠলে আপনাকে দেখতাম
। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ
দেখি নাহ !
-: ও আচ্ছা !
আসলে আগে বিকেলে বাসায়
থাকতাম । এখন থাকি না ।
জিমে যাই ।
-: জিম ? আপনি ? হা হা হা !
এমনিতেই তো স্বাস্থ্যমন্ত্রী !
জিমে গিয়ে কি করবেন ?
(এ মেয়ে এত হাসে ক্যান ?
হাসুনি গোটা খাইছে নাকি ?
সেই তখন থেকে হাসতেছে ।
যত্তসব)
-: মাইন্ড করলেন নাকি ?
-: না তো ! মাইন্ড অনেক
দামি জিনিস । এত
দামি জিনিস আমি খাই না ।
হজম হয় না !
(আমার ফেবারেট ডায়ালগ !)
-: ওহ ! সেটাই ভাল ! আপনার
ফেসবুক আইডিটা দেন তো ?
(ওরে বাবা ! ডিরেক্ট একশন !
জটিল মেয়ে)
-: আমি তো ফেসবুক ইউজ
করি না !
-: কি বলেন ? আপনি ফেসবুক
ইউজ করেন না ? কোন যুগে বাস
করেন আপনি ?
(মেয়ে,
তুমি কি নিজেকে ইসমাট ভাব ?
তাইলে মনে রাইখো-
আমি হইলাম উভার ইসমাট !)
-: আসলে ফেসবুক খুব কমন
হয়ে গেছে ইদানীং ! এত কমন
জিনিস ইউজ করতে ভাল
লাগে না আমার । আমি সব সময়
ইউনিক টাইপ জিনিস খুঁজি ।
আমি টুইটার ইউজ করি !
(পার্ট লইছি ! পুরাই পার্ট!!)
-: নাহ ! আসলে টুইটার অনেক
হার্ড ! কিছুই বুঝি না ।
-: হুম সেটাই ! সবাই টুইটার
ইউজ করতে পারে না । টুইট
করার জন্য
এক্সটা কোয়ালিফিকেশনের
দরকার হয় ! সবার
সেটা থাকে না !!
(সুন্দরী,
তুমি প্রথমে আমাকে বাঁশ
দিছিলা ! বাঁশ কিন্তু আমিও
দিতে জানি- মনে রাখবা)
-: কি ভাবে টুইটার ইউজ
করতে হয়
সেটা আমাকে শেখাবেন ?
-: আমি তো ফ্রি কোন কিছু
কাউকে শিখাই না ! এর
জন্যে তো চার্জ দিতে হবে !!
-: আপনি এত হিংসুক কেন ?
-: আমি হিংসুক না ! আমি হলাম
বাস্তববাদী ।
তুমি চারপাশে একটু
তাকিয়ে দেখ । আজকাল কি কোন
কিছু ফ্রি আছে ?
-: হয়েছে । হয়েছে । থাক । আর
লেকচার দিতে হবে না । যান,
দেবনে.... শিখাবেন তো ?
-: হুম । শিখাবো !
(এমন সময়
ছাদে একটা পিচ্ছি এল ।
কি জানি বলল ওকে)
-: আম্মায় ডাকছে । এখন যাই ।
পরে কথা হবে ।
-: ঠিক আছে । যাও !
-: ভাল থাকবেন ।
-: হুম । তুমিও ।
-: বাই ।
-: বিদায় !
(মেয়ে,
যে কথাটি তোমাকে বলা হয়
নি- পরে আর কথা বলার সুযোগ
তুমি আর পাবে না !
বাসা চেইন্জ্ঞ করা হয়েছে ।
জিনিসপত্র ট্রান্সফার চলছে ।
কাল বিকেল কিংবা পরশু
সকালে চলে যাব । জীবনে হয়ত
আর কোনদিন দেখাও হবে না ।
কোন দিন বলাও হবে না-
মেয়ে, তোমাকে ভেবে অনেক
কবিতা লিখেছিলাম ।
দেখেছিলাম অনেক স্বপ্নও !
থাক । সব কথা সব সময়
বলতে হয় না । শুধু বলব-
ভালো থেকো তুমি ।)


লিখেছেন -Forhad Ahmed Niloy