আমাদের ফেসবুক পেজে জয়েন করুন http://www.facebook.com/vhalobashar.golpo

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

# সোনালি রঙা কার্ড #

# সোনালি রঙা কার্ড #
লিখেছেনঃ Jahid Hasan Ruhan

মাথাটা ঝিমঝিম করছে রবিনের। বুকে কেউ পাথর চেপে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে তার। সে কখনো কাঁদে না। আজ তার খুব চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে।


ঘন্টা খানিক আগের কথাঃ - ড্রয়ার খুলতেই একটি সোনা চকচকে কার্ডের উপর রবিনের চোখ আঁটকে গেল। এই তো সেই বিয়ের কার্ডটি। বড় ভাইয়ার এক বন্ধুর বিয়ের কার্ড। গত বছরে এই বিয়ের মাধ্যমেই মেয়েটির সাথে প্রথম তার দেখা হয়।

বিয়ে বাড়ি কিংবা বিয়ে বাড়ির লোকারন্য কোনটাই রবিনের পছন্দ না। যদিও সে সুস্থির গোছের ছেলে নয়। সেবার ডিসেম্বরে সব কাজিনেরা রবিনের বাসায় একত্রিত হয় বলেই তাকে ওই বিয়ে বাড়িতে যেতে হয়েছে।

ক্যামেরা হাতে সবার ছবি তুলছিল রবিন। টুকিটাকি ফটোগ্রাফির ঝোঁক ছিল বলেই খুব একটা খারাপ ছবি তোলে না সে।

সেই সময় রবিনের চোখে পড়ে লম্বা চুলো লাল শাড়ি পড়া মেয়েটি। আর তা তখনই ঘটে গেল যাকে বলে, লাভ ইন ফার্স্ট সাইথ। মেয়েটির চোখ দুটি অসম্ভব মায়াময়। যেন তার চোখের দিকে তাকালেই সব ক্লান্তি হারিয়ে যায়। তার চোখের মাদকতায় ডুবে যেতে ইচ্ছে করে। রোদ চশমার কল্যাণে রবিন তাকে প্রায় সারাটি সময় দেখছিলো। লুকিয়ে লুকিয়ে তার কয়েকটি ফটোগ্রাফও তুলেছে।

এরপর অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটার সাথে কথা বলার সাহস করে উঠতে পারেনি রবিন। তবে আশেপাশে বলাবলি করে মেয়ের নাম জানতে পারে অর্পিতা।

একসময় রবিন মেয়েটিকে হারিয়ে ফেলে। অনেক খুঁজেছিল সেদিন রবিন, হয়তো মেয়েটি ততক্ষণে বিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।

অর্পিতার মোবাইল নম্বর, বাসার ঠিকানা এসব জোগাড় করার অনেক চেষ্টা করেছিল রবিন কিন্তু কিছুই সে পায়নি।এরপর অর্পিতার ছবি গুলো দেখে আর তাকে খুঁজে দিন পাড় করবে বলে ঠিক করে রবিন।


হঠাৎ করে কলিং বেলের আওয়াজে চিন্তার জগৎ থেকে বের হয়ে এলো রবিন। ড্রয়ার বন্ধ করে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে এগোলো কে এসেছে দেখার জন্য। সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই একটা হালকা মিষ্টি ঘ্রাণ অনুভব করলো। ঘ্রাণটা এত পরিচিত লাগছে কেন তার? আগে কোথায় পেয়েছিল সে এই ঘ্রাণ? সেই বিয়ে বাড়িতে নয় তো??

ড্রইংরুমে যেতেই ধাক্কার মত খেল রবিন। রবিনের মায়ের সামনে সোফায় বসে আছে দুইটি মেয়ে, ডান সাইডে বসে থাকা মেয়েটি অর্পিতা।

রবিন চিন্তা করতে থাকে, অর্পিতা এখানে কেন? সে কি রবিনকে খুঁজতে এসেছে? সে কি জানে রবিন তাকে কয়েকটি মাস হন্নে হয়ে খুঁজেছে? মেয়েটা কি জেনে গেছে রবিন তাকে কতটা ভালবাসে?


মাথা নিচু করে বসে থাকা অর্পিতার হাতে ধরা একটি সোনালি রঙা কার্ড। কার্ডটি সে বাড়িয়ে দিল রবিনের মায়ের দিকে। কিসের কার্ড জানতে চাইলে অর্পিতা জানালো এটা তার নিজেরই বিয়ের কার্ড।


হঠাৎ করে রবিনের সব প্রশ্নের উত্তর রবিন পেয়ে গেল। ড্রইংরুমে এগোলোনা সে, ওখানেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে অর্পিতাকে প্রশ্ন করল, "বেশ তো হারিয়ে ফেলেছিলাম। তোমার ছবি গুলোর মাঝে সুখ খুঁজতাম। সুখ খুঁজতাম তোমাকে খোঁজার মাঝেই। আবারও যখন হারিয়ে যাবে নিজ থেকে দেখা দিতে এলে কেন?"

মাথা ব্যথা ক্রোমোস বাড়ছে রবিনের। চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি এসে পড়ল সোনালি রঙা কার্ডটির উপর।

• আমার জীবনের শেষ কথা •

• আমার জীবনের শেষ কথা •
লিখেছেনঃ অপুর্ব মাসুদ

ও ছিল আমার ছাত্রের বড় বোন। তাকে অফার করছিলাম ২০১০ সালের ৬ই মার্চ। আমার জীবনের প্রথম অফার। তাই এক্টু ভয় এ ছিলাম। যদি ইগ্নোর করে। তখন আমি অপুর্ব, সম্মান ৩য় বর্ষে পড়ি। আর ও শান্তা ইন্টার দিবে। কিছু দিন পর ও আমার অফার গ্রহণ করল। আমরা কথা বলতাম রাতে। অনেক রাত পযন্ত কথা বলতাম। ৬ মাস ঠিক মত চলতেছিল। হঠাৎ ১দিন কোন কারন ছাড়া আমায় বললো যে আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখবে না। পরে জানতে পারলাম ওকে অন্য কেউ অফার করছে। তার পর থেকে ১ সপ্তাহ কোন যোগাযোগ হয় নি।

তারপর.........
ও আমায় সরি বলে। আমি ওকে মাফ করে দি। তার পর থেকে ওর সাথে আমার তেমন কোন ঝগড়া হয়নি ১ বছর। ও ভার্সিটি তে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। CU তে economics এ ভর্তি হয় ২০১২ সালের January তে। এর পর থেকে শুরু হয় ঝগড়া।

ও যেদিন ভর্তি হয় ওই দিন থেকে ওর মোবাইলে call waiting...!!!! ওর বন্ধুর সাথে কথা বলা শুরু। ভার্সিটি তে পড়লে বন্ধু থাকবে, তাই বলে সারা দিন !!! এত কিসের কথা বুঝতাম না।

১৪ February তেও ওর call waiting। জিজ্ঞাসা করছি বলে বন্ধু। আজকের রাত্রে ও তুমি ওদের সাথে কথা বলবা??? এর পর থেকে শুরু হয় আমার কস্টের দিন।

প্রায় রাত্রে ওর call waiting। রাত ২টা বাজে ওর call waiting পাইছি। তারপর ও ওর সাথে সম্পর্ক রাখছি কারন ও আমার জীবন। ওর সাথে ঝগড়া করে আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারতাম না। ও আরো বাড়তে থাকে। কিছু হলে বলে- তুমি ও তো তোমার বন্ধুদের সাথে কথা বলো!!!

ওকে কিছু বললে আমাকে গালিগালাজ করত। সব কিছু মেনে নিয়েছি কারন আমি ওকে খুব ভালবাসতাম। ও ওর বন্ধুদের সাথে রিকশা করে ঘুরত। একদিন আমার বন্ধু ওকে দেখেফেলে। আমি কিছু বলার আগেই ও আমায় অপমান করে। বলে আমি নাকি নিচু মনা। ওরা নাকি শুধু বন্ধু। এর পর থেকে আমি ওকে avoid করে চলতে শুরু করি। লাস্ট ১ বছর ও আমায় অনেক কষ্ট দিচ্ছিল।

ওকে আমি ভুলে ও গেছিলাম কিন্তু ৪মাস আগে ও ওর সব ভুল স্বীকার করে। আমি ওকে ক্ষমা করে দিই। তারপর থেকে ও কে প্রায় অনলাইন এ দেখতাম। কিছু বললে বলত পেজের লেখা পড়ি।

আজ থেকে ২দিন আগে আমি ওর fb তে ঢুকে যা দেখলাম তা আমি মানতে পারতে ছিলাম না। ও ওর ওই বন্ধুর সাথে প্রেম করতেছে এখনও। সব মেসেজ আমি পরলাম। ওর কাছ থেকে যখন জানতে চাইলাম এমন করলে কেন?? ও আমার সাথে উল্টা গরম সব দোষ নাকি আমার। আমি যখন ওকে ছেড়ে চলেগেছিলাম, তখন থেকে ও ওই বন্ধুর সাথে প্রেম করছে।

তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি এখনো। তাই আমার সাথে তুমি যা করেছ, তা আমি কোন মতে ভুলতে পারতেছি না। তুমি আমার সাথে এমন অনেক খারাপ ব্যবহার কর্‌ যা আমি এখানে বলতে পারছিনা। কারন তোমাকে সবার সামনে আমি ছোট করতে পারব না।

আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন তাকে পরকালে আমি তাকে আমার জীবন সংগী হিসাবে পাই।

[ অনুগ্রহ করে কেউ কোন বাজে মন্তব্য করবেন না প্লিজ, আমাদের সবার উচিৎ সবার ভালবাসাকে সন্মান দেয়া! কেউ কেউ হয়, এমন ব্যতিক্রম ]

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৩

" আজ নীলার বিয়ে "

" আজ নীলার বিয়ে "
লিখেছেনঃ যে ছেলেটি বিদ্যুতের বন্ধু

গিফটের প্যাকেট খুলেই কারেন্টের শক খেল নীলা !

চমৎকার একটা সবুজ শাড়ি । অসম্ভব একটা ভাল লাগা খেলে গেল সারা শরীরে ।

সাথে সাথেই ফোন দিল হাসিবকে । ...কিরে এটা কি পাঠিয়েছিস ? ক্যান, দেখিস নাই চোখ দিয়া ?! ...তোর পছন্দ এত ক্ষ্যাত মার্কা ক্যান রে ?! আর তুই জানিস না আমি শাড়ি পরতে পারি না ? মিছেমিছি টাকা গুলো নষ্ট করলি! তোর পছন্দ হয় নাই ? ...নাহ ! ঠিক আছে কষ্ট করে জানালা দিয়ে ফেলে দে তাহলে । ...পারব না কষ্ট করতে!

তাহলে কি করব এখন ?

( হেসে ) কিছু করতে হবে না । কট করে লাইনটা কেটে দিল নীলা ।

নীলার পছন্দের রং সবুজ! নাম নীলা আর পছন্দ করে সবুজ রং ! নীল রং একদম সহ্য করতে পারে না ও । নীল নাকি কষ্টের রং...আর সে কখনো কষ্ট পেতে চায় না । কষ্ট তো কেউই পেতে চায় না...মেয়েরা তো নয়ই ! ধুর! কি সব ভাবছে হাসিব । শুরু করেছিল শাড়ি থেকে ভাবনা গিয়ে ঠেকল কষ্টে! হাসিব ভাল করেই জানে শাড়িটা নীলার দারুন পছন্দ হয়েছে ।

শাড়িটা কিন্তু আমার দারুন পছন্দ হয়েছে! তুই কি পছন্দ করে কিনেছিস ?? ...না আম্মু কিনে পাঠিয়ে দিয়েছে । তুই না বললি তোর পছন্দ হয়নি ?! ইয়ার্কি মেরেছিলাম! তুই দেখি ইয়ার্কিও বুঝিস না ! হঠাৎ শাড়ি গিফট করলি...ঘটনা কি ? ...বিয়ের দিন পড়িস । বিয়েতে কেউ সবুজ শাড়ি পড়ে গাধা! ...তুই পরবি । ইতিহাস তৈরি করবি! আচ্ছা যা ! পরব !

আজ নীলার বিয়ে । লাল টকটকে শাড়ি পড়ে বসে আছে নীলা । সারা বাড়ি গিজগিজ করছে আত্মীয় স্বজনে । চুপচাপ শুধু নীলা । বাবা-মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করছে । বুয়েট থেকে পাস করা ইঞ্জিনিয়ার । কানাডায় সেটেলড । বিয়ের পর বউ নিয়ে সোজা কানাডায় চলে যাবে ।

নীলা হাসিবকে ভীষন পছন্দ করে । হয়তো হাসিবও । কিন্তু তা এখনো অপ্রকাশিত । কেউ কাউকে কিছুই বলেনি । নীলা আশা করেছিল হাসিব একদিন ঠিকই বলবে । কিন্তু আজো হাসিব কিছুই বলেনি ।

নীলা হাসিবকে কথা দিয়েছিল বিয়েতে সবুজ শাড়ি পরবে । ইচ্ছে করেই কথা রাখেনি নীলা । গাধাদেরকে দেয়া কথা না রাখলেও কোন ক্ষতি নেই!
প্রিয়াংকা তাড়াতাড়ি ভার্সিটি আসল। আসিফ ভার্সিটির বারান্দাতে হাটাহাটি করছে। প্রিয়াংকাকে দেখতে পেয়ে ডাক দিল।

-কি ব্যাপার, কলেজে আসতে বললি যে।
-তোর নোট খাতা ফেরত দিতে।
-আমি কি তোর কাছে চাইছি?
-না, তবে নিয়ে নে। পরে কিন্তু আর পাবি না।
-ক্যান? আজকাল নোট খাতা দিয়ে বিড়ি খাস নাকি?!!
-হাহাহা, আর বিড়ি খাই না। এখন বোতল ধরব ভাবছি।
-ধরে এমন পিটন লাগাব যে বুঝবি।
-মারিস না, মারিস না। মার খেয়ে মরে গেলে কি করবি তখন?
-ধূর বাদ দে। নোট খাতা দেওয়ার জন্যে তো আসতে বলিস নি। এখন আসল কারণ বল।
-নোট খাতা দেওয়ার জন্যও ডাকছি। কাল নিউ-ইর্য়ক যাচ্ছি। তাই তোর সাথে দেখাও করে নিলাম।

প্রিয়াংকা বুঝতে পারল, আসিফ ফাজলামি করছে না। সে ফাজলামি করলে মুখে হাসি থাকে। এখন কেমন সিরিয়াস হয়ে আছে। প্রিয়াংকা বলল,

-আগে বলিসনি কেন?
-তুই যদি মন খারাপ করিস তাই।
-আমি মন খারাপ করব কেন? ভাল খবর তো।
-ও
-শুধু ও করিস না। গিয়ে ভাল করে পড়া, লিখা করবি। সারাদিন ঘোরাঘুরি করলে লাড্ডু খাবি।
-হুমম। -আর মেয়েদের পিছনে ঘুরবি না। ভাল করে খাওয়া-দাওয়া করবি। ঠিক আছে?
-আমি তো মেয়েদের পিছনে ঘুরি না।
-জানি। তাও বলে দিলাম।
-তুই ও ভাল থাকিস।
-হুমম। কখন রওনা দিবি?
-আর ২ ঘন্টা পর।
-আচ্ছা যা, গুড লাক।

প্রিয়াংকাকে ফেলে আসিফের যেতে কেমন যেন লাগছে। আর একটু যদি বসে থাকা যেত! প্রিয়াংকাকে অনেক মিস করবে সে। খুব ভাল একটা বন্ধু। মাঝে মাঝে বন্ধুর চেয়েও বেশী মনে হয়। মনে হচ্ছে সব ছেড়ে ফেলে প্রিয়াংকার হাত ধরে দূরে কোথাও চলে যায়। যেখানে আর কেউ আসবে না। কিন্তু তা সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে তার মনে হয় কেন এসব শুধু গল্পেই সম্ভব? বাস্তবে হলে কি খুব এটা ক্ষতি হত?

এরকম হল কেন? আসিফ চলে গেলে প্রিয়াংকা কি করবে? আর কি সেই সব দিন আসবে! কত মজা করেছে তারা। এই ক্যাম্পাস ঘিরে অনেক স্মৃতি। প্রিয়াংকার কাছে সব কিছু খাপ-ছাড়া লাগছে। কেমন যেন এলোমেলো। আর একবার আসিফের হাতটি ধরে বেড়াতে ইচ্ছা হচ্ছে। মনে হচ্ছে ছুটে গিয়ে আসিফকে আটকায়। কিন্তু প্রিয়াংকা জানে এটি সম্ভব নয়।

আকাশটা আজ মেঘে ভরপুর। খুব বাতাস হচ্ছে। বৃষ্টি হবে মনে হয়। বেশী বাতাস প্রিয়াংকার চোখে লাগলে বড় বড় পাপড়িগুলো কাঁপে। মাঝে মাঝে চোখে পানিও আসে। এখন প্রিয়াংকার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। প্রিয়াংকা চাচ্ছে বৃষ্টিটা শুরু হোক। তার চোখও ভিজুক। যেন কেউ কিছু বুঝতে না পারে...

লিখেছেনঃ প্রিয়াংকা তাড়াতাড়ি ভার্সিটি আসল। আসিফ ভার্সিটির বারান্দাতে হাটাহাটি করছে। প্রিয়াংকাকে দেখতে পেয়ে ডাক দিল।

-কি ব্যাপার, কলেজে আসতে বললি যে।
-তোর নোট খাতা ফেরত দিতে।
-আমি কি তোর কাছে চাইছি?
-না, তবে নিয়ে নে। পরে কিন্তু আর পাবি না।
-ক্যান? আজকাল নোট খাতা দিয়ে বিড়ি খাস নাকি?!!
-হাহাহা, আর বিড়ি খাই না। এখন বোতল ধরব ভাবছি।
-ধরে এমন পিটন লাগাব যে বুঝবি।
-মারিস না, মারিস না। মার খেয়ে মরে গেলে কি করবি তখন?
-ধূর বাদ দে। নোট খাতা দেওয়ার জন্যে তো আসতে বলিস নি। এখন আসল কারণ বল।
-নোট খাতা দেওয়ার জন্যও ডাকছি। কাল নিউ-ইর্য়ক যাচ্ছি। তাই তোর সাথে দেখাও করে নিলাম।

প্রিয়াংকা বুঝতে পারল, আসিফ ফাজলামি করছে না। সে ফাজলামি করলে মুখে হাসি থাকে। এখন কেমন সিরিয়াস হয়ে আছে। প্রিয়াংকা বলল,

-আগে বলিসনি কেন?
-তুই যদি মন খারাপ করিস তাই।
-আমি মন খারাপ করব কেন? ভাল খবর তো।
-ও
-শুধু ও করিস না। গিয়ে ভাল করে পড়া, লিখা করবি। সারাদিন ঘোরাঘুরি করলে লাড্ডু খাবি।
-হুমম। -আর মেয়েদের পিছনে ঘুরবি না। ভাল করে খাওয়া-দাওয়া করবি। ঠিক আছে?
-আমি তো মেয়েদের পিছনে ঘুরি না।
-জানি। তাও বলে দিলাম।
-তুই ও ভাল থাকিস।
-হুমম। কখন রওনা দিবি?
-আর ২ ঘন্টা পর।
-আচ্ছা যা, গুড লাক।

প্রিয়াংকাকে ফেলে আসিফের যেতে কেমন যেন লাগছে। আর একটু যদি বসে থাকা যেত! প্রিয়াংকাকে অনেক মিস করবে সে। খুব ভাল একটা বন্ধু। মাঝে মাঝে বন্ধুর চেয়েও বেশী মনে হয়। মনে হচ্ছে সব ছেড়ে ফেলে প্রিয়াংকার হাত ধরে দূরে কোথাও চলে যায়। যেখানে আর কেউ আসবে না। কিন্তু তা সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে তার মনে হয় কেন এসব শুধু গল্পেই সম্ভব? বাস্তবে হলে কি খুব এটা ক্ষতি হত?

এরকম হল কেন? আসিফ চলে গেলে প্রিয়াংকা কি করবে? আর কি সেই সব দিন আসবে! কত মজা করেছে তারা। এই ক্যাম্পাস ঘিরে অনেক স্মৃতি। প্রিয়াংকার কাছে সব কিছু খাপ-ছাড়া লাগছে। কেমন যেন এলোমেলো। আর একবার আসিফের হাতটি ধরে বেড়াতে ইচ্ছা হচ্ছে। মনে হচ্ছে ছুটে গিয়ে আসিফকে আটকায়। কিন্তু প্রিয়াংকা জানে এটি সম্ভব নয়।

আকাশটা আজ মেঘে ভরপুর। খুব বাতাস হচ্ছে। বৃষ্টি হবে মনে হয়। বেশী বাতাস প্রিয়াংকার চোখে লাগলে বড় বড় পাপড়িগুলো কাঁপে। মাঝে মাঝে চোখে পানিও আসে। এখন প্রিয়াংকার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। প্রিয়াংকা চাচ্ছে বৃষ্টিটা শুরু হোক। তার চোখও ভিজুক। যেন কেউ কিছু বুঝতে না পারে...

লিখেছেনঃ Sadik Awal

কদম ফুলের ভালোবাসা

কদম ফুলের ভালোবাসা
লিখেছেনঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (Snigdha Munira)

জানালার কাছে দাড়িয়ে আনমনে কি যেন ভাবছে নিহা, তখন ফোনটা কেপে উঠলো আর ওমনি নিহার মনে হলো আরে আমি তো চেট করছিলাম। অনেক গুলো নক কিন্তু কাউকে রিপলাই দিতে মন চাইলোনা। হঠাত্‍ চোখ গেলো এক অজানা মানুষের মেসেজ এ, মনে কেমন যেন দোলা দিয়ে গেল মেসেজটা।

কে এটা ! আমাকে চিনে নাকি ! এইসব ভাবতে ভাবতে কথা শুরু হল সেই আজনাবীর সাথে।

এরপর থেকে প্রতিদিন মেসেজ চালাচালি হয়। নিহার তো আইডিতে হাজার টা ছবি কিন্তু রেজার একটা ও নাই। নিহা প্রতিদিন বলে একটা ছবি দাও না দেখি। রেজা ও ওকে নাচিয়ে মজা পায়। এইভাবে চলতে চলতে কখন যে দুজনের মন এক হয়ে গেলো তা টেরই পেলো না নিহা। যখন বুঝতে পারলো তখন নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার অন্তিম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু রেজাও নাছোড়বান্দা। ও নিহাকে বলল," তুমি নিজের কাছ থেকে আর কতো পালিয়ে বেড়াবে, শুধু একবার বলে দাও আমাকে ভুমি ভালোবাসো না, আমি কথা দিচ্ছি আমাকে তুমি এই জীবনে আর দেখবে না"। নিহা বলে,"না তোমাকে শুধু বন্ধু ভাবি আর কিছু নাহ"। এইভাবে কেটে যায় আর ও একটি মাস।

একসময় নিহা নিজের কাছে হেরে গেলো আর রেজাও তার জবাব পেয়ে গেলো। সবাই ভালোবাসার মানুষকে দেয় লাল গোলাপ, রেজা সবসময় নিহাকে কদম ফুল দিত। প্রেমে পরলে যেমন পাগল হয় সবাই সেইরকম পাগল ছিল দুইজন। ভালোই কাটছিলো দিনকাল হঠাত্‍......

একদিন রেজা বলল তার বাবা তাকে জোর করে লন্ডন পাঠিয়ে দিচ্ছে পড়তে। কথাটা শোনার পর যেন নিহার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরল। রেজাও অপারগ, দুই মাস পর যাবে । রেজা এই দুইটা মাস যতটুকু সময় পারতো নিহার সাথেই কাটাতো । যেই দিনটা কেউ চায়নি অবশেষে সেই দিনটি চলে এলো অর্থাত্‍ রেজার যাবার দিন।

নিহা ঠিক করলো হাসিমুখেই বিদায় দেবে, নিজের যত কষ্ট ই হক। সবাই মিলে রেজাকে বিদায় দিয়ে চলে এলো আর নিহা সারাটা পথ শুধু কাদঁলো। বাসায় এসেও সে কাদছে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো নিহা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলল," তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আসো নাইলে কিন্তু কদম ফুল আরেকজন কে দিয়ে দেব"। নিহা খুশিতে নাচতে নাচতে নিচে গেলো সবার সামনেই রেজাকে জড়িয়ে ধরল . . . . .